দোহার থেকে আটককৃত তিনজন ‘নব্য জেএমবি’র সদস্য: সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব

1893

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) রাতে দোহার থেকে তিনজনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেয়ার খবর আসে। প্রাথমিক অবস্থায় কারা তাদের আটক করেছে তা জানা যায় নি। আজ বুধবার র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এএসপি মিজানুর রহমান জানান মঙ্গলবার রাতে তাদের আটক করা হয়। এবং বুধবার দুপুর ১২টায় কারওয়ানবাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও জানান তিনি।

কাওরান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন র‌্যাব ১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর। সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের ভাষ্য, সারোয়ার-তামিম গ্রুপের জঙ্গি সদস্যরা ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ ও দোহার থানা এলাকায় আত্মগোপনে থেকে পুনরায় সংগঠিত হয়ে নাশকতার মাধ্যমে সংগঠনকে চাঙা করার পরিকল্পনা করছিলেন।

গ্রেপ্তার হওয়া চারজন হলেন দোহার মৌড়া এলাকার আবু বকর বাবুলের দুই ছেলে মিজবাহ (১৯) ও মাহফুজ (১৬)। মিজবাহ নবাবগঞ্জ সোনাহাজরা মাদ্রাসার ছাত্র। মাদ্রাসায় পড়ার ফাঁকে একটি মোবাইল সার্ভিসিং দোকানে মেকানিক হিসেবে কাজ করে। তাঁর ভাই মাহফুজ জয়পাড়া টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া তাইবুর রহমান (১৮) নারিশা সাকিন এলাকার সোহরাব তালুকদারের ছেলে। তিনি মাদ্রাসার ছাত্র। মিজবাহ ও কথিত বড় ভাইয়ের প্ররোচণায় উগ্র ধর্মীয় ভাবাদর্শে উদ্বুদ্ধ হন।

অন্য খবর  দোহার ও নবাবগঞ্জে পল্লী বিদ্যুতের ভোগান্তি

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, গত ২০ মার্চ র‍্যাব রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সারোয়ার-তামিম গ্রুপের দুই ইঞ্জিনিয়ারসহ মোট পাঁচ জঙ্গি সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। ওই জঙ্গিদের কাছ থেকে বিস্ফোরক ও জিহাদি বই উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় বাড্ডা থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি মামলা করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় র‍্যাব-১০ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন ফারুকীর নেতৃত্বে একটি দল দোহার মৌড়া এলাকা থেকে মিজবাহ ও তাঁর ভাই মাহফুজকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কক্ষ থেকে জঙ্গি প্রশিক্ষণ ও যোগাযোগ কাজে ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ এবং বিছানার নিচ থেকে মাহফুজের হাতে তৈরি দেশীয় অস্ত্র ডেগার উদ্ধার করা হয়।

ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে মিজবাহর কাছ থেকে তথ্য নিয়ে জেএমবির আরেক সদস্য তাইবুর রহমানকে গতকাল দোহার নারিশা সাকিন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই তিনজনের দেওয়া তথ্য অনুসারে বুধবার ভোর ছয়টায় কেরানীগঞ্জ থেকে ফয়সাল আহমেদ সানিলকে গ্রেপ্তার করা হয়। ফয়সালের বাড়ি থেকে জঙ্গিবাদী বই উদ্ধার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত ডিআইজি ও র‍্যাব-১০ এর অধিনায়ক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া চারজন জঙ্গি কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের সেলফোন পরীক্ষা করে জেএমবির পলাতক সদস্যদের সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। চারজনই সারোয়ার-তামিম গ্রুপের সদস্য। প্রায় দুই বছর ধরে তাঁরা এক হয়েছেন। দলের সব সদস্যরা ইন্টারনেট পরিচালনা, টেলিগ্রাম আইডি ও ট্রিমা অ্যাপস ব্যবহারে পারদর্শী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ইসলাম অবমাননাকারী বিভিন্ন স্ট্যাটাস ভাইরাল আকারে পোস্ট করে সহানুভূতি ও সমর্থন আদায়ের উদ্দেশে প্রচারণা চালাতেন। ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংগৃহীত আরবি ভাষায় লেখা বিভিন্ন উগ্রবাদী মতাদর্শ বাংলায় অনুবাদ করে ছড়িয়ে দিতেন।

অন্য খবর  আমি করোনায় আতংকিত না হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মুক্তি পেয়েছিঃ নাফিস আহমেদ সুমন

আটক চারজনকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড আবেদন করা হবে বলে জানান তিনি।

পূর্বের খবর: দোহারে আইন শৃংখলা বাহিনীর পরিচয়ে ৩ ছাত্রকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ

সময় টিভি’র খবর
আপনার মতামত দিন