আসিফ শেখ: ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় পশ্চিম অঞ্চলে গরু চুরির হিড়ীক পড়েছে। উপজেলার পশ্চিম অঞ্চলে একটি সংবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে শিকারীপাড়া, জয়কৃষ্ণপুর, বারুয়াখালী, নয়নশ্রী ইউনিয়নে বিভিন্ন গ্রাম থেকে সংবদ্ধ চক্রটি গরুচুরি করে আসছে। এতে কৃষকদের মাঝেও দেখা দিয়েছে আতংক। গরুর মালিকরা এখন প্রতিদিন রাত জেগে গরু পাহারা দিচ্ছে। তার পরও প্রতিদিন গরু চুরি হচ্ছে। গরু চুরির ফলে কৃষকরা হয়ে যাচ্ছে নি:স্ব অসহায়।
উপজেলার শিকারীপাড়া ইউনিয়নের সোনাতলা বাজারে গিয়ে স্থানীয়দের কাছে থেকে জানা যায়, সংবদ্ধ চক্রটি গরু চুরির উদ্দেশে প্রথমে গরু কেনার জন্য বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে বাড়ি চিনে রাখে। রাত হলেই বেরিয়ে পরে গরু চুরি করতে। সংবদ্ধ চক্রটি এ এলাকা থেকে গরু চুরি করে মানিকগঞ্জ, সিংগাইর, সাভার, গাবতলি এলাকার গরু চোরদের কাছে বিক্রি করে। আবার মানিকগঞ্জ, সিংগাইর, সাভার, গাবতলি এলাকার চোরদের কাছে খেকে এই এলাকার চোরেরা গরু ক্রয় করে এখানে বিক্রি করে এ ভাবে চলছে রাতের অন্ধকারে তাদের ব্যবসা। ফলে অনেকে গরু চোরদের উৎপাতে গরুর পালন ছেড়ে দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান , গরু চোর দলের নেতা হলেন আদেল বেপারী (৪০) তার জন্মস্থান মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার বয়রা ইউনিয়নে। আদেল বেপারীর পিতার নাম জানা যায়নি। আদেল বেপারী তার নিজ গ্রামে কয়েক বার গরুচুরি করে ধরা খেয়েছে। বিচারও হয়েছে অনেক বার অবশেষে গ্রামবাসী তাকে গ্রামছাড়া করে। আদেল বেপারী গ্রামছাড়া হয়ে বসবাস শুরু করে নবাবগঞ্জ উপজেলার নয়নশী ইউনিয়নের উত্তর বাহ্রা গ্রামে । সে খানেও গরু চুরি করে ধরা খাওয়ার পর গ্রামবাসি তাকে তাড়িয়ে দেয়। সর্বশেষে আদেল বেপারী উপজেলার শিকারীপাড়া ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামে বসবার করতে থাকে। বর্তমানে আদেল বেপারী পলাতক আছে।
স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থরা আরো জানায়, গরু চোর দলের অন্য অন্য সদ্যসরা হলেন আল আমীন কসাই (২৬) পিতা: মবজেল কসাই গ্রাম: মহেশপুর, মো: জুয়েল (২৫) পিতা: আয়নাল আলী গ্রাম: সোনাতলা, মো: সুলতান (৩৫) গ্রাম: জামসা সোনাতলার আনছের বেপারীর মেয়ের জামায়, শুকুর আলী (৪০) পিতা: মুনা বেপারী গ্রাম: সোনাতলা, সমসের আলী (৪৫) পিতা: হামেদ আলী গ্রাম: মহেশপুর।
২২ মে উপজেলার শিকারীপাড়া ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের আক্কাছ আলী মহেশপুর গ্রামের সমসের আলীর কাছে একটি ষাঁড় বর্গা দেয়। আক্কাছ আলীর বর্গা ষাঁড়টি চুরি করতে সাহায্য করেন সমসের আলী। এতে গরুর মালিক আক্কাছ আলী বিষয়টি জানতে পেরে ঐ রাতেই গরুসহ হাতেনাতে ধরেন আমীন কসাই ও সমসের আলীকে। আল আমীন কসাই ও সমসের আলী ধরা পরায় আদেল ব্যাপারি পালিয়ে যায়। গ্রাম্য সালিশিতে এরা দু’জন জামিনে আছেন। আদেল বেপারীকে খুজে বের করে তাদের বিচার করা হবে।
উল্লেখ গত ৪ মাসের মধ্যে বিষমপুর গ্রামের সামছুল দেওয়ানের ২টি গরু, বিষমপুর গ্রামের হাসান দেওয়ানের ২টি গরু, হাগ্রাদি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিক লতিফ মাষ্টারের ১টি গরু, সোনাতলা গ্রামের নাছের বেপারি ১টি গরু, বিষমপুরের উজ্জল শেখ ১টি গরু, সোনাতলা গ্রামের আবতাব আলী ১টি গরু, মৃত আব্দুল হক এর স্ত্রী ১টি গরু চুরি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্থরা জানিয়েছে ।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের দ্বাবি প্রশাসন যদি এ ব্যাপারে কোন প্রদক্ষেপ গ্রহন করে তাহলে কৃষকেরা গরু চোরের হাত থেকে রক্ষা পাবে।