নবাবগঞ্জ প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির অভিযোগ

226

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী ধীরেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই তিনি ইচ্ছামতো কাজ করতে চান। আবার যেসব ঠিকাদার ঘুষ ও আগাম কমিশন দিতে চান না তাদের তিনি নানাভাবে হয়রানি করেন। এমনকি অভিযোগ রয়েছে ঠিকাদারি কাজ পাইয়ে দিতে আগাম ১০% ও কাজ পাওয়ার পর ৫% কমিশন নিয়ে থাকেন। তার আস্থাভাজন ঠিকাদাররাই এসব সুবিধা বেশি পেয়ে থাকেন। অনিয়ম-দুর্নীতির এ ঘোরটোপের সঙ্গে তার দফতরের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীও জড়িত।

তিনি একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলে স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম করেছেন। জানা গেছে, নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী ধীরেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ ধরাকে সরাজ্ঞান করে লুটেপুটে খাচ্ছেন নানা প্রকল্পের অর্থ। তার নিজস্ব ঠিকাদারকে দিয়ে লোক দেখানো লটারি করে কাজ পাইয়ে দিয়েই তিনি ক্ষান্ত নন। নবাবগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি বড় সেতু নির্মাণে তিনি গাফিলতি করেছেন। ফলে ঠিকাদার পরিবর্তনের অজুহাতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) ওপরের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এসব প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ বাড়িয়েছেন। সেখানেও রয়েছে তার অর্থ লুটে নেয়ার বিশেষ কৌশল। তবে তিনি এসব বিষয়ে নিজে সুবিধা নেয়ার কথা অস্বীকার করেন। কিন্তু এ ধরনের কাজের ক্ষেত্রে বরাদ্দ যে বাড়ে সে বিষয়ে তিনি একমত পোষণ করেন।

অন্য খবর  উর্ধতন কতৃপক্ষের নির্দেশে বন্ধ হলো সমাজ অবক্ষয়ক যাত্রা

নবাবগঞ্জ উপজেলার বান্দুরা ইউনিয়নের একজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সম্প্রতি একটি রাস্তায় কাজ হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগসাজশে ঠিকাদার তড়িগড়ি করে কাজটি শেষ করেছেন। এ ছাড়া যন্ত্রাইল ইউনিয়নের একটি রাস্তায় নিম্নমানের ইটের খোয়া ফেলেই বিটুমিন ঢেলে দায়সারা কাজ শেষ করেছেন বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন।

একজন ঠিকাদার বলেন, নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী ধীরেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ তাকে একটি কাজ বাগিয়ে দেয়ার কথা বলে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে প্রায় এক বছর ধরে টালবাহানা করছেন। এরকম আরও অনেকেই তার কাছে ধরাশায়ী হয়েছেন।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, বিভিন্ন ইউনিয়নের কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রভাবশালী কিছু ঠিকাদারের সঙ্গে সখ্যতা রেখে প্রকল্প ও বাজেট তৈরি করে তাদের কাজ পাইয়ে দিচ্ছেন।

এ ছাড়া তিনি উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তার প্রকল্প তৈরি না করেই স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে যেসব এলাকায় তার ব্যক্তিগত সুবিধা আদায়ের সুযোগ আছে, সেসব এলাকার রাস্তা ও ব্রিজ-কালভার্টের কাজ আগে করাচ্ছেন। এ বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে তিনি নিজেকে সরকারের প্রভাবশালী লোকের কাছের মানুষ ও প্রধানমন্ত্রীর এলাকার লোক বলে পরিচয় দেন। তাই ভুক্তভোগী ঠিকাদার ও এলাকার সচেতন মহলের কেউ কেউ তার এসব কাজের প্রতিবাদ করলেও ফল মেলেনি।

অন্য খবর  দোহার প্রেস ক্লাবের সম্পাদককে হত্যার চেষ্টা: নিউজ৩৯ এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ

উপজেলার একজন সহকারী প্রকৌশলী বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঘুষের অভিযোগ হাতেনাতে প্রমাণ করা যায় না। তাই নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী ধীরেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথের এ ধরনের দুর্নীতি হয়তো প্রমাণ করা যাবে না। কিন্তু আমরা খুব কাছ থেকে যা দেখেছি- তিনি টাকা ছাড়া কিছুই বোঝেন না। আগাম টাকা ছাড়া তিনি যেমন কোনো প্রকল্প নিতে চান না, তেমনি আগাম কমিশন ছাড়া ঠিকাদারকে কাজও দেন না।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকৌশলী ধীরেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ নিউজ৩৯কে বলেন, ‘এসব অভিযোগ সঠিক নয়। আমার আওতাভুক্ত প্রতিটি এলাকার রাস্তাঘাট নির্মাণ ও সংস্কারে উদ্যোগ নিয়েছি।’

আপনার মতামত দিন