ঢাকা-নবাবগঞ্জ সড়ক ডাকাতের দখলে!

528

রাজধানীর পাশেই নবাবগঞ্জ উপজেলা। গুলিস্তান থেকে দূরত্ব মাত্র ৩২ কিমি.। প্রতিদিনই শত শত যাত্রী ঢাকা যাতায়াত করছে। ব্যবসা, বাণিজ্য, চাকরি, অফিস-আদালতের পাশাপাশি অনেক শিক্ষার্থীও এ পথে যাতায়াত করে। কোনো নৈশকোচ বা বাস না থাকলেও ২৪ ঘণ্টাই যান চলাচল রয়েছে, তবে হাইওয়ে পুলিশ নেই। নেই কোনো পুলিশ চেকপোস্ট। এ অবস্থায় ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রতিনিয়তই এ সড়কে ডাকাতের কবলে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছে যাত্রী সাধারণ। এক কথায় বলা যায়, ডাকাতের দখলেই রয়েছে এ সড়ক।

স্থানীয় ও ভুক্তভোগীরা জানান, সন্ধ্যা থেকে সারা রাতেই ডাকাতের ভয়ে মানুষকে সতর্ক থাকতে হয়। এ সড়কপথে রাতে কেউ জরুরি প্রয়োজনে ঢাকা যেতে চাইলেও ডাকাত আতংক তার সব প্রয়োজনকে থমকে দেয়। গত রোববার সন্ধ্যার পর ঢাকা থেকে ফিরছিলেন নবাবগঞ্জ থানার ওসি। মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান পয়েন্টের মরিচায় সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতির প্রস্তুতি দেখে তিনি আঁতকে উঠেন। তিনি কোনো রকমে রেহাই পেলেও অনেকেই সর্বস্ব হারিয়েছেন ডাকাতের হাতে। 

বলমন্তর চরের টিটু জানান, সম্প্রতি তার এক আত্মীয়ের লাশ নিয়ে ফেরার পথে তার ডাকাতের কবলে পড়েন। ২শ গজ দূরেই পুলিশের গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখছেন। এ সময় কয়েকজনকে কুপিয়ে আহতও করা হয়। কিন্তু নির্বিকার পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয় নি।

অন্য খবর  দোহার-নবাবগঞ্জে গির্জা ও বাড়িতে সাজ সাজ রব

নবাবগঞ্জ উপজেলার টিকরপুর থেকে তুলসীখালি সেতু পর্যন্ত দুর্গম এলাকায় ডাকাতরা সুযোগ বুঝেই হানা দেয়। এছাড়া কেরানীগঞ্জের শাক্তা ও কোনাখোলা সড়কেও একই অবস্থা। ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন বলেন, তাদের সামনেই শাক্তা এলাকায় ডাকাতরা গাড়ি থামিয়ে লুটে নেয় মালামাল। অসহায় দৃষ্টিতে দেখা ছাড়া কোনো উপায় নেই। প্রতিরোধ করতে গেলেই জীবনের হুমকি।

কয়েক বছর আগে এ সড়কের বেনুখালী এলাকায় নবাবগঞ্জ থানার তৎকালীন ওসি নাসির চৌধুরীর মোবাইল ও ওয়ারলেস সেট ছিনিয়ে নেয় ডাকাতরা। এ সড়কের টিকরপুর চক, বেনুখালী, খারসুর ও মরিচায় নির্মিত সেতুর ঢালে এপ্রোচের নিচে বসেই ডাকাতির পরিকল্পনা হয় এমন দাবি এলাকাবাসীর। নবাবগঞ্জ অংশে রাতে পুলিশি টহল থাকলেও ডাকাতি সংঘটিত হওয়ার সময় তাদের সারা পাওয়া যায় না বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ রয়েছে।

এ সড়কের দুপাশে জঙ্গল আর একটু দূরেই বিশাল বিল এলাকা। ডাকাতি সংঘটিত করেই নিরাপদে চলে যায় ডাকাতদল। থানা পুলিশের কাছে মৌখিক অভিযোগ থাকলেও এসব ঘটনার অধিকাংশেরই মামলা রেকর্ড নেই। ফলে দায় এড়াতে সুযোগ পাচ্ছে নবাবগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ ও সিরাজদিখান থানার কর্মকর্তারা।

নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কমর্ককর্তা সাইদুর রহমান বলেন, তার অংশে নিয়মিত পুলিশি টহল থাকে।

অন্য খবর  গাবতলী হাটের সেরা দোহারের টাইগারঃ মূল্য ৩ লাখ টাকা

এদিকে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য সিরাজদিখান থানার ওসি ইয়ারদোস হাসানের। তিনি বলেন, তার থানা এলাকায় এক সময় ডাকাতি হতো। এখন হয় না। এটা নবাবগঞ্জ ও কেরানীগঞ্জ অংশে হতে পারে। তবে তিনি পুলিশি টহল জোরদার করবেন বলে জানান।

আপনার মতামত দিন