শরীফ হাসানঃ ঢাকার দোহার উপজেলা থেকে ১০০ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে মানিকগঞ্জে উদ্দেশ্য যাচ্ছিলেন দোহারের সোনা ব্যবসায়ী সুমন বৈদ্য। পথে র্যাবের পরিচয় দিয়ে তাকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে দুর্বৃত্তদের গাড়ি যানজটে পড়লে ব্যবসায়ীর সুমন বৈদ্য চিৎকারে গাড়িটি আটক করে স্থানীয় জনতা। এরপর ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধারের পাশাপাশি ভুয়া র্যাব পরিচয় দেওয়া পাঁচজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে জনসাধারণ।
আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকার নবাবগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ সিঙ্গাইর উপজেলার সীমান্তবর্তী জামশা বাজারের কাছে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পাঁচজন আটক হলেও ছিনতাই করা সোনা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। প্রত্যক্ষদর্শীর জানান, তাদের সাথে থাকা দুই-তিনজন সোনা নিয়ে পালাতে পারেন।
পুলিশ, ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দোহারের জয়পাড়া বাজারের ‘নির্ঝর অলংকার নিকেতন’-এর মালিক সুমন বৈদ্য ১০০ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে অটোরিকশায় মানিকগঞ্জে যাচ্ছিলেন। পথে নবাবগঞ্জের নয়নশ্রী এলাকা থেকে একটি মাইক্রোবাস তাঁর পিছু নেয়। সুমনের অটোরিকশাটি সিঙ্গাইরের জামশা বাজারের কাছে গেলে মাইক্রোবাস থেকে পাঁচ থেকে ছয়জন নেমে র্যাবের সদস্য পরিচয় দিয়ে গাড়িতে তুলে নেয়। এরপর সুমনকে চোখ বেঁধে দুর্বৃত্তরা তাঁর কাছ থেকে স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়। গাড়িটি জামশা বাজার অতিক্রমের সময় যানজটে পড়ে। চলন্ত গাড়িতে চিৎকারের শব্দ শুনে স্থানীয় জনতা গাড়িটি ঘিরে ফেলে। এ সময় পরিস্থিতি বুঝে দুই-তিনজন সোনা নিয়ে পালিয়ে যান। বাকি পাঁচজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে জনতা।
ভুক্তভোগী স্বর্ন ব্যবসায়ী সুমন বৈদ্য বলেন, কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগে র্যাব পরিচয় দিয়ে পাঁচ থেকে ছয়জন লোক আমাকে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। এরপর আমাকে চোখ বেধে ফেলা হয়।পরে
আমার কাছে থাকা ১০০ ভরি স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে জামশা বাজারে স্থানীয় লোকজন গাড়িটি আটকে তাঁকে উদ্ধার করেন।
সিঙ্গাইর থানা সূত্রে জানা গেছে, সকাল ১০টার কিছুক্ষণ পর স্থানীয় লোকজন ফোন করে পুলিশকে স্বর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনাটি জানান। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জনতার হাতে আটক পাঁচজনকে তাঁদের হেফাজতে নেয়। তাঁরা হলেন ফরিদপুরের নগরকান্দার মিরাজুল শেখ (২৮), মো. সম্রাট (২৮), পাবনার আটঘরিয়ার আমিজুদ্দিন (৫০), মাইক্রোবাসের চালক জানিব (৬২) ও নগরকান্দার তালমা এলাকার মো. শামিম (৪৪)।
সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়ারুল ইসলাম জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে। ছিনতাই হওয়া স্বর্ণ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় আটক ব্যক্তিদের বিষয়ে অধিকতর খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।