নবাবগঞ্জে ইউপি নির্বাচনে নতুন প্রার্থীদের ব্যাপক নির্বাচনী প্রচার

আর পুরাতন প্রার্থীদের ভিন্ন কৌশল

959

ফারুক আহমেদ সজল ♦ আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে চলছে নানা হিসাব নিকাশ। প্রার্থীরা যে যার মতো করে ভোটারের বাড়ী বাড়ী হেটে চলছেন। নানা কৌশলে ভোটারের মনের ভিতর জায়গা করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সকাল, দুপুর, গভীর রাত পর্যন্ত জনসংযোগে ব্যয় করে যাচ্ছেন। ভোট ভিক্ষায় বসে নাই প্রার্থী সমর্থক আত্মীয়-স্বজনরা। দেশের বাইরে থেকেও প্রার্থীর সমর্থনে ভোট ভিক্ষা করছেন অনেক প্রার্থীর আপনজন। প্রার্থীরা কেউ কেউ মহল্লায় মহল্লায় বিভিন্ন ইমেজের লোকদের নিয়ে নিজের পাল্লা ভারী করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। নাওয়া খাওয়া ঘুম সব কিছু পিছন ফেলে চেয়ারম্যান, মেম্বার ও মহিলা মেম্বার প্রার্থীরা মরিয়া হয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশা, ধনী-গরীব সব ধরনের লোক প্রার্থী হয়েছেন। দিন মজুর থেকে কোটিপতিরা প্রার্থী হয়ে ভোটারের কাছে ভোট ভিক্ষায় এক কাতারে নেমে পড়েছেন। নবাবগঞ্জ উপজেলায় ১৪টি ইউনিয়নে ৮৫ জন চেয়ারম্যান, ৪৩০ জন মেম্বার, ১২০ জন মহিলা প্রার্থী নিজ নিজ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচনের আচরণ বিধি কঠোরতা থাকায় প্রার্থীদের শোডাউনের কোন মহড়া দেখতে পাওয়া যায় না। ফলে আইন শৃংখলা স্বাভাবিক থাকায় সাধারণ মানুষ অনেকটা স্বস্তির নিঃশাস ফেলছেন। শোডাউন, মহড়া, মাইকিং, জনসভা প্রকাশ্যে করতে না পারায় প্রার্থীরা নিজস্ব যোগ্যতা ভোটারের কাছে কাছে তুলে ধরতে –সুবিধা হচ্ছে। এর ফলে ভোটারদের পক্ষে প্রার্থীদের বিভিন্ন যোগ্যতার মাপ কাঠির মাধ্যমে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হবে। দলীয় প্রভাব কিছুটা কাজে লাগলেও ব্যক্তি যোগ্যতা বিশেষভাবে মূল্য হয়ে পড়েছে। তবে দর্লীয় প্রার্থী একক থাকলে কিছুটা সুবিধা হলেও অভ্যন্তরীণ কোন্দলে বিপর্যয় হওয়ার আশংকা থাকে। ইউনিয়ন নির্বাচনে এলাকা ও ব্যক্তি ইমেজের বিশেষ গুরুত্বের কারনে বিজয়ের পথ সহজ হয়। ১৪টি ইউনিয়নে ২ লক্ষ ২৯ হাজার ১৬ জন ভোটার, ১৩২টি কেন্দ্রে ৬ শত ৫২ কক্ষে অস্থায়ী ভোট কেন্দ্র ৪টি, অস্থায়ী বুথ ২৩টি রয়েছে।

১। শিকারীপাড়া ইউনিয়ন: ১১ হাজার ৬ শত ৭৫ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ৫ হাজার ৩ শত ৬৩ জন, মহিলা ৬ হাজার ৩ শত ১২ জন। ভোটারের মধ্যে ৬ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করেছেন। বর্তমান চেয়ারম্যান এম. এ. জব্বার (তালা) সহ অন্যান্যরা হলেন থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলীমুর রহমান খান পিয়ারা (কাপ পিরিচ), ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আঃ সালাম (গরুর গাড়ী) ও আঃ গফুর মোল্লা (আনারস)। আপন চাচা ভাতিজা বর্তমান চেয়ারম্যান এম. এ. জব্বার আর গফুর মোল্লা। চাচা ভাতিজার লড়াই নির্বাচনে এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। আর আওয়ামী লীগের প্রার্থী ২ জন হওয়ায় নির্বাচনী হাওয়া ভোটারের মাঝে বৈরী হওয়ার অশনি সংকেত দিচ্ছে। পুরুষ সদস্য ৯টি পদে ৩২ জন, মহিলা ৩টি পদে ৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

