দোহার উপজেলায় হারবাল চিকিৎসার নামে চলছে অপচিকিৎসা। সরকারি নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে হারবাল প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠান নিয়মনীতি উপেক্ষা করে অশ্লীল ভাষায় পত্রপত্রিকা, ডিশ চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার করে ব্যবসা জোরদার করছে। মানুষের অজ্ঞতাকে পুজি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। প্রতিষ্ঠানগুলোর বিজ্ঞাপনে বলা হয়, ১০০% গ্যারান্টি, নিশ্চিত ফলাফল। আর এতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে রোগীরা।
দোহারে প্রায় ১৫-২০টি হারবাল, ইউনানি, কবিরাজি-দাওয়াখানার চিকিৎসার নামে এ রকম ভূঁইফোঁড় প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। প্রতিষ্ঠানগুলো যৌন সমস্যা, অর্শ্বগেজ, জন্ডিস, লিভারের সমস্যা, ডায়াবেটিস, আলসার, মুখের কালো দাগ, ব্রেস্ট ছোট বড়, চিকন ও মোটা স্বাস্থ্য করা, অনিদ্রা, কাশি, হাঁপানি, অ্যাজমা, পাইলস অজীর্ণ, পেট ফাঁপা, একজিমা, গ্যাস্ট্রিক ও চুল উঠে যাওয়া রোগের চিকিৎসার শতভাগ গ্যারান্টি দেয়ার কথা দেয়ার কথা বলে উপজেলা তিনটির ডিশ চ্যানেল ও পোস্টার লাগানোসহ বিভিন্ন কায়দায় বিজ্ঞাপন প্রচার করে প্রলুব্ধ করছে সাধারণ রোগীদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দোহার উপজেলার প্রাণকেন্দ্র জয়পাড়ায় উপজেলা ও থানা প্রশাসনের নাকের ডগায় চলে হারবাল নামে প্রায় ৭-৮টি হারবাল নামে আজগুবি প্রতিষ্ঠান।
শিমুলিয়া গ্রামের চিকিৎসা নিতে আসা গৃহবধূ হাসিনা বেগম জানান চিকিৎসার নামে তার কাছ থেকে হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে হারবাল চিকিৎসক
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আবদুল্লাহ দাওয়াখানার কথিত হাকিম মো. শফিকুল ইসলাম প্রথমে কার্তিকপুরে একটি দাওয়াখানা দিয়েছিলেন। সেখানে খুব বেশি সুবিধা করতে না পেরে পরে উপজেলার জয়পাড়া থানার মোড়ের বেগম আয়েশা মার্কেটের নিচতলায় তা স্থানান্তর করেন। এরপর সেখানেও রোগীপত্র না পাওয়ায় আবার তা স্থানান্তর করে চলে আসেন জয়পাড়া সরকারি হাসপাতাল রোডের কৃষি ব্যাংকের নিচে। সেখান থেকে খুচরা বিক্রয়সহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফার্মেসিতে গিয়ে তিনি এসব বেনামি কোম্পানির দাওয়াই পাইকারি সরবরাহ করেন।
উপজেলার হাইস্কুল মার্কেটের দোতলায় অবস্থিত বাংলাদেশ হারবাল মেডিকেলের বিরুদ্ধে রয়েছে হাজারও অভিযোগ। এ প্রতিষ্ঠানটি আগে ছিল কলকাতা হারবাল নামে। পরে বেকায়দায় পরে এর নাম পরির্বতন করে রাখা হয় বাংলাদেশ হারবাল মেডিকেল। প্র
তিষ্ঠানটির মালিক বরিশালের মেহিন্দীগঞ্জের জাকির হোসেন (৬৫)। প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার দায়িত্বে থাকেন তার ছেলে সুজন। দীর্ঘদিন দোহার উপজেলায় এ হারবাল প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় রোগীদের অপচিকিৎসা দিয়ে বেশ লাভবান হওয়ায় পরে নবাবগঞ্জ উপজেলায়ও একটি হারবাল প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন। তবে কিছুদিন পরে বেশ কয়েকজন রোগী ঐ হারবাল চেম্বার থেকে প্রতারণার শিকার হয়ে প্রতিবাদ করায় তা বন্ধ করে দেয় স্থানীয় জনসাধারণ ও ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, আটা-ময়দার গোলা ও ক্ষতিকারক কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি করা কথিত ওষুধ প্লাস্টিক ও কাঁচের বোতলে ভরে লাখ লাখ হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে।
স্থানীয় ডিশ চ্যানেলে প্রতি মাসে ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ করে মিথ্যা বিজ্ঞাপন প্রচার করে সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলা হয়।