সামান্য রোগে ১৫-৫০ হাজার টাকার ওষুধ: এমএলএম কোম্পানির নতুন ফাঁদ

955

নিউজ৩৯♦ ঢাকার দোহার নবাবগঞ্জ উপজেলায় চিকিত্সার নামে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে টিয়ানসি বাংলাদেশ নামে একটি এমএলএম কোম্পানির বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানটি খাদ্যপণ্য ও ‘ওষুধ’ বিক্রি করে চলেছে এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের মাঝে। ইতিমধ্যে ৫টি শাখায় চিকিত্সার নামে বিভিন্ন সংখ্যার স্টার খেতাবধারী ডা. কদম আলীদের (সর্বরোগের চিকিত্সা করায় এই নাম দিয়েছে এলাকাবাসী) চিকিত্সায় অন্তত ১৫ জন রোগী আরো অসুস্থ হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটির রেজসকোর অনুমোদন নেই বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।

ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, নবাবগঞ্জ ও দোহার উপজেলা সদর ও আশপাশে ৫টি শাখায় শতাধিক ‘সদস্য’ কমিশনের মাধ্যমে চিকিত্সা ও খাদ্যপণ্য বিক্রি করে চলেছে। ওয়ান স্টার থেকে এইট স্টার খেতাবধারী ডা. কদম আলীরাই রোগীদের ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। রাজধানীর নামকরা চিকিত্সকদের মতোই ভিজিট নেয়া হয় পাঁচশ টাকা। যিনি রোগী যোগাড় করে আনবেন তার কমিশন দুইশ টাকা। সাথে ওষুধ বিক্রির টাকার অঙ্কের উপর স্টার (পদবি) পদোন্নতি। সামান্য রোগের চিকিত্সায় ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে ১৫ থেকে ৫০ হাজার টাকার ওষুধ। এতে কমিশনের লোভে অল্পদিনে ধনী হতে রোগী যোগাড়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে স্বল্প শিক্ষিত, দরিদ্র পরিবারের যুবক-যুবতী থেকে শুরু করে নানা বয়সী মানুষ।

অন্য খবর  দোহারে গৃহবধূ রিনাকে পিটিয়ে জখম

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গ্যারান্টি সহকারে ডায়াবেটিস, প্যারালাইসিস, জন্ডিস, কোষ্ঠকাঠিন্য, যক্ষা, হাঁপানি, দন্ত ও চক্ষু রোগের মতো রোগের ‘চিকিত্সা’ করছে তারা। কোম্পানিটির বিক্রয় পণ্যের তালিকায় রয়েছে চা, কফি, টুথপেস্ট, টয়লেট সোপ, স্যানিটারি ন্যাপকিন, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, প্যারালাইসিস, চক্ষুসহ নানান রোগের ওষুধ। কয়েকটির গায়ে ছোট সাদা কাগজে বিএসটিআইয়ের লোগো লাগানো আছে।

এব্যাপারে টিয়ানসির ‘স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, ওষুধ বিশেষজ্ঞ, বক্তা ও প্রশিক্ষক’ পদবিধারী জালাল উদ্দিন আহমেদ দাবি করেন, তার কোম্পানির অনুমোদন রয়েছে। সবপণ্যে বিএসটিআইয়ের অনুমোদন আছে। তবে এ ওষুধ খেলে প্রথম দিকে রোগের প্রভাব বাড়লেও কয়েকদিন পর থেকে কমতে থাকবে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাজিবুল আহসান বলেন, তাদের অনুমোদন রয়েছে কিনা যাচাই করা হবে। না থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সম্প্রতি রেজসকোর বরাত দিয়ে দেশের কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, দেশে বহুস্তর বিপণন (এমএলএম) পদ্ধতির সব কোম্পানিই এখন বেআইনি। সরকার লাইসেন্স দিয়েছে, এমন একটিও এমএলএম কোম্পানি আর নেই। এমএলএম পদ্ধতিতে কেউ ব্যবসা করলে আইনত দণ্ডনীয় হবেন।

আপনার মতামত দিন