বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণের অপেক্ষায় বানভাসিরা, বিশুদ্ধ পানির সংকট

7
বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণের অপেক্ষায় বানভাসিরা, বিশুদ্ধ পানির সংকট

দেখা মিলেছে সূর্যের। ধীরে ধীরে নামছে পানি। দৃশ্যমান হচ্ছে বন্যায় তলিয়ে যাওয়া এলাকা। সন্ধান মিলছে স্বজনের। একদিকে যখন এমন স্বস্তি, অন্যদিকে বাড়ছে দুশ্চিন্তা। ফেনীর ছয় উপজেলার চারটি থেকে পানি নামছে। যে পানি অন্য দুই উপজেলা হয়ে পড়ছে  সাগরে। আতঙ্ক আর দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন এসব এলাকার বাসিন্দারা। অন্যদিকে খাদ্য সংকটও প্রকট আকার ধারণ করেছে। সঙ্গে সুপেয় পানি ও শিশু খাদ্যের তীব্র সংকট।

সরকারি ও বেসরকারিভাবে ত্রাণ পৌঁছানো  হলেও চাহিদার তুলনায় সেটি অপ্রতূল। বিশেষ করে প্রত্যন্ত এলাকায় খাদ্য সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে হাজার হাজার মানুষের খাদ্যের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা। টানা বর্ষণ ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উজান থেকে নেমে আসা পানিতে গত কয়েকদিনে প্লাবিত ফেনীসহ দেশের ১২ জেলা। পানিবন্দি অর্ধকোটির বেশি মানুষ। মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ জনে। একের পর এক তলিয়ে গেছে বিভিন্ন এলাকা। ঘরবাড়ি, দোকানপাট, ফসলি ভূমি, সড়ক সবই নিমজ্জিত বন্যার পানিতে। ক্ষতিগ্রস্ত লাখ লাখ মানুষ। বিদ্যুৎ নেই অধিকাংশ দুর্গত এলাকায়। পানি ও বিদ্যুতের অভাবে অচল হয়ে পড়েছে অসংখ্য মোবাইল টাওয়ার। যার কারণে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দুর্গত এলাকার মানুষ।

অন্য খবর  নবাবগঞ্জের ইছামতি নদীতে নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত

গতকাল ফেনী জেলার ৬টি উপজেলার মধ্যে পরশুরাম, ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া ও সদরের বিভিন্ন এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত পরশুরাম ও ফুলগাজীরও বিভিন্ন এলাকা থেকে পানি নেমে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসব এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন গত পরশু থেকে পানি কমছে ধীরে ধীরে। স্বস্তি ফিরছে নাগরিকদের মধ্যে। তবে খাদ্য সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে সুপেয় পানির এখনো অভাব রয়েছে। তাই অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অন্যদিকে শিশু খাদ্যেরও অভাব তীব্র। সেনা, নৌ, বিমান বাহিনী, কোস্টগার্ড, বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থা উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এ ছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও রেড ক্রিসেন্টসহ বেসরকারিভাবে অনেকে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

হাজার মানুষ। গত দুদিনে বন্যাদুর্গত এলাকায় সাপের দংশনে আহত হয়ে ৩৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গতকাল শনিবার দুপুরে বেগমগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র মো. শিউর রহমান নাদিম চৌমুহনী পৌর পার্ক দীঘিতে গোসল করতে নেমে সাপের দংশনে মৃত্যুবরণ করে। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরী দল তার মৃতদেহ উদ্ধার করে। শনিবার বিকালের দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার।
চট্টগ্রামে গত বৃহস্পতিবার থেকে চলমান বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা  উন্নতি হয়েছে। বৃষ্টি পড়া বন্ধ হওয়ায় কয়েকটি   এলাকায় রাস্তা থেকে নামতে শুরু করেছে পানি। তবে এখনো সড়ক পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অনেক এলাকা। অব্যাহত রয়েছে ত্রাণ তৎপরতা। এদিকে বন্যার পানিতে ডুবে ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে  ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

আপনার মতামত দিন