ঢাকা দোহার উপজেলার বিলাশপুরের হাজারবিঘা গ্রামে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ১ বছর পূর্ণ হয়েছে। গত বছর ৬ জানুয়ারি এই দিন সকালে পরাজিত প্রার্থী সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান খানের নৌকা সমর্থকরা বিজয়ী প্রার্থী জাতীয় পার্টির লাঙ্গল সমর্থকদের উপর হামলা চালায়। এতে ৩ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়। আহতদের অনেকেই এখনো সুস্থ জীবনে ফিরতে পারেনি।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানায়, গত বছরের ৬ জানুয়ারি সকালে মান্নান খাানের সমর্থক বিলাশপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হুকুম আলী চোকদার ও তার লোকজন নিবার্চনে পরাজয়ের গ্লানি সইতে না পেরে হাজারবিঘা গ্রামে অতর্কিত হামলা চালায়।
এতে দোহার উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বিলাশপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মোল্লার অনুসারি জাতীয় পার্টির অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামের সমর্থক মোকসেদ ওরফে মোছা খন্দকার তার ছেলে মাসুদ খন্দকার ও দোহার উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহ-সভাপতি মকবুল হোসেন ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে আজও মৃত্যুর প্রহর গুনছে অনেকে।
গত ৫ জানুয়ারি সোমবার বিকালে সরেজমিনে দোহারের হাজারবিঘা গিয়ে দেখা যায়, মৃত্যু বার্ষিকীর মাত্র একদিন আগে তাদের কারো মুখে কথা নেই। স্বজন হারানোর বেদনায় কাতর অনেককেই অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকিয়ে থাকতে দেখা যায়। তাদের দাবি স্বামী সন্তান হারালেও তাদের ন্যায় বিচারটুকু এখন শেষ ভরসা।
এদিকে, মামলাটি ডিবি’র তদন্ত শেষে গত বছরের ৯ মার্চ আদালতে চুড়ান্ত অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এবি সিদ্দিক। তবে মামলার বাদী মোছা খন্দকারের বড় ছেলে মোতালেব খন্দকার ঘটনাটি জানতে পারেন ২০ মার্চ। মামলার অভিযোগপত্র দায়েরের সময় বাদ দেয়া হয় সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান খানের ছোট ভাই ও দোহার উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোতালেব খান, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আলমাছ উদ্দিনসহ ৬ জনকে। মামলাটি এখন আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
তবে স্বজনহারা পরিবার ও বাদীর আশংকা তারা ন্যায় বিচার পাবেন কি না।মামলার বাদী মোতালেব খন্দকার বলেন, তিনি তার বাবা ও ভাইয়ের হত্যাকারীদের শাস্তি চান। তবে প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে তার পরিবার ন্যায় বিচার পাবেন কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।
নিহত মকবুল হোসেনের স্ত্রী শারমিন আক্তার বলেন, ২টি শিশু সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সাংসদ সালমা ইসলাম তাদেরকে যে টাকা দিয়েছিলেন তা দিয়েই কিছুদিন চলেছেন। এরপর থেকে নাবালক দুই সন্তান নিয়ে কষ্টেই দিন কাটছে তাঁর পরিবারের।
হামলায় গুরুতর আহত শাহ আলম খন্দকার এখনো পঙ্গু জীবন কাটছে। তিনি আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, আল্লাহ যদি আমাদের সহায় হয়। ‘জুলুমকারিদের বিচার যেন আল্লাহ করেন’।