৪ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে সারা দেশে তুমুল আগ্রহ জন্মালেও এই নির্বাচন নিয়ে কোন উত্তাপ নেই দোহার পৌরবাসীর। দীর্ঘ ১৩ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচন আদালতের রায়ে স্থগীত হওয়ার কারনে হতাশ দোহার পৌরবাসী।
২০০০ সালে পৌরসভায় উন্নত হবার পর দোহার পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০০১ সালে। ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দিপনার মাঝে অনুষ্ঠিত হওয়া নির্বাচনে প্রথম বারের মত পৌর পিতা নির্বাচিত হন আব্দুর রহিম। তারপর বিভিন্ন আইনি জটিলতার কারনে দীর্ঘ ১২ বছর কোন নির্বাচন হয় নি দোহার পৌরসভায়। অভিযোগ আছে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া শীল মহল নির্বাচন স্থগীত করে আরো বেশি সময় ধরে পৌরসভার ক্ষমতা নিজের হাতে কুক্ষিগত করে রাখতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে বাধা দেয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে তফসীল হয়ে যাওয়া নির্বাচন স্থগীত করে উচ্চ আদালত। পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে দোহার পৌরসভার নেতৃত্বে যে পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিল এক কথায় মুখ থুবড়ে পরেছে।
পৌরসভা পরিনত হবার বিগত ১৩ বছরে পৌরসভার নাগরিকদের উপর ট্যাক্সের বোঝা বারানো ছাড়া দৃশ্যত কোন উন্নয়ন কাজ হয়নি দোহার পৌরসভায়। বরং ট্যাক্সের পর ট্যাক্সের বোঝা ঘাড়ে চেপেছে দোহার পৌরবাসীর। ট্যাক্স পরিশোধ না করার জন্য অনেক পৌর নাগরিকের মালামাল ক্রোক করা হলেও মনোনায়ন কিনতে যাবার পর দেখা যায় পৌর মেয়র নিজেই ১৩ বছর কোন ট্যাক্স দেন নি। মনোনায়ন বাতিল হবার পর ১৩ বছরের ট্যাক্স ১ ঘন্টায় জমা দিয়ে এসে মনোনায়ন কিনেন বর্তমান পৌর মেয়র। তাতেও শেষ রক্ষা হয় নি। পৌর মনোনায়ন বাতিল হয় বর্তমান পৌর মেয়রের।
দীর্ঘ ১৩ বছরে পৌর এলাকায় রাস্তায় লাগানো বাতিই ছিল পৌরসভার অন্যতম দৃশ্যমান কাজ। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই অনেক এলাকার রাস্তার বাতি নষ্ট হয়ে গেছে। পরিপূর্ন রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে বেশির ভাগ বাতিই আজ নষ্টের পথে।
প্রতিটি পৌরসভায় খাবার পানি সরবরাহের বাধ্যবাধকতা থাকলেও ১২ বছরেও এখানে গড়ে উঠেনি খাবার পানি সরবরাহের ব্যবস্থা। বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ হবার কথা থাকলেও জয়পাড়া বাজারের ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন ছাড়া হয়নি সেরকম বড় কোন উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড।
জয়পাড়া পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের বিলের পাড় গ্রামে হাটাচলার মত কোন রাস্তাও করে নি দোহার পৌরসভা। যদিও ঐ অঞ্চলটা পৌরসভার অন্যতম ঘনবসতী পূর্ন একটা এলাকা। এখনও বৃষ্টি হলে চলাচল করা যায় নি এই রাস্তা।
জয়পাড়া বাজার রাস্তা নিয়ে অনেক লেখালেখি হওয়ার পর জয়পাড়া বাজার রাস্তার কাজ শুরু হয়। কিন্তু অদৃশ্য কোন ইশারায় বিশ্বব্যাংকের অনুদানের দুই কিলোমিটার রাস্তার কাজ ৫০ মিটারেই শেষ হয়ে যায়।
এই সব সমস্যা সমাধানে পৌর সভার পক্ষ থেকে নেই কোন সমাধান। জনকল্যান মূলক কাজে দোহার পৌরসভার অংশগ্রহন খুবই কম।
তাই চার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন প্রভাব ফেলতে পারে নি এই উপজেলায়। স্থবীর হয়ে থাকা উন্নয়ন অতিশীঘ্রই দ্রুত চালু করার জন্য নেতৃত্বের পরিবর্তন ছাড়া কোন উপায় নেই বরে মনে করেন পৌরবাসী।
দোহার পৌরবাসী আশা করে দেশ ব্যাপী নির্বাচনী যে হাওয়া বইছে সেই সুবাদে অতি দ্রুত দোহার পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।