মোঃ আল-আমিন ও শরিফ হাসান, স্টাফ রিপোর্টার, news39.net:
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু আগামী ৬ অক্টোবর মহালয়া দিয়ে। দোহার-নবাবগঞ্জে দূর্গাপূজা হবে ২২ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার সর্বমোট ২২৫টি মণ্ডপে। যা সংখ্যাগত দিক থেকে ঢাকা জেলার সর্বোচ্চ পূজা মন্ডপ। পূজাকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে দোহার-নবাবগঞ্জে মূর্তি কারিগরদের। ইতোমধ্যে তাঁরা মাটির কাজ শেষ করেছেন। চলছে শেষ মুহূর্তে রং-তুলির আঁচড়।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনে এবছর দেবি দুর্গা শান্তির বার্তা নিয়ে পৃথিবীতে আগমন করছেন।
সোমবার সরেজমিনে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, পূজা উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বী সব বয়সের মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। ঘরে-ঘরে চলছে আনন্দ। দেবী দুর্গাকে বরণ করে নিতে, মার্কেটে যাচ্ছেন পূজার জন্য নতুন কাপড় কিনতে। বাজারেও কেনাকাটার হিড়িক পড়েছে। বাড়ীতে চলছে খই, মুয়া, নারু তৈরির জন্য প্রস্তুতি।
দোহার-নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ও পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি অমিতাভ পাল অপু জানান, এবছর নবাবগঞ্জ উপজেলায় ১৮৫টি এবং দোহার উপজেলার ৪০টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। যা কিনা ঢাকা জেলার মধ্যে সবচাইতে বেশি পূজা মন্ডপ। আগামী ১১ অক্টোবর সোমবার পঞ্চমী পূজার মধ্যে দিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হতে যাচ্ছে। ১৫ অক্টোবর শুত্রুবার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে এবারের মহাউৎসব।
সোমবার সকালে কথা হয় ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার যন্ত্রাইল ইউনিয়নের গোবিন্দপুর সর্বজনীন দূর্গা মন্দিরের মৃৎশিল্পী কারিগরে স্বপর পালের সাথে, তিনি জানান এবছর আমি দোহার ও নবাবগঞ্জ ৬টি দূর্গা প্রতিমা গড়ার কাজ পেয়েছি। পূজার শুরু হওয়ার আর বেশি সময় না থাকায় মাটির কাজ শেষ করে প্রতিমায় বিভিন্ন রংঙ্গের আশ্রুর কাটতে শুরু করেছি।
দোহার উপজেলা পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি অমিতাপ পাল অপু জানান, গতবছর করোনা ভাইরাসের কারণে আমাদের দোহার উপজেলায় পূজা মন্ডপের সংখ্যা ছিলো ৩৭টি। এবছর তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৪০টিতে। পূজাকে সফল ভাবে পালনের জন্য সকল প্রস্ততি আমরা হাতে নিয়েছি। এবিষয়ে দোহার উপজেলা প্রশাসন ও ঢাকা জেলা প্রশাসনের সাথে আমাদের একাধিক মিটিং হয়েছে। আশাকরি কোন রকমের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই এবছর আমরা মা দূর্গাকে বিদায় জানাতে পারবো।
নবাবগঞ্জ উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অনুপম দত্ত নিপু বলেন, এবছর আমাদের নবাবগঞ্জ উপজেলায় ১৮৫টি মন্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। আনন্দময় পরিবেশে সকলে যেন পূজাকে উদ্যাপন করতে পারি, সেজন্য আমাদের কমিটির পক্ষ থেকে সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
নবাবগঞ্জ উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার সরকার জানান, আনন্দ মুখর পরিবেশে মা দুর্গাকে বরণ করার সব প্রস্তুতি হাতে নেয়া হয়েছে। যে কোন ধরণের ঝুঁকি এড়াতে প্রশাসনের সহায়তা নেয়া হবে।
এবিষয়ে ঢাকা জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি নিরর্মল রঞ্জন গুহ বলেন, পূজার আনন্দ ভাগাভাগি করতে আমি আমার ব্যক্তিগত ভাবে দোহার-নবাবগঞ্জে প্রায় প্রতিটি মন্ডপে আর্থিক সহায়তা করেছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনি সহায়তা চাচ্ছি।
দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা কামাল বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদ্যাপনের জন্য পুলিশের পাশাপাশি একাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে কাজ করবে।
নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচএম সালাউদ্দিন মনজু বলেন, দূর্গা পুজাকে গিযে সরকারি সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। যেকোন সমস্যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনি কাজ করছে।