ঈদ সামনে রেখে দোহার-নবাবগঞ্জে হুন্ডি ব্যবসায়ীরা তৎপর

473

বাংলাদেশের অন্যতম রেমিট্যান্স অর্জনকারী এলাকা ঢাকার প্রবাসী অধ্যুষিত দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলা। প্রতিবারই ঈদ সামনে রেখে হুন্ডি ব্যবসায়ীদের তৎপরতা বৃদ্ধি পায়।

হুন্ডির পাশাপাশি তৎপর হয়ে উঠেছে টাকা জালিয়াতরা। তাদের কারণে জনসাধারন শঙ্কিত। ব্যাংকের নানমুখী হয়রানি ও বিড়ম্বনাকে পুঁজি করে হুন্ডি ব্যবসায়ীদের এ তৎপরতা।
দোহার-নবাবগঞ্জের দুই উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের প্রায় ১ লাখ লোক মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে বসবাস করে। এসব প্রবাসী সাংসারিক খরচসহ নানা প্রয়োজনে দেশে টাকা পাঠান।
নিয়মানুসারে প্রাবাসীরা ব্যাংকের মাধ্যমে তাদের অর্থ দেশে পাঠানোর কথা। এতে প্রাবাসীদের অর্থের হিসাব সরকারে কাছে যেমন থাকে, তেমনি পাঠানো অর্থ থেকে সরকারের বৈদেশিক মূদ্রার তহবিল বড় হয়।
কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে সারাদিন হাড় ভাঙা পরিশ্রম করে সেখান থেকে দেশে টাকা পাঠাতে লাইনে দাঁড়িয়ে ড্রাফট বানাতে বিড়ম্বনা পোহাতে হয়। এই ঝামেলা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রবাসীরা হুন্ডিকে অর্থ প্রেরণের সহজ মাধ্যম হিসাবে বেছে নেয় হুন্ডি।

দুই উপজেলার প্রায় শতাধিক হুন্ডি ব্যবসায়ী রয়েছে। একজন হুন্ডি কারবারির আওতায় ১০-১২ জন টাকা বিতরণকারী রয়েছে। বিতরণ কারীরা গ্রাহকদের বাড়িতে গিয়ে প্রবাসীদের পাঠানো টাকা পৌঁছে দিয়ে আসে। অথবা গ্রাহকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করে দেয়। টাকার পরিমান কম হলে গ্রাহক নিজেকে হুন্ডি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে আনতে হয়।

অন্য খবর  শৈত্য প্রবাহে কাপছে দোহার- নবাবগঞ্জ

এসব হুন্ডি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে থানার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অসাধু কর্মকর্তার সঙ্গে গোপন সমঝোতার কথাও মানুষের মুখে মুখে প্রচারিত রয়েছে। রয়েছে দায়িত্বশীল প্রশাসনের সঙ্গে বোঝাপড়া।
দায়িত্বশীল প্রত্যেকের সঙ্গে সুসম্পর্কের কারণে হুন্ডি ব্যবসায়ী চক্র দেদারসে জাল টাকার ব্যবসা করছে বলেও প্রচলিত আছে। হুন্ডি ব্যাবসায়ীরা গ্রাহকদের জাল টাকা দিয়ে দিলেও পরে জাল টাকার আলামত বুঝতে পেরে আবার টাকা বদলাতে তাদের (হুন্ডি ব্যাবসায়ীদের) কাছে গেলে গ্রাহক ও টাকা প্রাপককে হুমকি এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছে।

জাল টাকার কারণে মানুষ প্রতারিত হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ২০১২-১৩ অর্থ বছরে প্রবাসীদের আয় নতুন রেকর্ড ছুঁয়েছে। যা স্বাধীনতার পর এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। সমাপ্ত ২০১২-১৩ অর্থ বছরে প্রবাসীরা মোট ১ হাজার ৪৪৬ কোটি ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। যা এর আগের অর্থ বছরের তুলনায় প্রায় সাড়ে বারো শতাংশ বেশি। এর আগে ২০১১-১২ অর্থ বছরে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ছিলো ১ হাজার ২৮৪ কোটি ডলার। তার আগে ২০১০-১১ অর্থ বছরে ছিল ১ হাজার ১৬৫ কোটি ডলার।

প্রবাসী আয়ের সন্তোষজনক ধারায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নতুন মাত্রা পেয়েছে। যা বর্তমানে দেড় হাজার কোটি ডলার। আমাদের দেশে আমদানী ও রপ্তানী ব্যয়ে যে ঘাটতি থাকে তার জন্য সহায়ক হিসেবে কাজ করে প্রবাসী আয়। পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, প্রতি বছরই রপ্তানীর থেকে আমদানি বেশি হয়। সেই ঘাটতির অনেকটাই মেটায় রেমিট্যান্স।

আপনার মতামত দিন