২। জয়কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন: পদ্মা নদীর কুল ঘেষে এক বিছিন্ন জনপদ; মোট ভোটার ১০ হাজার ৬ শত ১৮ জন, মহিলা ৫ হাজার ৬ শত ৩৭ ও পুরুষ ভোটার ৪ হাজার ৯ শত ৮১ জন। বর্তমান চেয়ারম্যান ফরিদ আহম্মেদ (দেওয়াল ঘড়ি) ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ মোতাহার হোসেন (আনারস), মোঃ মজনু দেওয়ান (গরুর গাড়ি), আব্দুল কাদের (তালা)। অবহেলিত জনপথ হিসেবে বিগত আমলে উন্নয়নের তেমন ছোয়া লাগেনি। পুরুষ সাধারণ সদস্য ৯টি পদে ২৯ জন ও মহিলা ৩টি পদে ৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

৩। বারুয়াখালী ইউনিয়ন: ৯ হাজার ৮ শত ৩৪ ভোটারের মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ৪ হাজার ৪ শত ৪৫ জন। বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ মোঃ রজ্জব মোল্লা (দেওয়াল ঘড়ি), ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী মোঃ রওমন আলী (দোয়াত কলম) সহ আব্দুল্লাহ আল মামুন খান (আনারস), পুরুষ সদস্য পদে ২৫ জন ও মহিলা ৩টি পদে ৯ জন প্রতিদ্বন্দিতা করছেন।

৪। নয়নশ্রী ইউনিয়ন: ১৭ হাজার ৩শত ৮৪ জন ভোটারের মধ্যে ৭ হাজার ৬ শত ৩৮ জন পুরুষ, ৯ হাজার ৭ শত ৪৭ জন মহিলা ভোটার রয়েছে। আওয়ামী লীগের ঘাটি হিসেবে পরিচিতি থাকলেও ইউনিয়ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ হাবিবুর রহমান খান পান্নু (দোয়াত কলম), সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজ উদ্দিন আহমেদ কাজল (জাহাজ), যুবদল নেতা জাহিদুল হক জুয়েল (গরুর গাড়ি), যুবলীগ নেতা ফারুক হোসেন (তালা), মোঃ মাসুদ মোল্লা (মাইক), মোঃ পলাশ চৌধুরী (দেওয়াল ঘড়ি), মোঃ হাবিবুর রহমান (আনারস)। সাধারণ সদস্য ৯টি পদে ৩৬ জন, মহিলা ৩টি পদে ৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

৫। শোল্লা ইউনিয়ন: শোল্লা ইউনিয়ন উপজেলার সর্ববৃহৎ ইউনিয়ন জনসংখ্যা ও আয়তনের দিক থেকে। যে কোন নির্বাচনে শোল্লা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। ২৩ হাজার ৯ শত ৫৮ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ১১ হাজার ৪৯ জন, মহিলা ১২ হাজার ৯ শত ৯ জন ভোটার রয়েছে। আওয়ামী লীগের অন্যতম ঘাটি হিসেবে পরিচিত ইউনিয়ন থাকায় দলীয় প্রার্থীর সংখ্যাও বিগত নির্বাচনের চেয়ে কয়েকগুন বেশী। ২ বারে শ্রেষ্ঠ ও স্বর্ণপদক প্রাপ্ত বর্তমান চেয়ারম্যান ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধক্ষ্য মিজানুর রহমান ভূইয়া কিসমত (দোয়াত কলম) সহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন খান (আনারস), থানা কৃষক লীগের আহবায়ক দেওয়ান জামাল উদ্দিন আহমেদ (তালা), আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল আওয়াল দেওয়ান ( গরুর গাড়ি), বিএনপি নেতা নাসির আহসান পলাশ (জাহাজ), ও মোঃ ফজলুল হক (দেওয়াল ঘড়ি)। অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারনে হয়তো ইউনিয়নটি আওয়ামী লীগের হাতছাড়া হওয়ার আশংকা রয়েছে। সাধারণ সদস্য ৯টি পদে ৩৫ জন, মহিলা ওয়ার্ডের ৩টি পদে ১৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

