আটলান্টিক মহাসাগরের অতল গভীরে নিখোঁজ সেই সাবমেরিনের ৫ আরোহী সবাই হয়তো এতক্ষণে মারা গেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে অক্সিজেনের অভাবের পাশাপাশি হাইপোথার্মিয়া বা কার্বন ডাই অক্সাইডের বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হতে পারে।
এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন ডুবোযানটির সাবেক কমান্ডিং অফিসার অ্যান্ডি কোলস। তিনি বলেন, ৯৬ ঘণ্টার অক্সিজেনের মজুত থাকলেও ওই সাবমার্সিবলের যাত্রীরা এরই মধ্যে মারা যেতে পারেন।
রবিবার পাঁচ আরোহী নিয়ে নিখোঁজ যানটিতে বৃহস্পতিবার স্থানীয় দুপুর পর্যন্ত চলার মতো অক্সিজেন অবশিষ্ট থাকার কথা। তবে সাবেক এই কমান্ডিং অফিসার অ্যান্ডি কোলস বলেছেন, আরোহীরা ইতোমধ্যে হাইপোথার্মিয়া বা কার্বন ডাই অক্সাইডের বিষক্রিয়ায় মারা গিয়ে থাকতে পারেন। এরই মধ্যে উদ্ধার অভিযান জটিল পর্যায়ে পৌঁছেছে। তাই আরোহীসহ ডুবোযানটি উদ্ধার করতে দীর্ঘ এই সময় লাগতে পারে বলেও উল্লেখ করেন অ্যান্ডি কোলস।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য মিরর অনলাইনকে তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি মনে করি না যে ডুবোযানটিতে কার্বন ডাই অক্সাইড পরিশোধন এবং বাতাসকে পুনরায় সঞ্চালনের কোনও ব্যবস্থা আছে।’
তাই তারা সম্পূর্ণরূপে দমবন্ধ না হওয়ার আগেই সম্ভবত ঘুমন্ত বা অচেতন অবস্থায় চলে গেছেন। অন্য যে বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে তা হল তিন হাজার ৮০০ মিটার নিচে সমুদ্রের তলদেশ অবিশ্বাস্য রকমের ঠাণ্ডা। তারা সম্ভবত সেখানে কোনও শক্তি এবং আলো পায়নি। কারণ যদি যানটিতে কোনও যান্ত্রিক শক্তি থাকত, তাহলে তারা সমুদ্রের উপরিভাগে উঠে আসার চেষ্টা করত।
নিখোঁজ সাবমেরিনের যাত্রীরা হলেন- ব্রিটিশ ব্যবসায়ী হামিশ হার্ডিং (৫৮), ব্রিটিশ-পাকিস্তানি ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ (৪৮) ও তার ছেলে সুলেমান দাউদ (১৯), ওশনগেটের শীর্ষ নির্বাহী স্টকটন রাশ (৬১) ও সাবমেরিনটির চালক ও ফরাসি নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা পল হেনরি নারগিওলেট (৭৭)। এই অভিযানে যাওয়ার জন্য প্রত্যেক অভিযাত্রীর মাথাপিছু খরচ হয়েছে আড়াই লাখ ডলার।
এর আগে, আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে নিখোঁজ ডুবোযানের সন্ধান চালানো তল্লাশির এলাকা থেকে একধরনের তীব্র আঘাতের শব্দ শোনা যায়। প্রতি ৩০ মিনিট পর পর এমন শব্দ শুনতে পান অনুসন্ধানী দলের সদস্যরা। আটলান্টিকের তলদেশে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে আগ্রহী এক কিশোরসহ পাঁচ পর্যটক নিয়ে গত রবিবার নিখোঁজ যানটির সন্ধানে ‘ঘড়ির কাটার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে’ অনুসন্ধান চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।