তারেক রাজীবঃ একজন আফরোজা আক্তার রিবা; তিনি দোহার উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা। মা ইলিশ সংরক্ষণে তিনি ইস্পাতের মতো কঠোর ও কঠিন। আবার একই সাথে সেই জব্দকৃত মাছ বিলিয়ে দিচ্ছেন বিভিন্ন মাদ্রাসা-এতিমখানায় তিনি বিলিয়ে দিচ্ছেন একজন মমতাময়ী মায়ের ভালোবাসায়। দার্শনিক টিমোথি নারীর সততা, সাহসিকতা সম্পর্কে বলেছিলেন,”The hands that rock the cradle can rule the world.” অর্থাৎ যে হাত মমতা দিয়ে শিশুর দোলনা দোলায়, সে হাতই যেন বিশ্বকে শাসন করতে পারে। তারই প্রকৃষ্ট উদাহরণ দোহার উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা আফরোজা আক্তার রিবা।
গতকাল মঙ্গলবার রাতের শেষ প্রহরে বরাবরের মতো অভিযান চালান তিনি। ভোর ৪টা থেকে সকাল ৯ টা পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা আক্তার রিবা’র নেতৃত্বে মা ইলিশ রক্ষায় চলে এই অভিযান। এই অভিযানে প্রায় ৬০ কেজি মা ইলিশ মাছ, নদী থেকে উত্তলিত প্রায় ১০,০০০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ ও ৯ জন আসামীকে আটক করা হয়। এসময় তাকে সহযোগীতা করে নৌ পুলিশ, আনসারসহ উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের অনেকে উপস্থিত ছিলেন। পরে আটককৃত আসামিদের ভ্রাম্যমান আদালত ৭ জনকে কারাদন্ড ও ২ জনকে অর্থদন্ডে দন্ডিত করেন।
কিন্তু এরপরই ঘটে একটি নাটকীয় কিন্তু মানবিকতার স্পর্শী ঘটনা। হটাৎ – ই, দোহারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা আক্তার রিবা জব্দকৃত মাছ নিয়ে ছুটে যান পার্শ্ববর্তী উপজেলা নবাবগঞ্জের দিকে।তিনি যান বাংলাদেশের অন্যতম ও দোহার-নবাবগঞ্জের প্রসিদ্ধ নবাবগঞ্জ এতিম খানা ও মাদ্রাসায় । এ সময় ছুটে আসেন শতাধিক এতিম বাচ্চারা। মমতাময়ী মায়ের মত ছুটে আসা বাচ্চাদের আগলে মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে নিজ হাতে মাছ বিতরণ করেন দোহারের নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা আক্তার রিবা। এতিমদের সেই উচ্ছ্বাস ও আনন্দ সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি করে। সবাই-ই আফরোজা আক্তার রিবা’র এহেন ভূমিকার প্রশংসা করেন।
এসময় নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব তোফাজ্জল হোসেন, শিক্ষা কর্মকর্তা, কৃষি কর্মকর্তা ও মৎস কর্মকর্তা, এবং উক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রধান অধ্যক্ষ সহ অসংখ্য জনসাধারন উপস্থিত ছিলেন।