শেষ হলো বিডি ক্লিন-এর ‘সেভ আর্থ সেভ বাংলাদেশ’

40

প্লাস্টিক বোতল, সিগারেটের ফিল্টার, বিস্কুট ও চানাচুরের মোড়ক দিয়ে বানানো বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি, গাছ, মাছ, কচ্ছপসহ বিভিন্ন জিনিসের প্রদর্শনীতে শেষ হলো নয় দিন ধরে চলা ‘সেভ আর্থ সেভ বাংলাদেশ’র প্রদর্শনী। যা শুরু হয়েছিল গত ৩০ ডিসেম্বর।

শনিবার (৭ জানুয়ারি) রাজধানীর মহাখালী টি-অ্যান্ডটি মাঠে এই প্রদর্শনীর সমাপ্তি ঘোষণা করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। গত ৩০ ডিসেম্বর শুরু হওয়া অভিনব এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

প্রদর্শনী ঘুরে এবং এর আয়োজক প্রতিষ্ঠান বিডি ক্লিনের প্রতিষ্ঠাতা মো. ফরিদ উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এর আগেও স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান বিডি ক্লিন দুবার এরকম প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। এটি তাদের জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য করা তৃতীয় প্রদর্শনী।

প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে প্রায় ৪৫ লাখ (৩০ টন) পানি ও কোমল পানীয়ের ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের বোতল, ৬ টন বিস্কুট ও চানাচুরের খালি প্লাস্টিকের প্যাকেট এবং আনুমানিক ৩ কোটি (৫ হাজার কেজি) সিগারেটের ফিল্টার দিয়ে বানানো বিভিন্ন মানুষ ও প্রাণীদের প্রতিকৃতি। এ ছাড়া মাঠে দুটো গেট, চারপাশ-জুড়ে বাঁশের সঙ্গে আটকানো প্লাস্টিকের বোতলের দেয়াল।

অন্য খবর  নাটোরে ক্রিস্টাল মেথ আইসসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

বিশাল এই কর্মযজ্ঞটির পেছনে কত সময় এবং কত মানুষের শ্রম রয়েছে- জানতে চাইলে বিডি ক্লিনের প্রতিষ্ঠাতা মো. ফরিদ উদ্দিন জানান, সারাদেশে দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডি ক্লিনের প্রায় ৪৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক এসব বোতল, প্লাস্টিকের প্যাকেট এবং সিগারেটের ফিল্টার সংগ্রহ করেছেন।

তারপর এসব ঢাকায় আনা হলো কেন এবং কীভাবে? উত্তরে ফরিদ জানান, ট্রাকে করে এসব পণ্য ঢাকায় আনা হয়েছে। মানুষকে প্লাস্টিক ব্যবহার ও ধূমপান বিষ‌য়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে এই প্রদর্শনীর চিন্তা মাথায় আসে। মহাখালীর এই টি-অ্যান্ডটি মাঠে এই প্রদর্শনী করার ব্যাপারে সহযোগিতা করেছেন স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার। সার্বিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

মাঠে এসব বানাতে কত সময় এবং কত স্বেচ্ছাসেবক লেগেছে? এর উত্তরে ফরিদ উদ্দিন জানান, মাঠের মধ্যে পুরো কাজটি সম্পন্ন করতে সময় লেগেছে ৬২ দিন। দৈনিক ৩০০-৪০০ বিডি ক্লিনের স্বেচ্ছাসেবকরা এখানে কাজ করেছেন। সর্বমোট প্রায় ১২ হাজার স্বেচ্ছাসেবকদের কষ্টের ফসল এই প্রদর্শনী।

প্রদর্শনী শেষে এসব বোতল এবং প্লাস্টিকের প্যাকেট কী করবেন? জবাবে ফরিদ বলেন, দুটো রিসাইকেলিং কোম্পানির সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা এসব পণ্য এখান থেকে নিয়ে গিয়ে তাদের মেশিনে রিসাইকেল করবেন।

অন্য খবর  বিশ্ববিদ্যালয় তদারকি ও অনুমোদনে কঠোরভাবে আইন অনুসরণ করুন: ইউজিসিকে প্রধানমন্ত্রী

বিডি ক্লিন নামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির সৃষ্টি হয় ফরিদ উদ্দিনের হাত ধরেই। তিনি এর প্রতিষ্ঠা করেন ২০১৬ সালের ৩ জুন। বর্তমানে সারাদেশে এর ৪০ হাজারের ওপরে স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে বলে জানান তিনি। রয়েছে ৫৮টি জেলা টিম, ১৫০টিরও অধিক উপজেলা টিম। এ ছাড়াও রয়েছে ১২টি সিটি টিম।

প্রদর্শনীর উদ্দেশ্য সম্পর্কে ফরিদ বলেন, বিডি ক্লিনের একজন গর্বিত সদস্য হিসেবে আমার চাওয়া- যেসব কোম্পানিরা প্যাট বোতলে খাবার পানীয় এবং কোমল পানীয় বাজারজাত করেন, তারা নিজেদের লোকবল ও খরচ দিয়ে ব্যবহারের পর এসব বোতল সংগ্রহ করে তা রিসাইকেল করবেন। এ ছাড়াও বিস্কুট ও চানাচুরের প্লাস্টিক প্যাকেটও তদ্রূপ কোম্পানিরা যোগাড় করে তাও রিসাইকেল করবেন। তাতে আমাদের পরিবেশ ভালো থাকবে। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম সুস্বাস্থ্য নিয়ে বাঁচতে পারবে বলে বিশ্বাস করেন বিডি ক্লিনের এই প্রতিষ্ঠাতা মো. ফরিদ উদ্দিন।

আপনার মতামত দিন