আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের পাহাড়সম বিধিনিষেধের তালিকায় এবার নতুন নিষেধাজ্ঞা যুক্ত হয়েছে। দোকানগুলো থেকে ‘পাতলা, আঁটসাঁট ও ছোট’ পোশাক সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বামিয়ান প্রদেশের ধর্ম ও নৈতিকতাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে নারীদের জন্য পাতলা ও আঁটসাঁট পোশাক আমদানি নিষেধ করা হয়। এ ধরনের পোশাক ‘শরিয়াহ ও আফগানিস্তানের সংস্কৃতির বিরুদ্ধে’ বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম টলো নিউজে বলা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়টি প্রদেশের নাগরিককে পশ্চিমা সংস্কৃতির অনুকরণে আঁটসাঁট, পাতলা ও ছোট পোশাক না পরার নির্দেশ দিয়েছে।
ধর্ম ও নৈতিকতাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রধান মাহমুদুল হাসান মানসুরি বলেন, ‘আমরা ব্যবসায়ী, দোকানদার ও কারিগরদের বলেছি যে আমরা মুসলিম ও আমাদের সমাজ ইসলামি। আপনাদের এমন পোশাক আমদানি করা উচিত, যা আমাদের আফগান সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। যেসব পোশাক আমাদের ইসলামি সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খায় না, তা আমাদের আমদানি করা উচিত না।’
কয়েক দিন আগে আফগানিস্তানে নিয়োজিত জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক রিচার্ড বেনেট তালেবান সরকারকে নারীদের বিরুদ্ধে ‘কঠোর ও নারী বিদ্বেষী নীতি’ থেকে সরে আসতে বলে। তিনি তালেবান সরকারকে নারীদের কর্মক্ষেত্রে ফিরে যাওয়ার ও ব্যবসা করার অনুমতি দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান।
১৩ সেপ্টেম্বর হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের ৫৪তম নিয়মিত আসরে বেনেট বলেন, অন্তর্বর্তী আফগান সরকারের নিষেধাজ্ঞাগুলোর কারণে প্রায় ৬০ হাজার নারী তাঁদের চাকরি হারিয়েছেন।
কিছু কিছু সাংস্কৃতিক কর্মী মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, বামিয়ানে নারীরা আগে থেকেই হিজাব পরছেন।
একজন সাংস্কৃতিক কর্মী জয়নব সাদাত বলেন, ‘আমরা নারীরা সব সময়ই হিজাব পরে এসেছি এবং এটি আমাদের ইসলামিক দায়িত্ব।’
বেশ কয়েকজন দোকানি বলেন, তাঁদের দোকান থেকে পাতলা ও আঁটসাঁট পোশাক সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আলি রেজা নামের এক দোকানি বলেন, ‘কর্মকর্তারা আমাদের ছোট, আঁটসাঁট ও পাতলা কাপড় আমদানি করতে নিষেধ করেছে। আমরা এ সিদ্ধান্তে খুশি হয়েছি। কারণ, আমরা সবাই মুসলিম।’