আজ ২৫শে ডিসেম্বর, বড়দিন। বড়দিনের এই দিনটি আকৃতিতে বড় নয়। আকৃতির দিক থেকে বছরের সবচেয়ে ছোট দিনগুলোর মধ্যে পড়ে ২৫শে ডিসেম্বর। তথাপি এই ছোট দিনটাকে বড়দিন বলা হয় কারন এই দিনে উৎযাপন করা হয় কারন ত্রাণদাতা প্রভু যীশু খ্রীস্টের জন্মতিথি, যার আবির্ভাব হয়েছিল প্রেমাবতার রূপে দুইহাজার বছরেরও বেশি সময় আগে। বিগত এই দুই হাজার বছরে খ্রীস্টীয় প্রেমের বিস্তার ও গভীরতা পৃথিবীর মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে। এই প্রেমরুপ ঐশি বানী মানবরুপ পরিগ্রহ করেছিলেন এক অতি দরিদ্র অসহায় শিশু রুপে।
দেবাধিদেব যিনি, তিনি নিজেকে নিঃস্ব করে পৃথিবীতে এলেন মানুষের পরিত্রাণের জন্য। বিশ্বব্রহ্মান্ডেরে অধিশ্বর যিনি, তিনি শায়িত রইলেন জীর্ণ গোয়াল ঘরে। কী আশ্চার্য! আপাতঃ দৃষ্টিতে এগুলো অসম্ভব বলে মনে করা হয়। মনেহয়, এরুপ তো হবার কথা নয়, উচিৎ নয়। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে যে, যার সব কিছু আছে, সেই সব কিছু ছাড়তে পারে, অন্যেরা তা পারে না। তাছাড়া যিনি মহামান্বিত হবেন, তাকে তো আগে নিঃস্ব হতেই হবে। তাই তো তাঁকে দেখি ছোট শিশুরুপ র্জীণ গোয়াল ঘরে।
আবার দেখি দরিদ্রের মাঝে, দেখি অসুস্থ্যদের মাঝে, দেখি অসহায় মানুষের মাঝে মঙ্গলের বানী, ভালবাসার বানী, শান্তির বানী প্রচার করতে। আজকের এই অশান্ত পৃথিবীতে, এই রেষারেষীপূর্ণ পরিপূর্ন পরিবেশে বারে বারে আমরা শান্তি দাতা যীশুকে ডাকতে পারি।
প্রেমরুপ অবতার যিনি, তার আগমনেই সারা বিশ্ব প্রেমপূর্ণ হোক, পৃথিবী নতুন করে জেগে উঠুক কায়মনোবাক্যে আজ আমরা এই প্রার্থনাই করি। বড়দিন উৎসব পালনে প্রেমরূপ খ্রীস্টদেবতার প্রেমপরশ আমাদের প্রত্যেকের হৃদয়-মনকে তাঁর প্রেমরসে সিক্ত করুন। তার আগমনেই বিশ্ব ভ্রাতৃত্বগড়ে উঠুক। সকলকে বড়দিন ও আসন্ন নববর্ষের আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই।
শুভেচ্ছান্তে,
ফাদার খোকন ভিনসেন্ট গোমেজ
পাল-পুরোহিত, জপমালা রানীর গির্জা, হাসনাবাদ, নবাবগঞ্জ, ঢাকা।
ছবি: জপমালা রানীর গির্জার গ্রটো