২০০৭ সালের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ঘুষ গ্রহণের মামলায় বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট অ্যালায়েন্সের (বিএনএ) সভপতি ও সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার দণ্ড কমিয়ে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই মামলায় তার স্ত্রী সিগমা হুদার তিন বছরের কারাদণ্ড কাস্টডিতে থাকাকালীন সময়কে সাজা বলে গণ্য করেছেন আদালত।
২০০৭ সালের ২১ মার্চ দুদকের উপ-পরিচালক মো. শরিফুল ইসলাম ধানমন্ডি থানায় নাজমুল হুদা ও তার স্ত্রী সিগমা হুদার বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছিল, সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘খবরের অন্তরালে’র জন্য মীর জাহের হোসেনের কাছ থেকে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেন নাজমুল হুদা ও তার স্ত্রী সিগমা হুদা।
সেসময় আদালত এ মামলায় ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাকে সাত বছরের সাজা দিয়েছিল। পরে সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন তিনি। শুরুতে হাইকোর্ট তাকে এ মামলায় খালাস দেয়। কিন্তু ওই খালোসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক।
হাইকোর্টে আপিলের শুনানি নিয়ে আদালত বলেন, মামলার গুণাগুণ বিচার করে আপিল নিষ্পত্তি করতে হবে। পরবর্তীতে ওই আপিল শুনানির জন্য হাইকোর্টে পাঠানো হয়। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আদেশে পুনঃশুনানির পর বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি ভবানী প্রাসাদ সিং ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ৭ বছরের সাজা কমিয়ে ৪ বছর করে রায় ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে রায়ের কপি পাওয়া ৪৫ দিনের মধ্যে নাজমুল হুদাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।
আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান। নিজের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। তবে রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। তবে সিগমা হুদার পক্ষে এদিন আদালতে ছিলেন তার আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউ সি। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. বশির আহমেদ।
দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান জানান, বিচারিক আদালতের দেয়া সাত বছরের সাজা থেকে সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার সাজা কমেছে তিন বছর। তবে জরিমানার বিষয়ে কিছু বলেননি হাইকোর্ট। সুতরাং, আড়াই কোটি টাকা জরিমানা তাকে দিতেই হবে।
তবে নাজমুল হুদার স্ত্রী সিগমা হুদা বিচার চলাকালীন সময়ে বেশ কিছুদিন কারাগারে (কস্টডিতে) ছিলেন। ওই সময়কেই তার সাজা হিসেবে গণ্য করতে বলেছেন আদালত।
২০০৭ সালের ২৭ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ আদালত মামলার রায়ে নাজমুল হুদাকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও আড়াই কোটি টাকা জরিমানা করেন। তার স্ত্রী সিগমা হুদাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
বিচারিক আদালতের দেয়া ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ২০ মার্চ তারা আপিল করলে হাইকোর্ট থেকে খালাস পান।
পরে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর খালাসের রায় বাতিল করে পুনঃশুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। ২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিল আদেশ পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনও খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত। এরপর হাইকোর্টে এ মামলার পুনঃশুনানি গ্রহণ করা হয়।