গত ১৯ তারিখের প্রথম দফা উপজেলা নির্বাচনে নাজমুল হুদার নির্বাচনী এলাকায় তার ছোট ভাই কামরুল হুদা দোহার উপজেলায় স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়। আর তাতে একটু নড়েচড়েই বসে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। বিজয় লাভের পর বুধবার রাতে তাৎক্ষনিক এক প্রতিক্রিয়ায় কামরুল হুদা জয়পাড়া কলেজ মোড়ে আভাস দিয়েছিলেন তারা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করতে যাবেন চলতি সপ্তাহে এবং তাদের সেই অভিষ্ট ইচ্ছার কথা জানাবেন নেত্রীকে।
এদিকে ভুল স্বীকার করে আবার বিএনপিতেই ফিরছেন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা এবং চলতি মাসেই যেকোনো সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাৎ করে তিনি দলটিতে যোগ দেবেন বলে বিএনপির দপ্তর সূত্র বিষয়টি একটি অনলাইন গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছে বলে সংবাদ প্রকাশ হলেও তা ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। শনিবার রাতে নিউজ৩৯কে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেছেন তার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা। বলেছেন তার ৩ দফার কথা।
তবে নাজমুল হুদার বরাবরের মতো নিউজ৩৯ এর কে জানান, তিনি বিএনপিতেই ছিলেন এতোদিন, বিএনপিতেই আছেন।তবে তিনি তোষামোদকারীদের সাথে নেই। যে দলের তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সে দলে যদি সিদ্ধান্ত দিতে তিনি না পারেন তবে সে দলের সাথে সক্রিয় রাজনীতি করা যায় না।
তিনি বলেন তিনি তার মানবাধিকার সংস্থা কে নিয়ে ৩টি দফা নিয়ে সারাদেশ প্রচারে নামছেন। সে ক্ষেত্রে সকল জাতীয়তাবাদী শক্তি ও পক্ষকে এক করে ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী জোট’ নামে একটি নতুন জোটের জন্মও হতে পারে বলে তিনি জানান। এই দফাগুলোতে রয়েছে ; এক- সুস্থ রাজনীতির মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। আর সুস্থ রাজনীতি মানে হানাহানি ও গালাগালি বন্ধ করে পরমত সহিষ্ণু রাজনীতি। দুই- দূর্নীতি ও দলীয় রাজনীতির উর্ধে উঠে দেশপ্রেমের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করা। প্রশাসনকে দলীয় করণ মুক্ত করা। তিন- ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য নিরাপদ সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য অগ্রসর হওয়া।
তিনি বলেন, তিনি আগামী পাচ বছর তার দলকে শক্তিশালী করবেন এবং দোহার বাদে বাকি ২৯৯ আসনে নির্বসাচনের জন্য প্রার্থী বাছাই করবেন। তবে যদি বিএনপি’তে ফিরে যাবার মতো পরিবেশ হয় সেক্ষেত্রে তিনি চিন্তা করে দেখবেন বলে জানান। আর দোহারে তার মনের মতো বিএনপি প্রার্থী দিতে না পারলে এখানেও তিনি প্রার্থী দিবেন বলে জানান নিউজ৩৯কে।
উপজেলা নির্বাচনে কামরুল হুদা দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে ৩৮ হাজার ৭৫৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রাথী ইঞ্জিনিয়ার মেহেবুব আনারস প্রতীকে পেয়েছিলেন ২৬ হাজার ৫৮৫ ভোট। ফলে স্থানীয় বিএনপি পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাকেই প্রার্থী হিসেবে দেখতে চাচ্ছে।
উল্লেখ্য, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ২০১০ সালে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হন স্থায়ী কমিটির সদস্য নাজমুল হুদা। পরে ২০১২ সালের আগাস্ট মাসে তিনি বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) নামের একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দেন। এরপর ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিজেই ওই দল থেকে নিজের নাম সরিয়ে নেন।