ঢাকার দোহার উপজেলায় ‘বাবা’ ও ইয়াবা ট্যাবলেটের রমরমা বাণিজ্য চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকার তরুণ ছিঁচকে নেতারা উপজেলার একাধিক গ্রামে প্রকাশ্য এ ‘বাবা’র ব্যবসা করছে।
সম্প্রতি দোহার থানা পুলিশ বেশ কিছু খুচরা মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করলেও এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত মূলহোতারা থেকে যাচ্ছেন আড়ালে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মরণ নেশা ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রি করে ভাল লাভ হওয়ায় স্থানীয় অনেকেই এখন এর মুদি ব্যবসায়ী বনে গেছে। আর পাইকারি ব্যবসায়ীরা নিজেদের আড়াল করতে বেছে নিচ্ছে অভিনব কৌশল। আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিতে প্রতিনিয়ত এ মাদক ব্যবসায়ীরা বেছে নিচ্ছে নিত্য নতুন পন্থা। এ পন্থার মধ্যে রয়েছে কম বয়সী ছেলেদের ব্যবহার করে নির্দিষ্ট কাস্টমারদের কাছে বিক্রি ও এর চালান সরবরাহ করা।
জানা যায়, উপজেলার জয়পাড়া পৌরসভার জয়পাড়া, লটাখোলা, ইউসুফপুর, বানাঘাটা, রাইপাড়া ইউনিয়নের রাইপাড়া, নয়াবাড়ী ইউনিয়নের নয়াবাড়ী, বাহ্রাঘাট, কুসুমহাটি ইউনিয়নের বাস্তা, কার্তিকপুর, মাহমুদপুর ইউনিয়নের মাহমুদপুর, হরিচন্ডি, মৈনটঘাট, বিলাশপুর ইউনিয়নের বিলাশপুর, বটিয়া, রাধানগর, সুতারপাড়া ইউনিয়নের হলের বাজার, মধুরচর, নারিশা ইউনিয়নের নারিশা, পশ্চিম চর, মেঘুলা, মুকসেদপুর ইউনিয়নের মুকসেদপুর, শাইনপুকুরসহ বেশ কিছু এলাকায় রয়েছে এ মাদকের জমজমাট ব্যবসা। ক্রেতা সংখ্যা দিন দিন
বেড়ে যাওয়ায় এ মাদক বিক্রেতার সংখ্যাও বাড়ছে উল্লেখযোগ্য হারে।
‘বাবা’ অর্থাৎ ইয়াবা ক্রেতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, বখাটে যুবকসহ কম বয়সী স্কুলপড়ুয়া কিশোর। এ শ্রেণীর কিশোরদের মধ্যে অনেকে এ ট্যাবলেট বিক্রি করে যে লাভ হয়, তার সমান মূল্যের কয়েক পিস ইয়াবা ট্যাবলেট নিয়ে যায় নিজের জন্য। আবার অনেকেই নিজের হাত খরচ ও নির্দিষ্ট লাভের আশায় প্রতিদিন বিক্রি করছে কয়েক ডজন ইয়াবা। আবার অনেকটা লোভে পড়েও এ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে অনেকে। তার মধ্যে ১০-১২ বছরের কিশোরও রয়েছে বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জয়পাড়া এলাকার এক বাসিন্দা। তিনি আরও জানান, এলাকার তরুণ যবুকদের মধ্যে কয়েকজন এ ব্যবসা করছে। আর তাদের সহজ হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে অল্প বয়সী কিশোর। দিন দিন এ মাদকের করাল গ্রাসে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে এলাকার তরুণ যুবসমাজ।
মধ্য রাইপাড়ার আবদুস সালাম অভিযোগ করে বলেন, ‘স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু নেতাদের কারণে এ এলাকায় মাদকের বিস্তার ভয়াবহ হারে বেড়েই চলছে।’ সংশ্লিষ্ট অভিভাবকদের উদাসীনতাই কেউ কেউ এ অঞ্চলে ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদক বিস্তারে মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন।
দোহার থানার ওসি মাহমুদুল হক বলেন, ‘মাদকের সঙ্গে কোন আপস নেই। ইয়াবা বা মাদক ব্যবসায়ীদের কোন ছাড় দেয়া হবে না। মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’ এলাকাবাসীর দাবি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেন দ্রুত এসব স্থানীয় ইয়াবা ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার করে তরুণ সমাজকে মাদকের থাবা থেকে রক্ষার্থে যথাযথ ভূমিকা পালন করে।