এতিমদের পাশে থাকবে যমুনা গ্রুপ: বললেন সালমা ইসলাম

44
এতিমদের পাশে থাকবে যমুনা গ্রুপ: বললেন সালমা ইসলাম

১৭ ফেব্রুয়ারি রোজ শনিবার যমুনা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত জামিয়া আরাবিয়া নুরুল ইসলাম মাদ্রাসা, মসজিদ ও এতিমখানা কমপ্লেক্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠান উনষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার বিকেল ৬ টা ৩০ মিনিটে কমপ্লেক্সটির উদ্বোধন করা হয়। এই সময় উপস্থিত ছিলেন, যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একটি পারিবারিক গল্পের স্মৃতিচারণ করেন অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম।

এই কমপ্লেক্সটি নির্মাণের পেছনে অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম বলেন, নুরুল ইসলাম বাবুল সাহেবকে একদিন আমি বলেছিলাম, তোমাকে আমি একটা কথা বলতে চাই। জবাবে নুরুল ইসলাম বাবুল সাহেব বলেন, তুমি মাঝে মাঝে আমাকে একটা কথা বলতে চাও, কী কথা বলো? তখন তাকে বলেছিলাম, আমি তোমাকে একটা উপহার দিতে চাই। জবাবে হাসি দিয়ে তিনি বললেন, আমি মানুষকে এত কিছু দেই, সবার জন্য কাজ করি। আর তুমি আমাকে কী উপহার দিবা? জবাবে আমি বলেছিলাম, তোমার দেওয়া বাজারের বরাদ্দ টাকা থেকে কিছু টাকা সঞ্চয় করে জমিয়ে রেখেছিলাম। পরে ওই টাকা দিয়ে উত্তরখানে দিকে একটা সাড়ে ১৪ কাঠা পরিমাণ জায়গা কিনেছি। ওই জায়গা টুকু তোমাকে উপহার দিতে চাই। উনি বললেন, আমার এত সম্পদ থাকার পরেও তুমি এত কষ্ট করে কেন এসব জায়গা কিনতে গেলে? আমি খুশি হতে পারলাম না। কিন্তু জবাবে বলেছিলাম, আমার পরিবারের সদস্যরা সেখানে জায়গা কিনেছে। ওদের অনুরোধে আমিও কিছু অংশ কিনেছি। ভাবলাম; আপনাকে উপহার দিলে খুশি হবেন। তিনি বললেন, তোমার এ কাজে আমি বেশি খুশি হতে পারলাম না। অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম বলেন, এতদিন পরে এসে সেই জায়গায় নুরুল ইসলাম বাবুলের নামে মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা ও পড়ার লেখার সুযোগ তৈরি হওয়ায় সেখানে দাঁড়িয়ে কথা বলছি। আমার অবাক লাগে যে, যেখানে জমি কেনার কোনো প্রয়োজন ছিল না, স্বজনদের অনুরোধের কারনে সেখানে জমি কিনেছি। এখন আবার সেখানে তৈরি করলাম তার নামে মসজিদ ও মাদ্রাসা। কী কুদরত মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালার? তিনি আমাকে দিয়ে এ কাজ সম্পূর্ন করাবেন বলে, এই জমি আমাকে কেনার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। আল্লাহ হয়ত চেয়েছেন। এখানে মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমদের পড়ার সুযোগ হবে। এই বিষয়টি আমি কখনো ভাবতে পারি নি। আল্লাহ চেয়েছেন বলেই আমাকে দিয়ে নুরুল ইসলাম এর জন্য এই কাজ সম্পূর্ন করিয়েছেন।

অন্য খবর  বিএনপি আন্দোলনে হেরে গেছে, নির্বাচনেও হারবে: কাদের

তিনি আরো বলেন, গ্রামের ভেতর এই জায়গাটা কেনার ব্যাপারে আমার রাজি হওয়ার কারণ খুঁজতে গিয়ে আমি অবাক হই। স্বজনদের অনুরোধের কারনে এই জায়গাটি কিনেছি, আবার সেখানে মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানা তৈরি হবে; সেটা ভাবতেও পারি নাই। অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম আরো বলেন, নুরুল ইসলাম বাবুল সাহেব মারা যাওয়ার পর আমার মেয়ে মনিকা ইসলাম একদিন আমাকে বললো। তার বাবার নামে একটা মসজিদ মাদ্রাসা করতে চায়। আর এটা করার জন্য আমাকে আমার মেয়ে তাড়া দিচ্ছিল। জায়গার ব্যবস্থা করতে বলছিল। পরে ওকে উত্তরখানের এই জায়গাটার কথা বলি। ওই সময়ে এই জায়গায় সেমিপাকা ভবন তৈরি করে দিয়েছিলাম। পরে এখানে মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা ও রমজানে ইফতারের আয়োজন করা হয়। সেই থেকে যাত্রা শুরু।

এতিমদের উদ্দেশে অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম বলেন, তোমরা আল্লাহকে পাওয়ার রাস্তায় রয়েছো তোমাদের মা বাবা তোমাদের দিকে তাকিয়ে আছেন।তোমরা সত্য কথা বলবে, সত্য পথে চলবে। তোমাদের এখানে ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষাও দেওয়া হবে। নুরুল ইসলাম বাবুল সাহেব অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান রেখে গেছেন; সেখানেও তোমরা চাকরির সুযোগ পাবে। আশা করি, তোমাদের কাজ পেতে অন্য কোথাও যেতে হবে না। বাবুল সাহেবের রেখে যাওয়া অনেক কলকারখানা ও বিভিন্ন অফিস রয়েছে; সেসব জায়গায় তোমরা কাজ করতে পারবে। এতিমদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, তোমরা নুরুল ইসলাম বাবুলের আত্মার মুক্তির জন্য দোয়া করবে। তোমরা কুরআন পড়বে, ইসলাম শিখবে।

অন্য খবর  টেকনাফের বার্মিজ মার্কেটে আগুন, শতাধিক দোকান পুড়ে ছাই

পাশাপাশি আমার মেয়ে মনিকা ইসলাম এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চেষ্টা করেছে। সেও তোমাদের এখানে আসবে, তোমাদের জন্য কাজ করবে। তোমরা আমার ও আমার পরিবারের জন্যও দোয়া করবে। তোমাদের পাশে যমুনা গ্রুপ সবসময় থাকবে, বলে জনান অ্যাডভোকেট সালমা ছিলাম।

আপনার মতামত দিন