দোহার উপজেলায় একাধিক প্রবাসীকে ‘প্রতারনার ফাদেঁ ফেলে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া’র অভিযোগে দোহার থানা পুলিশ প্রতারক বাবা ও তার যুবতী মেয়েকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেছে। আটককৃতরা হলেন উপজেলার নারিশা ইউনিয়নের উত্তর শিমুলিয়া গ্রামের মৃত. আব্দুল লতিফ খালাসীর ছেলে তোতা খালাসী(৫৮) ও তার মেয়ে সিনথিয়া হোসাইন(২৭) ওরফে তিয়ানা হোসাইন ওরফে ঝিনুক মালা।
পুলিশ সুত্র জানায়, দোহার উপজেলার সৌদী প্রবাসী আবুল কালাম দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে দেশে আসলে প্রতারকচক্র তোতা খালাসী ও তার সুন্দরী মেয়ে ঝিনুক মালা সুকৌশলে কালামকে বাড়ীতে নিয়ে আটক করে এবং মোবাইল ফোনে আপত্তিকর ছবি তোলে। একপর্যায়ে প্রতারক তোতা তার দলবল নিয়ে প্রবাসী কালামকে একটি নিকাহনামায় জোর করে টিপ ও স্বাক্ষর নেয়। একপর্যায়ে কালামের ব্যাগ খুলে নগদ বাইশ হাজার টাকা, পাসপোর্ট, রিটার্ন বিমান টিকেট, জাতীয় পরিচয় পত্র, ব্যাংকের চেক বইসহ অন্যান্য কাগজ পত্র লুটে নেয়। অতঃপর যাবতীয় কাগজপত্র ফেরৎ দেবে বলে ১০০ টাকার নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে টিপ ও স্বাক্ষর নেয় এবং নিকাহনামায় এক কোটি টাকা (!) কাবিনে ও দুইটি চেক পাতায় সিকিউরিটি বাবদ স্বাক্ষর নেয়। অভিযুক্ত তোতা কালামকে ঘটনা প্রকাশ করলে হত্যার হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেন। মুক্ত হয়ে কালাম দোহার থানা পুলিশকে ঘটনা অবহিত করলে কালাম গা ঢাকা দেয়।
পুলিশ আরও জানায় তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য উঠে আসে। ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে প্রবাসী মোবারক হোসেনের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ বাবদ আট লক্ষ টাকা আদায় করেন অভিযুক্ত তোতা খালাসী ও তার সুন্দরী মেয়ে ঝিনুক মালা। এ ঘটনা জানতে পেরে দোহার থানা পুলিশ নড়েচড়ে বসে। পুলিশ আরো জানতে পারে ঝিনুকমালা আশপাশের উপজেলার কয়েকজন প্রবাসীর বিরুদ্ধে দোহার থানায় বিয়ে সংক্রান্ত বিষয়ে একাধিক জিডি করেছেন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিত্বে পুলিশ গত সোমবার দিবাগত গভীররাতে তোতার বাড়ীতে অভিযান চালিয়ে প্রতারক বাবা ও মেয়েকে আটক করে মামলা রুজু করে। মঙ্গলবার সকালে বাবা ও মেয়েকে ৫ দিনের পুলিশি জিঙ্গাসাবাদের আবেদন করে আদালতে সোপর্দ করে। আদালত ১ দিনের জিঙ্গাসাবাদের আবেদন মঞ্জুর করে।
এ বিষয়ে দোহার থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম শেখ বলেন, আটককৃত প্রতারক বাবা মেয়ে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার প্রবাসী পুরূষদের সাথে প্রতারনা করে বিয়ের নাটক সাজিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিল। প্রবাসী কালাম বিষয়টি অবগত করলে আমরা অভিযানে নেমে দীর্ঘদিন পর আটক করতে সমর্থ হই।