দোহারে নদী ভাঙনে বিস্তীর্ণ জনপদ বিলীন

347

ঢাকা দোহার উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মা নদীতে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। ঢাকার দোহারে পদ্মার ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নয়াবাড়ী, সুতারপাড়া, বিলাসপুর ও মাহমুদপুর ইউনিয়নের ১০ হাজার পরিবার।

গত এক সপ্তাহে পাঁচ শতাধিক স্থাপনা পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। বসত ভিটা হারানো পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে মানবেতন জীবনযাপন করছে। অব্যাহত ভাঙনে হুমকির মুখে রয়েছে আরো এক হাজার স্থাপনা।

উপজেলা প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে চারটি ইউনিয়নের পাঁচ শতাধিক স্থাপনা পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। এর মধ্যে সুতারপাড়ার মধুরচরে ২০০টি, বিলাসপুরের আলীনগর, কুতুবপুর ও মাইটা গ্রামের ১৭৫টি, নয়াবাড়ীর অরঙ্গাবাদ, পানকুন্ডু, ধোয়াইর ও বাহ্রা গ্রামের ৪০টি ও মাহমুদপুর ইউনিয়নের মাহমুদপুর ও চর বিলাসপুরের শতাধিক ঘরবাড়ি।

এছাড়া পদ্মায় বিলীন হয়েছে ১১টি দোকান, তিনটি মসজিদ, দু’টি সেতু ও একটি বিদ্যালয়। ঝুঁকির মুখে রয়েছে নয়াবাড়ীর বাহ্রা হাবিল উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি ছোট বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ভিটেমাটি, ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি হারানো পরিবারগুলো রাস্তার পাশে খোলা জায়গায় পলিথিন টানিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। অনেককে আবার আহাজারি করতে দেখা গেছে।

অন্য খবর  দোহার থানা জামায়াত আমির গ্রেফতার

দোহারের মানচিত্র হতে হারিয়ে যাচ্ছে সুতারপাড়া ইউনিয়নের মধুরচর গ্রাম। মধুরচরের সোনামদ্দিন (৭০) অভিযোগ করেন, গত কয়েক দিনের অব্যাহত ভাঙ্গনে ভিটেমাটি সব হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছি।

এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিরা অভিযোগ করেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং সুতারপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কেউই কোন খোঁজ-খবর নেন না। বর্তমান সরকারের গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী বেরীবাঁধ দেওয়ার প্রস্তাব দিলেও কোন বাস্তবায়ন হয় নাই, এই বলে দুঃখ করেন তারা।

দোহার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. হাবিবুল্লাহ মিয়া জানান, ভাঙ্গন কবলিত প্রতি পরিবারকে ১৫ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে। আরো সাহায্যের জন্য ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পাউবোর ঢাকা অঞ্চলের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবদুল মান্নান বলেন, পদ্মার ভাঙ্গন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ছোট তহবিল দিয়ে হবে না। সরকার ও এডিবির উদ্যোগে প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। বরাদ্দ পাস হলেই কাজ করা সম্ভব। তবে সেটা কবে নাগাদ হবে, তিনি বলতে পারেননি।

 

আপনার মতামত দিন