আসিফ শেখ, নিউজ৩৯ ♦ নবাবগঞ্জ উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের তুইতাল-বকচর গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে চলা ইছামতি নদীর তুইতাল-বকচর খালের উপর একটি ব্রিজের অভাবে এ এলাকার ২০ হাজার মানুষ যাতায়াতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
মারত্মক ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন নদী পাড় হচ্ছে কলেজ-মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীসহ তুইতাল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যলয় ও তুইতাল বালিকা উচ্চ বিদ্যলয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও হাজার হাজার পথচারী। নদীটির ওপর কোন পাঁকা সেতু না থাকায় ২ কিলোমিটার ঘুরে যানবাহন নিয়ে চলাচল করতে হয়। তুইতাল-বকচর গ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ইছামতি নদীর তুইতাল-বকচর খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণ দু’পাড়ের জনগণের দীর্ঘ দিনের দাবি।
বিগত দিনে জনপ্রতিনিধি সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিলেও এ পর্যন্ত এলাকাবাসীর ভাগ্যে দুর্ভোগ ছাড়া আর কিছুই জোটেনি। ইছামতি নদীর উপর একটি বাঁশের সাঁকো আছে এ সাঁকো দিয়ে কোন রকমে পারাপার সম্ভব হলেও, কোন যানবাহন চলাচল করা সম্ভব নয়। ফলে এলাকাবাসী তাদের উৎপাদিত খাদ্যশস্য, কৃষিপণ্যসহ বিভিন্ন কাঁচামাল বাজারসহ অন্যান্য হাটে নিয়ে আসতে অসুবিধার সম্মুখীন হন।
ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে অনেকটা ভীতির মধ্যে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠান। অনেক সময় যাতায়াতকারী পথচারীরা সাঁকো ভেঙে নিচে পড়ে আহত হয়। নদীর এক পাড়ে তুইতাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও তুইতাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।
ব্যবসা-বাণিজ্য, হাট-বাজার, কৃষি কাজ ও লেখাপড়ার জন্য দু’পাড়ের মানুষকে প্রায় সময়ই নদী পার হতে হয়। কিন্তু দুর্ভাগা মানুষেরা সেতুর অভাবে নানা ভোগান্তিতে পড়েন। কখনও বাঁশের সাঁকো আবার কখনও ছোট নৌকা দিয়ে পারাপার একমাত্র ভরসা।
এলাকাবাসী জানায়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাড. আব্দুল মান্নান খান তুইতাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক বিজ্ঞান মেলার প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেছিলেন ১৫ দিনের মধ্যে নয়নশ্রী ব্রিজ থেকে তুইতাল বাজার পযর্ন্ত রাস্তার উদ্ভোধন করা হবে এবং এই সরকারের আমলেই তুইতাল-বকচর গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে চলা ইছামতি নদীর উপর একটি ব্রিজে র্নিমান করা হবে। দিন চলেগেল কিন্তু কথার সাথে কাজের কোন মিল হলো না। এখনও সেখানে ব্রিজ নির্মানের কাজ শুরু করা হয় নি।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন “আমরা এ অঞ্চলের অবহেলিত জনগন। আমারা অনেক দিন ধরে একটি ব্রিজের স্বপ্ন দেখে আসছি কিন্তু আমাদের স্বপ্ন যেন স্বপ্নই রয়ে গেলো দুঃখ জনক হলেও সত্য আমাদের কাঙ্খিত স্বপ্নটি বাস্তব রুপ ধারণ করলো না। প্রতিমন্ত্রীর কাছে আমাদের প্রশ্ন আর কত দিন অপেক্ষা করার পর আমাদের স্বপ্ন বাস্তবে রুপ ধারন করবে? বাপ-দাদারা কষ্টে করে গেছে আমরা কি আর আরাম করতে পারমু? আমাদের ও কষ্ট করে যাইতে হবে। দেশের কত যাগায় কত কিছু উন্নত হলো কিন্তু আমাদের এলাকার এই ব্রিজটি র্নিমান হলো না। এখনও আমরা আশায় আছি প্রতিমন্ত্রী মহোদয় আমাদের কাঙ্খিত স্বপ্নটি পূরণ করবেন।”
তুইতাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষাকা সিস্টার কিরণ বলেন, আমার স্কুলে মেয়েরা বাঁশের সাঁকো দিয়ে অত্যান্ত ঝুকিতে পারাপার হয়। স্কুলে অনেক ছাত্রীরা বাঁশের সাঁকো পারাপারের ভয়ে অন্য স্কুলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। আমার স্কুলের ছাত্রীদের বেশি কষ্ট হয় বৃষ্টির দিনে। বৃষ্টিতে বাঁশের সাঁকো ভিজে পিচলা হয়ে যায় ফলে স্লিপকেটে নিচে পরে অহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে অনেক।
প্রতিমন্ত্রী অ্যাড. আব্দুল মান্নান খান আমাদের স্কুলে এসে বলেছিলেন এ সরকালে আমলেই তুইতাল-বকচর গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে চলা ইছামতি নদীর উপর ব্রিজটি র্নিমান করে দেওয়া হবে। কিন্তু এখনও ব্রিজ নির্মান কাজ শুরু করা হয় নি। এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী ধীরেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ জানান, বাঁশের সাকোটির বিষয়ে আমার আগে জানা ছিল না। এলাকাবাসী লিখিত দাবী জানালে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।