দোহার-নবাবগঞ্জে কৃষক বিপাকে, ধান কাটতে হচ্ছে নৌকা দিয়ে

202
দোহার-নবাবগঞ্জে কৃষক বিপাকে

ঢাকার নবাবগঞ্জ ও দোহার উপজেলায় বিভিন্ন গ্রামে ধান কাটা চলছে। নৌকা দিয়ে ধান কেটে নিতে হচ্ছে কৃষককে। এছাড়াও ধানকাটা শ্রমিক সংকটের কারনে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা। যাও পাওয়া যাচ্ছে তাও আবার বেশী টাকা দিতে নিতে হচ্ছে। ন্যুইয়ে পড়া ধান কাটতে বেশী মজুরি চাচ্ছেন শ্রমিকরা।  উপজেলার চালনাই, বাহ্রা, চুড়াইন, বারুয়াখালী, টিকরপুর, হাড়িকান্দা, কাঠালীঘাটাসহ উপজেলার সব আবাদি এলাকায় বোরো এবং আউশের বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানা যায় উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে। কিন্তু বন্যা ও বৃষ্টির পানির কারনে বাম্পার ফলনের লাভ উঠাতে পারে নি কৃষক।

সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাঠালীঘাটার চকে স্থানীয় এলাকার কিছু নানা পেশার মানুষ পানিতে তলিয়ে যাওয়া ধান কাটছেন। পেশায় কেউ রাজমিস্ত্রী,কেউ ব্যবসায়ী, কেউ মাটি কাটে, কেউ রিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। গতকাল ও ঈদের পর বৃষ্টির কারণে ধান ডুবে তলিয়ে গেছে পানিতে। যার কারনে ধান কাটতে হচ্ছে নৌকা দিয়ে।

ধান কাটার ব্যপারে জিজ্ঞেস করলে, মোঃ লোকমান (৪৫) বলেন, আমি একজন পেশায় রাজমিস্ত্রি। রাজমিস্ত্রি পেশার মজুরীর চেয়ে ধান কাটার মজুরি বেশি। তার মধ্যে আমরা ধান কাটি নাহ, আমরা ইস্কিমের ধান কাটি। বৃষ্টিতে ধান তলিয়ে গেরা জালিয়ে গেছে দেখে আমরা আসছি। তাছাড়া আমরা এলাকার মানুষ; সাধারনত  ধান কাটার কাজ আমরা করি নাহ। রংপুর, বরিশাল,কুড়িগ্রাম বিভিন্ন জায়গায় থেকে আমাদের এখানে লোক এসে ধান কাটেন। এবার শ্রমিক সংকট ও বৃষ্টির কারনে ধান কাটতে পারছে নাহ কৃষক। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই ধান কাটছি।

অন্য খবর  দোহারে আশা ক্লিনিকের বিরুদ্ধ নবজাতক মৃত্যুর অভিযোগ

স্থানীয় এলাকার কৃষক রমজান আলী (৫৯) বলেন, আমি একজন পেশায় কৃষক ও মাটি কাটি। এবার আমার জমিতে ১০ পাখি ধান রোপন করছি। কিছু ধান কাটছি আর কিছু আছে। এবার অসময় বৃষ্টি ও শ্রমিক সংকটের কারনে ধান কাটতে পারছি নাহ, ধান পেকে পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। আমরা প্রতি বছর রংপুর, কুড়িগ্রাম, পাবনার মানুষ দিয়ে ধান কাটি। এবার দুই জেলার কৃষকের ধান একসাথে কাটা শুরু হয়েছে যার কারনে শ্রমিক পাচ্ছি নাহ, তার ওপরে শ্রমিকের মজুরি বেশি। ১১০০-১২০০ টাকা দিতে হয় তাদের। এক মণ ধান দাম দিয়ে একজন শ্রমিক।

ধান ভাগ করতে আসা কৃষক মোঃ সেলিম (৪৫) বলেন, আমি একজন পেশায় কৃষক। প্রতিবছর ১০-১৫ বিঘা ধান রোপন করি এবার ওও করছি। নিজেদেরই ধান কাটতে হচ্ছে। শ্রমিক পাচ্ছি না। ধান ও পানিতে তলিয়ে গেছে, উনাদের মত আমার ধান ও মাজাফটি পানিতে আছে, নৌকা দিয়ে কাটবো। এমনেই এবার ধান এ অনেক লোকসান এর মুখ দেখতে হচ্ছে। পাশের ধান ক্ষেত দেখিয়ে বলেন, এই যে এই জমির মালিক ৫০০০ টাকা বছরে রংপুরের এক কৃষককে জমি দিয়েছিল। ধানের বর্তমান অবস্থা দেখে এখন ধান না কেটে পালিয়ে গেছে। এখন এই ধান মালিকে কেটে নিতে হবে। কি করবে সব কিছুর যে দাম, মানুষ খাবে কি?

অন্য খবর  Blankets distributed at two unions in Dohar

এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ নাহিদুজ্জামান হলে তিনি জানান, এবার বোরো ধানের আবাদ হয়েছে ১০,৯৭০ (দশ হাজার নয়শত সওর) হেক্টর । সবজি- ৫৭০, সরিষা -৩০০০ হেক্টর চাষ করা হয়েছে। বর্তমানে ধান কিছু কাটা হচ্ছে। আমরা দেখেছি যে বৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতি এখনো তেমন হয়নাই, তবে যে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ চলমান রয়েছে। ক্ষতি হলে তার বিররণ তুলে এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

আপনার মতামত দিন