নবাবগঞ্জে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালিত

241

১১ জুলাই বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস। ‘কৈশরে গর্ভধারণ, মাতৃমৃত্যুর অন্যতম কারণ’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে রেখে সারা বিশ্বে পালিত হল জনসংখ্যা দিবস।

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় র‌্যালী ও আলোচনা সভা মাধ্যমে পালিত হয় দিবসটি। বৃহস্প্রতিবার সকাল ১০টায় উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের আয়োজনে একটি র‌্যালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে শুরু করে মহাকবি কায়কোবাদ চত্বর প্রদক্ষিণ করে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সম্মেলন কক্ষে দিবসটি উপলক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। মেডিকেল অফিসার ডা. কাজী গোলাম আহসানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অথিতি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেওয়ান মাহ্বুবুর রহমান। আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. গঙ্গা গোবিন্দ পাল, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. শাহজালাল।

সভায় বক্তারা বলেন বাল্যবিবাহ কিশোরীদের মৌলিক অধিকার কেড়ে নেয়। কিশোরীদের জোর করে বা প্রতারণা করে যৌনমিলনে বাধ্য করা হয়। অল্প বয়সে বিয়ে হওয়ার কারণে বেশির ভাগ কিশোরীর মধ্যেই যৌন শিক্ষা-সম্পর্কিত কোনো ধারণা নেই এবং তারা নিজের পছন্দমতো সময়ে গর্ভধারণ করতে পারে না। দরিদ্র পরিবারের এই কিশোরীরা বেশির ভাগ সময় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়। ক্ষতিকর ও বিপজ্জনক যৌন অভ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। কম বয়সী মা ফিস্টুলার ঝুঁকিতে থাকেন, জীবনীশক্তি হারান, শারীরিক, মানসিক ও সামাজিকভাবে ভোগান্তির শিকার হন।

অন্য খবর  দোহারে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় ৩০ জনকে অর্থদণ্ড

অনিরাপদ গর্ভপাত জনিত কারণে কিশোরী ও কম বয়সী নারীরা দীর্ঘ মেয়াদি শারীরিক জটিলতায় ভোগে ও মৃত্যু মুখে পতিত হয়।

২০০৮ সালের এক জরিপে দেখা গেছে উন্নয়নশীল দেশে ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী কিশারীর প্রায় ৩ মিলিয়ন অনিরাপদ গর্ভপাত ঘটিয়েছে। ২০ থেকে ২৯ বছর বয়েসে সন্তান জন্মদান কারী মায়ের তুলনায় ২০ বছরের কম বয়সে সন্তান জন্মদানকারী মায়েরা ৫০ শতাংশ মৃত শিশু জন্ম দেন। বর্তমানে প্রতি হাজার জীবিত শিশু জন্মের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যু হার শতকরা ১ দশমিক ৯৪ ভাগ। ২০০১ সালে যা ছিল ৩ দশমিক ২ ভাগ।

বাল্য বিবাহের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্থ-সামাজিক অবস্থাকে দায়ী করে বক্তারা বলেন, দারিদ্রই বাল্য বিবাহের অন্যতম প্রধান কারণ। তবে এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের হিসেব মতে, বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৬৫০ সালে ১ কোটি ছিল। তা ২শ’ বছর পর ১৯৫১ সালে বৃদ্ধি পেয়ে দ্বিগুণ অর্থাৎ ২ কোটি ৩ লাখ হয়। এই জনসংখ্যা ৪ কোটি ২০ লাখ হয় ৯০ বছরে (১৯৪১ সালে)।

দেশে বর্তমান জনসংখ্যা ১৪ কোটি ২৩ লাখ ১৯ হাজার। জনসংখ্যা বৃদ্ধির বার্ষিক হার ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। প্রতি বর্গ কিলোমিটারে বাস করে ৯৭৯ জন মানুষ। বর্তমান হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আগামী ৫০ বছরে বাংলাদেশের জনসংখ্যা দ্বিগুণ হবে।

অন্য খবর  ঈদ সামনে রেখে দোহার-নবাবগঞ্জে হুন্ডি ব্যবসায়ীরা তৎপর

জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের দিকে তাকালে দেখা যায়, ১৯৫০ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল উর্ধ্বগামী। ২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমতে শুরু করলেও তা ছিল পূর্বে বৃদ্ধির তুলনায় একেবারেই উদ্বেগজনক।

আপনার মতামত দিন