রাজধানীর ইস্কাটনে জোড়া খুনের মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য পিনু খানের ছেলে বখতিয়ার আলম রনিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বুধবার আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল ঈমাম।
রায়ে বলা হয়, গুলির ঘটনার সময় স্বাভাবিক ছিলেন না রনি। তিনি মাতাল ছিলেন। তার মেয়ে হাসপাতালে থাকায় বিষণ্ণতায় ছিলেন। তাই তিনি মদপান করে নেশাগ্রস্ত ছিলেন। মামলার বিচারে তা প্রমাণিত হয়েছে।
রায়ে আরো বলা হয়, এ ঘটনায় তার (রনি) মৃত্যুদণ্ড শাস্তি হয়, কিন্তু শারীরিক ও মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হলো।
২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল তিন বন্ধুসহ রনি শেলবারে মদ পান করেন। এরপর গভীর রাতে বাসায় ফেরার পথে নিউ ইস্কাটন রোডে জ্যামে পড়লে রনি তার পিস্তল বের করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়েন। গুলিতে রিকশাচালক আবদুল হাকিম ও অটোরিকশাচালক ইয়াকুব আলী গুরুতর আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই বছরের ১৫ এপ্রিল মারা যান হাকিম। আর ২৩ এপ্রিল মারা যান ইয়াকুব।
পরে হাকিমের মা মনোয়ারা বেগম রমনা থানায় অজ্ঞাত পরিচয়ে কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন। ২৪ মে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ মামলার দায়িত্ব পাওয়ার পর সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ৩১ মে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের বাসা থেকে রনিকে গ্রেফতার করে।
পরে ২০১৫ সালের ২১ জুলাই রনিকে একমাত্র আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন ঢাকা ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) দীপক কুমার দাস।
রনির গাড়ির চালক ইমরান ফকির এবং ঘটনার দিন তার সঙ্গে থাকা কামাল মাহমুদ, টাইগার কামাল ও জাহাঙ্গীর আলম আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। সাক্ষীদের সাক্ষ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, রনি তার পিস্তল দিয়েই গুলি ছোড়েন। এই গুলিতেই হাকিম ও ইয়াকুব গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে মারা যান।
ঘটনার দিন কালো রঙের যে প্রাডো গাড়ি থেকে রনি গুলি চালিয়েছিলেন সেটি সাবেক সংসদ সদস্য পিনু খানের বলে গণমাধ্যমে খবর আসে সে সময়। সবশেষ আলোচিত এই মামলার রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় বখতিয়ার আলম রনিকে। এর আগে তিন দফা পেছায় রায়।