পদ্মার কড়াল গ্রাসে বিলীন হয়ে গেছে শত বছরের ঐতিহ্য বাহী অরঙ্গাবাদ ও চাড়াখালী গ্রাম। গত চার বছরের টানা ভাঙ্গনে দোহারের বুক থেকে পদ্মায় মিশে গেছে এই দুই গ্রামের নাম। গৃহহীন হয়েছে এই দুই গ্রামের প্রায় এক হাজার পরিবার। প্রায় কয়েক কোটি টাকার সম্পদ চলে গেছে পদ্মা নদীর গর্ভে।
দোহার উপজেলার অন্যতম প্রসিদ্ধ দুটি গ্রামের নাম হলো অরঙ্গাবাদ ও চাড়াখালী। অরঙ্গাবাদের কালীপুজোর বলীর মেলা ও চাড়াখালী গ্রামের মেলার কথা জানতেন না দোহার-নবাবগঞ্জ উপজেলার এমন কোন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাছাড়া বাংলা ভাদ্রমাসের শেষ বৃহস্পতিবার অরঙ্গাবাদের শরীফ বাড়ির ভেড়া ভাষানোকে কেন্দ্র করে জমে উঠতে বিরাট মেলা।
এলাকার প্রবীন লোকদের কাছে পূর্বে অরঙ্গাবাদের বাবুর বাড়ী ভাঙ্গনের গল্প শোনা যেত। শোনা যেত বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন কৃতি সন্তানের বসতবাড়ী আজিমনগর গ্রামের কথা। আর এই প্রজন্মের কাছে পরবর্তী প্রজন্ম শুনবে যে অরঙ্গাবাদের শরীফ বাড়ির মেলার কথা। শুনবে পাঠাবলীর মেলার কথা।
কিন্তু সবই আজ চলে গেছে ইতিহাসের পাতায়। এখন নেই অরঙ্গাবাদের সেই কালীপুজোর পাঠা বলির মেলা। এই বারের ভাঙ্গনে পাঠাবলীর স্থান সহ কালীমন্দিরের পুরোটাই চলে গেছে নদীগর্ভে।
অরঙ্গাবাদের শরীফ বাড়ী ভেঙ্গেছে সেই ২০০৮ সালেই। আর এবারের ভাঙ্গনে চাড়াখালী গ্রামের পুরোটাই চলে গেছে নদী গর্ভে। সেই সাথে নিয়ে গেছে গ্রামের একমাত্র বাজার। যেই মাঠে মিলতো মেলা, সেটাও আজ নদী গর্ভে। এভাবেই পদ্মা নদী একে একে গ্রাস করে নিচ্ছে দোহার-নবাবগঞ্জ উপজেলার নদীবর্তী এলাকার ঐতিহ্যবাহী স্থান সমুহ। এখন সামনে আছে নুরুউল্লাহপুরের ফকির বাড়ি। তাও কি রক্ষা করতে পারবে না সরকার পদ্মার হাত থেকে!