উপজেলা এবং পৌর ছাত্রলীগ কমিটি বিলুপ্তি করন কি যৌক্তিক?

797
দোহার ছাত্রলীগ

কেউ যদি আমাকে প্রশ্ন করে দোহার উপজেলা এবং পৌর ছাত্রলীগ কমিটি বিলুপ্তি করন কি যৌক্তিক? তবে আমি নির্দিধায় উত্তর দিবো “হ্যা” যৌক্তিক । উত্তরটা শুনার পরে যারা আন্দোলনের পক্ষে তারা হয়ত সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলবে আমি সালমান এফ রহমান কে সমর্থন করি। আসলে বিষয়টা তা না। আমি বিলুপ্তিকে সমর্থন করি ছাত্রলীগের সাংগাঠনিক কাঠামো এবং তাদের ব্যর্থতার জন্য।

দোহার উপজেলা কমিটির সভাপতি হাবিবুর রহমান আমার বন্ধু এবং সাধারন সম্পাদক রাজিব শরিফ ছোট ভাই। হাবিবের প্রাতিষ্ঠানিক ইয়ার এবং বয়স সম্পর্কে অবশ্যই আমি জানি তাই নিয়মিত ছাত্র হওয়ার বাধ্যবাধকতা এবং ছাত্র রাজনিতির বয়স কোনটিই হাবিবের নাই। রাজিবেরও একই অবস্থা। একটা সময় আমার আগ্রহ ছিলো রাজিবের প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতার বিষয়টা সম্পর্কে জানার কিন্তু সেটা সম্পর্কে ক্লিয়ার হতে পারিনি। রাজিব এবং হাবিব বিবাহিত। বিবাহত হলে অটোমেটিক ভাবেই সে ছাত্রলীগার না। সম্ভবত ২০১৩ সালে তারা নেতৃত্বে আসে। এই দীর্ঘ সময়ে তারা পারেনি দোহার উপজেলা ছাত্রলীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি করতে। ঢাকা জেলা কমিটি ডিক্লেয়ার হওয়ার আগে কৌশলগত কারনে তারা দোহার উপজেলা ছাত্রলীগের একটি পূর্নাঙ্গ কমেটি উপহার দেয়। সেই কমিটিও ছিলো বিতর্কিত। ৭ বছরের কন্যা সন্তানের বাবা, যে ছেলে কোনদিন বিদ্যালয়ের বারান্দায় যায়নি, চিহ্নিত বিএনপি পরিবারের ছেলে, বিদেশ ফেরতদেরকেও ছাত্রলীগের কমিটিতে নেওয়া হয় কিন্তু অনেক ত্যাগী এবং পরিক্ষিত ছাত্রনেতারা ছাত্রলীগের সদস্য পদও পায়নি। দীর্ঘ পাঁচ বছরে তারা দোহার উপজেলার ইউনিয়ন কমিটির স্ট্রাকচার দাড় করাতে পারেনি। সেই ঢাকা জেলা সম্মেলনের আগে ঘরে বসে এবং বর্তমান জেলা কমিটি কতৃক দোহার উপজেলা কমেটিকে বিলুপ্ত করার পরে এক রাতেই ব্যাক ডেটে কয়েকটি ইউনিয়ন কমিটি ঘোষনা করা হয়। যা সাংগাঠনিক নিয়মে জালিয়াতির মাঝে পরে। প্রশ্নটা হলো “দোহার উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি কেন করা হয়েছিলো? ”ছাত্রলীগের নেতৃত্ব হিসেবে তাদের স্বার্থকতা খুঁজে পাওয়াটা অনেক কষ্টকর। তাছাড়া সভাপতি হাবিব তার আইন ব্যবসায় এতটাই ব্যস্ত ছিলো যে ছাত্রলীগের তৎপরতা তো দূরের কথা জাতীয় দিবসগুলোতেও তাকে দেখা যাইতো না। এখন প্রশ্ন হইলো “ছাত্রলীগের কোন স্বার্থকতার জন্য কমিটি বিলুপ্ত করা ‌অযৌক্তিক?”