অন্য খবর  দোহার পৌরসভা নব-নির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের সংবর্ধনা

৬। যন্ত্রাইল ইউনিয়ন: যন্ত্রাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অন্যতম ঘাটি হলেও ইউনিয়ন নির্বাচনে হিসাব নিকাশ উলোট পালট হয়ে যায়। বর্তমান চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা মোঃ বারেকুর রহমান বারেক (কাপ পিরিচ), সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ মনিরুজ্জামান (দেওয়াল ঘড়ি) সহ ৬ জন প্রার্থী রয়েছেন। নন্দলাল সিং (গরুর গাড়ি), এডভোকেট আনন্দ চন্দ্র বিশ্বাস (পিপি) (আনারস) , দোহার নবাবগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মুক্তার হোসেন (তালা)। মহিলা ৩টি ওয়ার্ডে ৮ জন ও পুরুষ ৯টি সদস্য পদে ২৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

৭। বান্দুরা ইউনিয়ন: বান্দুরা ইউনিয়ন হিন্দু, মুসলিম ও খৃষ্ঠান সম্প্রদায়ের আবাস ভূমি। ১৮ হাজার ৫ শত ১৩ জন ভোটারের মধ্যে ৮ হাজার ৬ শত ৯৯ জন পুরুষ, ৯ হাজার ৮ শত ১৪ জন মহিলা ভোটার রয়েছে। বিএনপি সমর্থিত বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ হিল্লাল মিয়া (আনারস) সহ ৬ জন প্রার্থী, তারা হলেন সাহাদাত হোসেন সিকদার (দোয়াত কলম), মোঃ আলম (গরুর গাড়ি), ঢাকা জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক দেওয়ান মোসলেম উদ্দিন (তালা), উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ হুমায়ন কবির মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন অহমেদ পান্নু (দেয়াল ঘড়ি)। নাসির উদ্দিন আহমেদ ও মোসলেম উদ্দিন একই গ্রামের অধিবাসী। ভোটারদেরকে আকৃষ্ট করতে তারা এখন মরিয়া। পুরুষ ৯টি সদস্য পদে ৩৬ জন এবং মহিলা সদস্য ৩টি পদে ৯জন প্রতিদ্বন্দিতা করছেন।

৮। কলাকোপা ইউনিয়ন: কলাকোপা উপজেলা সদর ইউনিয়ন, এর গুরুত্ব সব সময় একটু ভিন্ন। প্রায় ১৪ হাজার ৩ শত ৪৯ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ৬ হাজার ৬ শত ৯৩ জন, মহিলা ৭ হাজার ৬ শত ৫৬ জন। দীর্ঘ প্রায় ২৮ বৎসর একটানা চেয়ারম্যানের চেয়ারটি দখল করে রেখেছেন তৈয়ব আহমেদ (দেয়াল ঘড়ি)। অনেক ধণ্যাঢ্য ব্যক্তিরাও প্রতিদ্বন্দিতা করে তার সঙ্গে পেরে না উঠার ইতিহাস রয়েছে। তিনি সহ আরো ৬ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন, তারা হলেন থানা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও নবাবগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোঃ ইব্রাহিম খলিল (আনারস), সাবেক যুবদল নেতা গত নির্বাচনে অল্প ভোটে পরাজিত প্রার্থী তুষার আহমেদ (তালা), আঃ কায়সার হোসেন (গরুর গাড়ি), ও আসাদুজ্জামান ভূইয়া আজমীর (দোয়াত কলম)। গৃহস্থ ও তাঁতী পেশাজীবিদের উপর নির্ভর করে হিসাব নিকাশ। পুরুষ মেম্বারের ৩টি পদে ২৬ জন, মহিলা ৩টি আসনে ১০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

