কষ্ট করে সড়কের কাদা আর পানি মাড়িয়ে হাঁটছেন পথচারীরা। অটোরিকশায় চলতে গেলেও তীব্র ঝাঁকুনি খেতে হয়। একটু বৃষ্টি হলে সড়কের গর্তগুলোতে জমে পানি। ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার কলাকোপা বাজারে যাওয়ার সড়কের বর্তমান হাল এটি।
নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সমসাবাদ হয়ে কলাকোপা ইউনিয়নে যাওয়ার রাস্তাটি উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের অধীনে। সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, নবাবগঞ্জ বাজার থেকে দোহার-নবাবগঞ্জ কলেজ সড়ক দিয়ে একটু সামনে গেলেই কলাকোপা বাজারের রাস্তা। কলেজ থেকে সমসাবাদ এলাকার শুরু। সমসাবাদ থেকে পোদ্দার বাজার পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা ভাঙা। কোথাও কোথাও বড় গর্তের কারণে পথচারী ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালকেরা রাস্তা ছেড়ে দোকানের সামনের জায়গা দিয়ে চলাচল করছেন।
এলাকাবাসী জানান, বৃষ্টির সময় রাস্তায় পানি জমে। আর শুকনো মৌসুমে ধুলাবালুর কারণে এ রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। নবাবগঞ্জ বাজার থেকে কলাকোপা বাজারে যাওয়ার এ রাস্তাটি গুরুত্বপূর্ণ। উপজেলা সদর থেকে খুব কাছেই কলাকোপা ইউনিয়ন। এ সড়ক দিয়ে নিয়মিত ভারী ট্রাক চলাচল করে। ট্রাকগুলো বাজার থেকে চাল, কলা ও অন্যান্য মালামাল পরিবহন করে। ভারী ট্রাক চলাচলের কারণে রাস্তাটি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অটোরিকশাচালক মো. সুমন বলেন, এক বছর আগে একবার সামান্য পিচ দিয়ে রাস্তা মেরামত করা হয়েছিল। এরপর বৃষ্টির পানি জমে ও ভারী যানবাহন চলাচল করায় রাস্তাটি এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
পোদ্দার বাজারের ব্যবসায়ী আনন্দ চন্দ্র বালো বলেন, ‘প্রায় এক বছর হতে চলল এ রাস্তাটি এ রকম হয়ে পড়ে আছে। এ সরু রাস্তা দিয়ে বড় বড় ট্রাক কলাকোপা বাজারে চাল ও কলাসহ বিভিন্ন পণ্য আনা-নেওয়া করায় এ রাস্তা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ইউনিয়নের অনেক শিক্ষার্থী পোদ্দার বাজারের হরেকৃষ্ণ কুসুমকলি উচ্চবিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে। যাদের বেশির ভাগ সমসাবাদ, হাড়ভাঙ্গা, বটতলা, আমতলা ও কলাকোপা বাজার থেকে যাতায়াত করে। রাস্তা ভাঙা থাকার কারণে অনেক শিক্ষার্থীকে হেঁটে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়। দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. ফারুক হোসেন বলে, ‘স্কুলে যাওয়ার রাস্তা ভাঙা থাকায় বেশির ভাগ সময় হেঁটে আসি। বৃষ্টি হলে বেশি কষ্ট হয়।’
কলাকোপা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘রাস্তার বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলীকে অবহিত করেছি। এখন বর্ষা মৌসুম চলছে, এ কারণে কাজে হাত দেওয়া সম্ভব হবে না। বর্ষা মৌসুম শেষ হলে রাস্তা মেরামত করা হবে বলে আশ্বাস পেয়েছি।’
উপজেলা নির্বাহীপ্রকৌশলী মো. শাহজাহান বলেন, ‘আমরা প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার তালিকা চেয়েছি। জুন-জুলাই মাসে কোনো বাজেট বরাদ্দ থাকে না। সে জন্য ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলোয় কাজ করা যাচ্ছে না। তবে কলাকোপা বাজারে যাওয়ার রাস্তার কাজ খুব শিগগির শুরু করা হবে। অন্য রাস্তাগুলো মেরামতের কাজ শুরু করতে আরও দু-তিন মাস লেগে যাবে।’
আপনার মতামত দিন