অন্য খবর  নবীন চেতনা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শিক্ষা উপকরন বিতরণ

ছোট ভাই, জয়পাড়া কলেজ ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আওলাদ হোসেন রিয়াদ তার ফেসবুক স্টাটাসে বলেছে—২৪ ঘন্টার মাঝে যদি বিলুপ্তি প্রত্যাহার না করা হয় তাহলে কঠিন কর্মসূচি দেওয়া হবে। ভাই, তোমার হুঙ্কারটা শুধুই অযৌক্তিক না, সাংগাঠনিক ভাবেও অগ্রহনযোগ্য। যা অনাকাঙ্খিতও তোমার কাছ থেকে কারন একজন সাধারন সম্পাদক তো নূন্যতম হলেও ছাত্রলীগ করার নিয়মগুলা জানে। গতকালের প্রতিবাদে/স্লোগানে যদি রাজিব এবং হাবিব বলে থাকে “বিলুপ্তি মানি না, সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে তাহলে তাদের জন্য পরামর্শ আয়নার সামনে যাইয়া ঠান্ডা মাথায় এক বার চিন্তা করে দেখো ঢাকা জেলার সিদ্ধান্ত কতটা যৌক্তিক “।

অনেকের মতামতে একটা বিষয় বার বার আসছে “সাবেকদের সম্মানের সহিত বিদায় দেওয়া উচিত”। কথাটা ১০০% সত্য। আসলেই এটা হওয়া উচিত। জননেতা মান্নান খান, মাহাবুবুর রহমান যে যখন সুযোগ পেয়েছে সংগঠনকে তার মতই সাজিয়েছে। আজকে উপজেলা চেয়ারম্যান সুযোগ পেয়েছে সেও তারমত সাজানোর চেষ্টা করছে কারন আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবকরা অনিয়মকেই নিয়ম বলে চালিয়েছে। আমরাও সেই অনিয়মেই আজ অভ্যস্ত। তাই যারা আজকের এই দোষ শুধু উপজেলা চেয়ারম্যানের ঘাড়ে চাপাইতে ব্যস্ত তাদেরকে বলছি অতীতে নিজেরা কি করেছেন তা একটু স্মরন করে দেখেন। ভবিষতে সুযোগ পেলে আবার এমনটিই করবেন। আপনার নৈতিক অবস্থান নাই আজকে প্রতিবাদী হওয়ার কারন এমন অন্যায় আপনাদের দ্বারাও সংগঠিত হয়েছিলো। দোহার উপজেলার রাজনীতিতে কবে, কখন, কোন নেতা সাবেকদের সম্মানের সহিত বিদায় দিয়েছে? আজকে তখন অবাক হই যখন দেখি রাজনৈতিক ঈমানদারদের যারা নিজের হাতেই বারবার দাড়াইয়া প্রশ্রাব করেছে। যাহোক এসব নিয়ে এত বলার কিছু নাই,এসব বাস্তবতা আসলেই সবাই জানে কিন্তু বলবে না কারন স্বার্থের বাহিরে কথা বলাটা সহজে হয়ে উঠেনা।

অন্য খবর  নারিশা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সম্মেলনে ব্যানার নিয়ে বিভ্রান্তি

এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে যদি সহিংসতা ছড়ায় তাহলে লাভটা কার হবে? মান্নান খান সাহেবই বেশি লুজার হবে কারন সে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, রাজনীতি তার নেশা ও পেশা—-যেকোন পরিস্থিতিতে সে শেখ হাসিনার পাশে দাড়াবে তাই দীর্ঘ মেয়াদী রাজনৈতিক বাস্তবতায় বিশ্বাস ঘাতকের জন্য সুবিধা জনক রাস্তা তৈরি হয়ে যাবে কারন সালমান সাহেব রাজনৈতিক নেতা নন। সংগঠন যার হাতেই থাকুক তারা বাধ্য নৌকার পক্ষে কাজ করতে…………

উপজেলা এবং পৌর ছাত্রলীগ কমিটি বিলুপ্তি করন কি যৌক্তিক?

আপনার মতামত দিন