৯। বক্সনগর ইউনিয়ন: বক্সনগর ইউনিয়নে মোট ১৩ হাজার ২৪ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ৫ হাজার ৯ শত ৮৮ জন ও মহিলা ৭ হাজার ৩৬ জন ভোটার। বর্তমান চেয়ারম্যান এরশাদ আল মামুন (তালা) সহ মোট ৬ জন প্রার্থী রয়েছেন ২ জন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আঃ ওয়াদুদ (আনারস), মোক্তার হোসেন বাদল (গরুর গাড়ি), মোঃ সাহাজাদা (দোয়াত কলম) ও মাহমুদুল হক রিক্তা (দেয়াল ঘড়ি)। পুরুষ সদস্য ৩০ জন ও মহিলা ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্ধন্দিতা করছেন।

১০। বাহ্রা ইউনিয়ন: ১৬ হাজার ৫ শত ২০ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ৭ হাজার ৩ শত ৯ জন, মহিলা ভোটার ৮ হাজার ৮ শত ১৩ জন। বর্তমান চেয়ারম্যান এডভোকেট শাফিল উদ্দিন মিয়া (দোয়াত কলম) সহ ৭ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন, উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের ৮৭জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে ১ জন মহিলা প্রার্থী রয়েছেন তিনি হলো মায়া রাণী মন্ডল (তালা), অন্যরা হলেন উপজেলা বিএনপির একাংশের সাধারণ সম্পাদক মোঃ হারুন অর রশিদ ওসমানী(আনারস), মোঃ সুবেদুজ্জামান সুবেদ (দেয়াল ঘড়ি), হাজী আব্দুস সালাম (জাহাজ), মোঃ নুরুল আলম চৌধুরী (গরুর গাড়ি), চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসাবে মাঠে রয়েছেন। পুরুষ মেম্বার ৩৪ ও মহিলা ৬ জন প্রতিদ্ধন্দিতা করছেন।

অন্য খবর  ধোয়াইরে অগ্নিকান্ডে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতি

১১। কৈইলাইল ইউনিয়ন: ইউনিয়ন পরিষদের ১৬ হাজার ৫ শত ২০ জন ভোটারের মধ্যে ৭ হাজার ৭শত ৭জন পুরুষ ও ৮ হাজার ৮শত ১৩জন মহিলা ভোটার রয়েছেন। উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে বেশী চেয়ারম্যান প্রার্থী। ১২ জন প্রার্থীর মধ্যে বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ মোক্তার হোসেন (চশমা) সহ অন্যরা হলেন মোঃ সেলিম শেখ (আনারস), আশরাফ উদ্দিন আহমেদ (জাহাজ), মোঃ দেলোয়ার হোসেন(কাপ পিরিচ) , সুচান চৌধুরী (দোয়াত কলম), মোঃ গিয়াস উদ্দিন খান(গরুর গাড়ি), শাহ আলম (তালা), আইয়ুব খান (দেয়াল ঘড়ি), মোঃ আইনুল চৌধুরী (টেলিফোন), মোঃ পান্নু মিয়া (মাইক)। পুরুষ মেম্বার প্রার্থী ২৭ জন মহিলা ১৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্ধন্ধিতা করছেন।

১২। আগলা ইউনিয়ন: আগলা ইউনিয়নেয় ১১ হাজার ৭শত ৮০জন ভোটারের মধ্যে ৫ হাজার ৪শত ৪৮জন পুরুষ ৬ হাজার ৩শত ৩২জন মহিলা ভোটার রয়েছেন। বর্তমান চেয়ারম্যান বিএনপি’র একাংশের সভাপতি আবেদ হোসেন (দেয়াল ঘড়ি) মোক্তারুজ্জামান মিল্টন (গরুর গাড়ি), ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ সুরুজ খান (আনারস) ও মোঃ আবুল হোসেন (দোয়াত কলম) চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দিতায় মাঠ চষে বেড়াচ্ছে। পুরুষ সদস্য ৩১ ও মহিলা সদস্য ৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন।

