ঢাকার দোহার উপজেলায় জয়পাড়া পূর্ববাজার মেইন রোডে রতন স্বাধীনতা ভাস্কর্যের সামনে খালের ওপর মাটি ভরাট করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন না নিয়ে টেম্পোস্ট্যান্ড নির্মাণের চেষ্টা চালাচ্ছে দোহার পৌরসভা। যার উত্তর-পূর্বে উপজেলা পরিষদ, উত্তর-পশ্চিমে বেগম আয়েশা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, দক্ষিণ-পশ্চিমে জয়পাড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এবং দক্ষিণ-পূর্বে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অবস্থিত। দু’টি স্কুল একটি সরকারি হাসপাতাল।
এ অবস্থায় কী করে টেম্পোস্ট্যান্ড নির্মাণ হতে পারে তা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সরেজমিন জানা যায়, উপজেলার জয়পাড়া বাজারের ওপর দিয়ে পদ্মা নদীর একটি শাখা নবাবগঞ্জ উপজেলার ইছামতি নদীতে গিয়ে মিশেছে এবং এই শাখা নদী থেকে একটি প্রশাখা খাল বের হয়ে জয়পাড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এবং বেগম আয়েশা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আড়িয়ল বিলে গিয়ে মিশেছে। এই প্রশাখা খালের ওপরে এক সময়ে ব্রিজ থাকলেও বিগত বিএনপি সরকার বিজ্রটি ভেঙে দিয়ে খালের ওপর মাটি ভরাট করে যান চলাচলের জন্য রাস্তা নির্মাণ করে। এতে খালটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার আসার পরে জয়পাড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এবং বেগম আয়েশা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঝামাঝি (যে স্থানে আগে ব্রিজ ছিল) রাস্তার ওপর নিহত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধার্থে একটি স্বাধীনতা ভাস্কার্য নির্মাণ করে। রতন স্বাধীনতা ভাস্কর্যের পূর্বপাশে খালের ওপর মাটি ভরাট করে টেম্পোস্ট্যান্ড নির্মাণের চেষ্টা চালাচ্ছে দোহার পৌরসভা।
এ দিকে উপজেলা ভূমি অফিস থেকে কোনো অনুমোদন না নিয়ে দোহার পৌরসভা ১৬ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ব্যয়ে টেম্পোস্ট্যান্ড নির্মাণের উদ্যোগ নিয়ে মাটি ভরাটের কাজ শুরু করে।
এ ব্যাপারে দোহার পৌরসভার প্রকৌশলী মশিউর রহমানের কাছে রতন স্বাধীনতা ভাস্কর্যের পাশে কিসের জন্য মাটি ভরাট চলছে, জানতে চাইলে তিনি জানান, টেম্পোস্ট্যান্ডের কাজ চলছে। এভাবে খাল ভরাট করার আপনাদের এখতিয়ার আছে কি না? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, কেন? পৌর এলাকার সমস্ত রাস্তা-ঘাট, টেম্পোস্ট্যান্ড এ ধরনের কাজ সমস্তই পৌরসভার। আমরা খাল ভরাট করি নি, আগেই খাল ভরাট হয়ে গিয়েছিল; এখন আমরা একটা প্লাটফর্ম তৈরি করছি।
এ বিষয়ে টেম্পোস্ট্যান্ড নির্মাণকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জয়পাড়া স্টোরসের স্বত্বাধিকারী আওয়ামী গীল নেতা আলমগীর চৌধুরী জানান, টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটি আমি পেয়েছি। টেন্ডার অনুযায়ী আমি কাজটি সমাধান করব। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুরাইয়া জাহান বলেন, আমাদের কাছ থেকে পৌরসভা কোনো প্রকার অনুমতি নেয় নি। পরে এ বিষয়ে জানতে পেরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল-আমিন জানান, পৌরসভা ও তাদের সংশ্লিষ্ট কেউই এ বিষয়ে প্রশাসনকে অবগত করান নি। কিভাবে সরকারি খালকে ভরাট করে বেবি এবং টেম্পোস্ট্যান্ড নির্মাণ করা হচ্ছে – যা পৌরসভার এখতিয়ারে নেই। সংবাদ প্রকাশের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংবাদ সূত্র: দৈনিক আমারদেশ