ঢাকার নবাবগঞ্জের মাঝিরকান্দা এলাকায় এক গৃহবধূর গোপনে নগ্ন ছবি তুলে ইন্টানেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি করেছে স্থানীয় বখাটেরা। এ ঘটনায় ভুক্তাভোগী গৃহবধূর স্বামী সুমন চৌধুরী বাদী হয়ে মালিকান্দা পরান চৌধুরীর ছেলে বিকাশ (১৬) ও নয়াকান্দা গ্রামের আনোয়ার হোসেন ওরফে আয়নাল হোসেনের ছেলে আসিফ ওরফে বাবু বেপারীর (১৬)-এর বিরুদ্ধে মামলা করলে আসামির আত্মীয়স্বজন তাদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় একমাত্র আসিফ বেপারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অন্য আসামি বিকাশ গৃহবধূর চাচাতো দেবর। গতকাল সাংবাদিকদের এই সব তথ্য জানান ভুক্তাভোগী গৃহবধূ ও তার স্বামী।
গৃহবধূর পরিবার ও অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ১লা আগস্ট ওই গৃহবধূ গোসল করার সময় প্রতিবেশী বিকাশ তার বন্ধু আসিফকে নিয়ে সুযোগ বুঝে সুকৌশলে গোপনে গৃহবধূর নগ্ন ছবি তুলে। এরপর আসামিরা গৃহবধূর চাচাতো জা’র কাছে গৃহবধূর নগ্ন আনুমানিক ৮-১০টা ছবি পাঠিয়ে ১৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। কিন্তু বখাটেদের দাবিকৃত টাকা পরিশোধ না করায় আসামিরা তাদের ব্যবহ্নত দুটি বাংলালিংক নম্বর থেকে গৃহবধূর স্বামীর মোবাইলের ইমু নম্বরে তার স্ত্রীর নগ্ন ছবি পাঠায় এবং ১৫ হাজার টাকা দাবি করে। এই সময় তারা টাকা পরিশোধের জন্য বিকাশের একটি নম্বরও দেয়। দাবিকৃত টাকা না দিলে গৃহবধূর নগ্ন ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়া হবে বলে হুমকি দেয় বখাটেরা। এই ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী বাধ্য হয়ে আসিফ বেপারী ও বিকাশকে আসামি করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলা করেছে। ওইদিন রাতে আসিফ বেপারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই ঘটনার পর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে আসামি বিকাশ এবং আসিফের স্বজনরা। তারা অনবরত মামলা উঠানো এবং প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকেন গৃহবধূ ও তার স্বামীকে। বাধ্য হয়ে গৃহবধূর স্বামী ১৯শে আগস্ট নিজের ও স্ত্রীর জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে নবাবগঞ্জ থানায় বিকাশের বাবা পরান ও নয়াকান্দা (আমবাগান) গ্রামের এমএ রশিদের পুত্র মেহেদী হাসান জেকি’র বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করেন।
গৃহবধূর স্বামী সুমন চৌধুরী জানান, ওদের জ্বালায় এখন আমাদের বাঁচাই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত মামলা উঠানো হুমকি দিচ্ছে। এতদিনে শুধু মাত্র একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছে পুলিশ। সকল আসামিকে গ্রেপ্তার করে দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান তিনি।
ভুক্তাভোগী গৃহবধূ বলেন, আমি প্রথমে ভেঙে পড়েছিলাম। কিন্তু আমার স্বামী আমাকে সাহস দিয়েছেন। তার সহযোগিতায় আমি প্রতিবাদ করতে সাহস পেয়েছি। আমি চাই অপরাধীদের কঠোর শাস্তি হোক। আমার মতো আর কাউকে যেন এই ধরনের পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নবাবগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক মো. জালালউদ্দিন বলেন, মামলা হওয়ার পরপরই ১নং আসামি আসিফকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আশা করি দ্রুত সব আসামিকে আইনের আওতায় আনতে পারবো।