১৩ । গালিমপুর ইউনিয়ন: প্রতিদ্বন্দিতা গালিমপুর ইউনিয়নের মোট ভোটার ৮ হাজার ৫ শত ১৮ জন, এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩ হাজার ৯ শত ৭৫ জন, মহিলা ভোটার ৪ হাজার ৫ শত ৪৩ জন। বর্তমান চেয়ারম্যান বি.এম. আতাউর রহমান (দেয়াল ঘড়ি), অন্যরা হলেন লুৎফর রহমান (মাইক), এস. এম আলমগীর (তালা), ছাত্রদল নেতা তপন মোল্লা (দোয়াত কলম), ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী আঃ মান্নান (আনারস), এস. এম, লিয়াকত (কাপ পিরিচ), নুরুল ইসলাম (টেলিভিশন) ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউর রহমান রেজা (গরুর গাড়ি)। ৩১ জন পুরুষ সদস্য ও ৭ জন মহিলা সদস্য প্রার্থী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।

১৪। চুড়াইন ইউনিয়ন: চুড়াইন ইউনিয়নে ১৫ হাজার ৬১ জন ভোটারের মধ্যে ৬ হাজার ৭ শত ৬০ জন পুরুষ, ৮ হাজার ৩ শত ১ জন মহিলা ভোটার রয়েছেন। নির্বাচনে আড়িয়াল বিলে বিমান বন্দর নির্মাণের আন্দোলনের পক্ষে বিপক্ষে আন্দোলনের নায়কদের নিয়ে হিসাব নিকাশ চলছে ভোটারদের মাঝে। ৭ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেন: মোঃ বোরহান উদ্দিন (মাইক), মোঃ সোবহান (চসমা), সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মোঃ আব্দুল জব্বার ভূইয়া (তালা), শেখ মোঃ মীর হোসেন (দেওয়াল ঘড়ি), আব্দুল বাসেত (দোয়াত কলম), মোঃ নুরুল ইসলাম (গরুর গাড়ি), আবু সাইদ (আনারস) প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। মহিলা মেম্বার ৮ জন ও পুরুষ মেম্বার প্রার্থী ৩০ জন তারা দিন রাতে চষে বেড়াচ্ছেন নিজ নিজ ওয়ার্ডে ভোট ভিক্ষায়।

উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের ৮৭ জন চেয়ারম্যান প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী, ১২৬ টি সধারণ মেম্বার পদের জন্য ৪ শত ৩০ জন, মহিলা সংরক্ষিত ৪২টি সদস্য পদে ১ শত ২০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন। প্রতিটি ইউনিয়নে মহিলা ভোটারের সংখ্যা পুরুষের তুলনায় বেশী থাকায় প্রার্থীরাও মহিলা ভোটারের দিকে বেশী সময় ব্যয় করছেন। যিনি বেশী মহিলা ভোটারের মন জয় করতে পারবেন বিজয়ের তরী তার দিকে আসবে। তারা দিন রাত্রি চষে বেড়াচ্ছেন নিজস্ব ভঙ্গিমায় নির্বাচনী মাঠে। দম ফেলার সময় নেই। তাই কোন ভাবেই সময় নষ্ট করতে চাইছেন না তারা। গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারের কাছে নিজের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরছেন। আগামী ১৬ জুন উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে এক সঙ্গে ভোট গ্রহণ চলবে। ১ শত ৩২ ভোট কেন্দ্রে ৬ শত ৫২ কক্ষে ভোট গ্রহণ করা হবে। উপজেলা আওয়ামী লীগ কিংবা স্থানীয় সাংসদ প্রতিমন্ত্রী এড. আব্দুল মান্নান খানের সুনিদিষ্ট প্রার্থী বা একক প্রার্থী না দেওয়ায় উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যেই প্রত্যেক ইউনিয়নে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় আওয়ামী শিবিরে পরাজয়ের পরিমানের পাল্লাটা একটু ভারী হওয়ার আশংকা রয়েছে। বিগত নির্বাচনে ২টি ইউনিয়ন কেবল মাত্র আওয়ামী লীগের থাকলে এ বৎসর দলীয় ভাবে প্রার্থী না দেওয়ায় যে যার মতো করে প্রার্থী হওয়া দলীয় সরকারের আমলে কয়টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দখলে আসবে তা দেখার বিষয় হয়ে পড়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে পূর্ব পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের বিশেষ ভূমিকা থাকবে। সেই দিকে মনে হয় তাদের কোন নজর নাই। অপর দিকে বিরোধী দলীয় প্রার্থীরা ধীর গতিতে এগিয়ে চলছেন।

আপনার মতামত দিন