শেষের কবিতা
এই দেখা যদি শেষ দেখা হয় তবে কেন আসিলাম,
ভালোবাসা যদি বেদনাই হয় কেন ভালোবাসিলাম।
ফুটিবার আগে যদি ঝরে ফুল কী হবে প্রহর গুনে,
জানিবার আগে যদি যাই ভুলে কী হবে কাহিনি শুনে!
আকাশ জেনেছে চাঁদের সুষমা সাগর জেনেছে পানি,
তুমি যে আমার এতো কাছাকাছি তবু নেই জানাজানি।
রাতের আকাশে চাঁদের মরীচি যখন সুষমা আনে
সাগরের জল পারভাঙা তটে কথা কয় কানে কানে।
সারা তপোবন ঘুমায় যখন রাত্র গভীর হলে
নিমতলা থেকে ডাক দেয় পাখি বউ কথা কউ বলে।
বহুদিন হতে সে ডাকে আমার দু চোখে এসেছে নিদ
সেই ফাঁকে এসে জানি না কখন কেটেছো মনের সিঁদ।
লুটে নিয়ে গেছো তনু-মন-প্রাণ জীবনের যতো ধন
সব নিয়ে গেছো, রেখে গেছো শুধু ব্যথা আর ক্রন্দন।
হাতের বাঁশরি বাজে না তো আর তালছাড়া হয়ে যায়
সুরের লহরি আসে না তো আর আজিকার কবিতায়।
শেফালি কুসুম আতিয়া যখন শুনিবে সকল কথা
ওদের চোখেতে যদি আসে জল কোথা রবে মানবতা!
বিরহবেদনা বুকে নিয়ে যদি আমারই সময় কাটে
একবারও তুমি কাঁদিবে না এসে সেই পুকুরের ঘাটে!
যেখানে রয়েছে কচুরি ফুলেরা লাজুক বঁধুয়া বেশে
হংসমিথুন জলকেলি করে প্রতিদিন যথা এসে,
সন্ধ্যা কি কভু নামিবে না আর সোনালি ধানের শিষে?
এতোটুকু স্মৃতি রহিবে না বুঝি জীবনের সাথে মিশে।
সব কিছু তুমি ভুলে যেতে পারো, পারিবে কি ভুলে যেতে
আসবে যখন নিশিজাগা চাঁদ তোমাদের আঙিনাতে?
মনের বনেতে মন হারাবার এসেছিল যতো রাত
বহু রজনির একটি প্রমাণ ঘুমভাঙা ওই চাঁদ।
আমি চলে যাবো- বহু দূরে যাবো, আসিব না কোনোদিন,
দু ফোঁটা চোখের জল ফেলে ওগো শোধ করে যাবো ঋণ।