গুলিস্তান থেকে ৫০ কিলোমিটার দুরত্বের নবাবগঞ্জের বাস ভাড়া ৭০ থেকে ৮০ টাকা, আর এর চেয়ে ২০ কিলোমিটার কম দুরত্বের কেরানীগঞ্জের কোনাখোলা, রামেরকান্দা, রুহিতপুরের ভাড়াও তাই! অর্থাৎ ৫০ কিলোমিটার দুরত্বের নবাবগঞ্জে বাস ভাড়া ৭০ টাকা হলে ১০ কিলোমিটার দুরত্বের কেরানীগঞ্জে ভাড়া হওয়া উচিৎ মাত্র ২০ টাকা। কিন্তু ২০ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা দিয়ে চলাচল করতে হয় কেরানীগঞ্জবাসীর।
অথচ কেরানীগঞ্জের বুক চিরে এই রাস্তা চলে গেছে ঢাকায়। এটাত শুধু গুলিস্তান থেকে ফেরার কথা, যাওয়াটা আরও মুশকিল! নবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলোতে এই এলাকার যাত্রীদের উঠা নিষেধ! তবে কোন মতে উঠা গেলেও আদায় করা হয় সমান ভাড়া সাথে বাসে থাকা যাত্রীদের নানা বকাঝকা। পাবলিক বাসগুলোর এই বৈষম্য নীতিতে বাধ্য হয়েই সিএনজি এবং ভাঙাচুরা নিলয় পরিবহনে চড়ে চলাচল করে কেরানীগঞ্জের যাত্রীরা। নবাবগঞ্জ এবং দোহার উপজেলার জন্য কেরানীগঞ্জ রোডে কয়েকশত সরকারি-বেসরকারি বাস থাকলেও কেরানীগঞ্জবাসীর জন্য নেই একটির সুবিধা।
তাই এই সুযোগে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সিএনজি এবং নিলয় পরিবহনের চালক ও মালিকরা। লাখিরচর, নতুন সোনাকান্দা বিসিক শিল্পনগরী/ রুহিতপুর থেকে থেকে সিএনজিতে কদমতলী যেতে খরচ ৫০/৬০ টাকা যা নবাবগঞ্জবাসীর গুলিস্তান যাওয়ার প্রায় কিছুটা খরচ বাড়ালে নবাবগঞ্জ এর ভাড়া হয়ে যায় । আর রুহিতপুর থেকে নিলয় পরিবহনের ভাড়া ৩৫ টা হলে অতিরিক্ত যাত্রী সাথে ভাড়ি মালামাল বহনের কারণে মাঝেমধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা। ঢাকা শহরের কাছাকাছি বসবাস করা লোকজন সিএনজি-অটোরিকশায় চলাচল করতে পারলেও দুর্ভোগের শেষ নেই রুহিতপুর, কলাতিয়া এবং হযরতপুরবাসীর। তাই এই এলাকাবাসীর দাবী একটাই, কেরানীগঞ্জে পাবলিক বা সরকারি বাস চাই।
কেরানীগঞ্জের শাক্তার বাসিন্দা সিকদার সাইফুল্লাহ নিউজ৩৯কে বলেন, আমাদের যায়গা দিয়ে বাস চলে অথচ আমাদের জন্য বাসে কোন সীট থাকেনা আর তেমন কোন সুবিধা পাইনা। দোহার- নবাবগঞ্জের প্রতিটি বাসে রুহিতপুর, রামেরকান্দা, শাক্তার জন্য অন্তত ৫/১০ টি করে আসন সংরক্ষণ করা হলে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। আমরা ন্যায্য ভাড়ায় বাস সার্ভিস চাই। অথচ এর চেয়ে কম খরচে এবং আরামে নবাবগঞ্জ-দোহারের মানুষ কোর্টে আসে। আমরা কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা হয়েও যেনো বতির নিচে অন্ধকারে আছি।
পরিবহন ব্যবসায়ী মন্টু মিয়া নিউজ৩৯কে জানান, আমরা কেরানীগঞ্জের বিসিক শিল্পনগরী থেকে দোতালা বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু করেছিলাম। যাত্রীদের অসহযোগিতা, অতিরিক্ত সিএনজি সর্বপরি নবাবাগঞ্জের কিছু লোকের কারণে লাইনটি টিকিয়ে রাখা যায়নি। ৬০ লক্ষ টাকা লোকসান দিয়ে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছি। এর আগেও কয়েকটি বাস সার্ভিস এসে টিকতে পারেনি এই রোডে। কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা পেলে রোডটি আবারও চালু করা যাবে।
এব্যাপারে কেরানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ নিউজ৩৯কে বলেন, রুহিতপুর থেকে গুলিস্তান রোডে খুব শীগ্রই গণপরিবহন চালু হবে। কেরানীগঞ্জবাসীর স্বার্থে আশা করছি এক সপ্তাহের মধ্যেই বাসগুলো চালু হবে।