সকালে ঘুম থেকে উঠার পরই অনেকের বেশ ক্লান্ত লাগে। সারারাত ঘুমের পর তো শরীর ও মন সতেজ হওয়ার কথা। কিন্তু বিপরীতে ক্লান্ত লাগে। এমনটা মোটেও ভালো লক্ষণ নয়। শরীরে রোগ বাসা বাঁধলে অনেক সময় এরকম হয়ে থাকে। এবার তাহলে জেনে নেয়া যাক কেন ঘুম থেকে উঠার পরই শরীর ক্লান্ত লাগে।
কেন এমন হয়ে থাকে: এর সরাসরি উত্তর হচ্ছে পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব। প্রতিদিন রাতে অন্তত ৮ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। এর থেকে কম পরিমাণে ঘুম হলে সকালে ক্লান্তি লাগে। এ কারণে সারাদিন অলসতাভাব থাকে শরীরে।
কেবল ৮ ঘণ্টা ঘুমই নয়। এর ধরণও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হালকা ঘুম, মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যাওয়ার মতো অভ্যাস থাকলে বিশ্রামে ঘাটতি হয়। শরীর সুস্থ ও ভালো রাখতে গভীর এবং নিরবিচ্ছিন্নভাবে ৮ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন।
ঘুমের পরিমাণ বাড়াতে পারেন যেভাবে: প্রথমেই ঘুমের সময় নির্ধারণ করতে হবে। যেকোনো উপায়ে অন্তত ৮ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। সকালে ঘুম ভাঙার অ্যালার্মের মতো রাতেও ঘুমানোর সময় নির্ধারণ করে নিন। নির্ধারিত সময়ের ৩০ মিনিট আগেই ঘুমিয়ে পড়ুন। এতে ঘুম ভালো হবে।
আধুনিক যুগে স্মার্ট ডিভাইসও ঘুমে ব্যঘাত ঘটানোর কারণ। এ জন্য শোয়ার আগে অন্তত ২ ঘণ্টা স্মার্টফোন ব্যবহার করবেন না। প্রয়োজনে বিছানা থেকে দূরে রাখুন। টেলিভিশন বা কম্পিউটারের স্ক্রিনে চোখ রাখবেন না।
শোয়ার দেড় থেকে দুই ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে নিন। ব্যস্ত শিডিউলে সেটি সম্ভব না হলেও হালকা ও সহজতর খাবার খেয়ে নিন। খাওয়ার পর বিছানায় বসে গল্পের বই পড়ুন। ধীরে ধীরে ঘুম আসবে। কানে হেডফোন লাগিয়ে পছন্দের গান শুনতে পারেন। তবে শুয়ে ফোন ব্যবহার করবেন না।
এমন অনেকেই আছেন যারা তাড়াতাড়ি শুয়ে পরারও পরও ঘুম আসে না। এমনটা হলে প্রতিদিন এক্সারসাইজ করুন। এতে স্ট্রেস যেমন কমবে, তেমনি তাড়াতাড়ি ঘুমও আসবে।
চা, কফি, সিগারেট ইত্যাদি জাতীয় খারাপ বিষয়গুলো এড়িয়ে চলুন। আর সারাদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন। ঘুমের এক ঘণ্টা আগে অতিরিক্ত পানি পান করবেন না। এতে মাঝ রাতে প্রস্রাবের জন্য ঘুম ভাঙবে আপনার।
উপরের এসব নিয়ম মানার পরও যদি রাতে ঘুম না হয় বা শরীর ক্লান্ত লাগে, তাহলে বিশেষজ্ঞ কোনো চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বিশ্বজুড়ে ১৫৩টি গবেষণা পর্যালোচনায় জানা গেছে, ঘুম কম হওয়ার কারণে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এবং মোটা হওয়ার মতো সমস্যা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়া জরুরি।