ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার বাশতলা-মৈনট সড়কে সংষ্কার কাজে অবহেলা ও যাত্রী দুর্ভোগ এলাকাবাসীর জন্য যেন নিয়তি হয়ে দাড়িয়েছে। গত বছর কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ ছাপা হলে হইচই পড়ে যায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাদের মাঝে। সংবাদটি পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি গোচর হলে ওই বছরের ৭ মার্চ তিনি ঝটিকা পরিদর্শনে যান এই সড়কে। কিন্তু সওজের কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের গাফলিতির কারণে বিগত ১০ মাসেও দোহারের বাঁশতলা থেকে মৈনট ফেরীঘাট পর্যন্ত ৭কি:মি: রাস্তার গর্ত ও খানাখন্দ আজও দৃশ্যমান।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানায়, চলতি অর্থ বছরে রাস্তাটি সংস্কারের জন্য প্রায় কোটি টাকা বরাদ্ধ হয়। দরপত্র প্রক্রিয়াও শেষ হয়েছে। এম আর কনস্ট্রাকশন নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি কাজ পেয়েছে। কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। যে কোনো সময় কাজ শুরু হবে।
এলাকাবাসী জানায়, সেতু মন্ত্রীর আকস্মিক পরির্দশনে দোহার নবাবগঞ্জের সাধারণ মানুষের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছিলো। কিন্তু সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলীদের অবহেলার কারণে এলাকাবাসীকে সেই আগের দুর্ভোগেই রাস্তায় চলতে হচ্ছে। দোহারের এ সড়কে দিয়ে শুধু দোহার নবাবগঞ্জবাসীই নয়। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ফরিদপুর, রাজবাড়ী , মাগুরা শরিয়তপুরের অনেক মানুষ সহজ পথে রাজধানী ঢাকা পৌঁছতে মৈনট ফেরীঘাট হয়ে নবাবগঞ্জ দিয়ে অল্প সময়ে যাতায়াত করে। ফলে প্রতিদিন শত শত যানবাহনে হাজার হাজার যাত্রী এ পথে চলাচল করে থাকে।
দোহারের চরকুশাই এলাকার বাসিন্দা জুয়েল মাহমুদ জানান, সড়ক বিভাগের কিছু অসৎ কর্মকর্তাদের কারণেই এরাস্তাটি বছরের পর বছর সংস্কার হয় নি। তারা বিভিন্ন সময়ে জরুরী ভিত্তিতে সংস্কার কাজ দেখানোর কথা বলে প্রকল্প বানিয়ে বিল তুলে নেয়। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। সেই সাথে জনগণের ভোগান্তিও দীর্ঘস্থায়ী হয়। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
কার্তিকপুরের বাসিন্দা মো. জামাল হোসেন বলেন, মন্ত্রীর নির্দেশের পরও আমাগো এ সড়কটি অবহেলায় পড়ে আছে। যা প্রায় ১০ বছরের জঞ্জালে পরিণত হয়েছে। এ সড়কটি মানুষের জন্য নরক যন্ত্রনা ছাড়া আর কিছুই না। রাস্তায় চলাচলের সময় ধুলোবালূ ছাড়া আর কিছুই জোটে না। গাড়ী চলালের সময় উল্টে পাল্টে পড়েও যায়। এতে অনেকে আহতও হয়েছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের মুন্সিগঞ্জ রেঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু হেনা মো. তারেক ইকবাল বলেন, রাস্তার সংস্কার কাজের জন্য প্রায় কোটি টাকার দরপত্র আহবান করা হয়েছে। ঠিকাদারকে কার্যাদেশও দেয়া হয়েছে। শনিবার রাস্তাটি পরিদর্শন করা হয়েছে। ঠিকাদারকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে।
ছবি: দোহার মৈনট ফেরীঘাট সড়কের করিমগঞ্জ ও চরকুশাই এলাকা থেকে তোলা ছবি।