২০১৭ সালে হঠাৎ প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের পাঠ্যবই থেকে কিছু গল্প, কবিতা বাদ দেওয়ায় দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ওঠে,বাদ পড়া গল্প কবিতা আবারও ফিরিয়ে আনার। কিন্তু কয়েকটি শ্রেণির কয়েকটি বিষয় সুখপাঠ্য করা ছাড়া চলতি বছর পাঠ্যবইয়ে যুক্ত হয়নি বাদ পড়া গল্প-কবিতা। তবে নতুন পাঠ্যক্রমে প্রণয়নে সরকারের আগ্রহ থাকলেও নির্বাচনি বছর হওয়ায় এ বছর কাজ করা সম্ভব হয়নি সংশ্লিষ্টদের। ফলে আগামী বছর (২০১৯) নতুন পাঠ্যক্রম প্রণয়ন এবং ২০২০ সালে ওই পাঠ্যক্রম অনুযায়ী পাঠ্যবই ছাপানো হবে বলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়,হেফাজতের দাবিতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের পাঠ্যবই থেকে বাদ দেওয়া হয় প্রগতিশীল লেখকদের লেখা গল্প-কবিতা। এসব লেখা বাদ পড়ার কারণে শিক্ষাবিদসহ বিভিন্ন মহল থেকে শুরু হয় সমালোচনা। তোপের মুখে পড়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পাঠ্যবই পর্যালোচনা ও সুখপাঠ্য করতে দুটি পৃথক কমিটি গঠন করে। পাঠ্যবই পর্যালোচনা করে বাদ পড়া গল্প-কবিতা আবার ফিরিয়ে আনাসহ পাঠ্যবইয়ের নানান অসঙ্গতি দূর করার জন্য ওই কমিটি বেশ কয়েকটি সুপারিশ দেয়। অন্যদিকে, ওই কমিটি বেশ কয়েকটি বই সুখপাঠ্য করে। সুখপাঠ্য করার পর সে বই ছেপে চলতি বছরের শুরুতেই পৌঁছে দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের হাতে। অথচ বাদ পড়া গল্প কবিতা আর ফিরে আসেনি।
তবে শিক্ষামন্ত্রণালয় ও এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে,পাঠ্যবই সংক্রান্ত জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) গত ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত এক সভায় ২০২০ সালে মাদ্রাসাসহ সব পাঠ্যবইয়ের নতুন পাঠ্যক্রম (কারিকুলাম) প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হয়। শিক্ষাবিদদের দেওয়া সুপারিশ অনুযায়ী আগামী বছর পাঠ্যক্রম পরিবর্তন এবং সে অনুযায়ী ২০২০ সালে পাঠ্যবইয়ের একটি বিরাট অংশ পরিবর্তন-পরিমার্জন করা হবে। চলতি বছর থেকে পাঠ্যবইয়ে হাত দেওয়ার কথা থাকলেও নির্বাচনের বছর হওয়ায় এত বড় কর্মযজ্ঞ হাতে নিতে চায়নি সরকার। কারণ,এত বড় কর্মযজ্ঞ হাতে নিলে সঠিক সময়ে বই ছাপার কাজ শেষ করতে না পারাসহ যে কোনও ধরনের ভুল হলে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে। তাছাড়া বছরটির শেষ দিকে সরকার নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। ফলে আগে ভাগে বই ছাপার কাজ শেষ করে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছানোর তাড়া রয়েছে এনসিটিবির।
জানতে চাইলে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ন চন্দ্র সাহা বলেন, ‘২০১৯ সালে পাঠ্যক্রম সংশোধনে হাত দেওয়া হবে। শিক্ষাবিদদের বেশ কিছু সুপারিশ রয়েছে। এছাড়া বই সংখ্যা কমিয়ে আনার বিষয়েও কিছু সুপারিশ রয়েছে। সেসবই আলোচনা পর্যালোচনা করে ২০২০ সাল থেকে পাঠ্যবই পরিবর্তন ও পরিমার্জন করা হতে পারে।’