ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বারুয়াখালী ইউনিয়নে একটি সেতুর অভাবে দীর্ঘদিন ভোগান্তির মধ্যে আছে দীর্ঘগ্রামসহ প্রায় ২০টি গ্রামের অধিবাসী। উপজেলা সদর থেকে মাত্র ১৫ কি.মি. পশ্চিমে এই গ্রামের অবস্থান। প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার লোকের বসবাস এই গ্রামে কিন্তু পড়ে নি তেমন কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া। গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে একটি খাল। এ খালের ওপর ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে এ গ্রামসহ প্রায় ১০/১২টি গ্রামের বাসিন্দারা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, খালের উপর কাঠের তৈরি সাঁকোটি দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে কিন্তু দেখার কেউ নেই।সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাঁকোটি সংস্কারের কোনো উদ্যোগ না নেয়ায় প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে হাট, বাজার, স্কুল ও কলেজেসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যাতায়াত করতে হচ্ছে। মাঝে মাঝে ঝুঁকি নিয়েই কাঠের সাঁকো দিয়ে খাল পারাপার হচ্ছে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী। এতে তারা প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।
এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘগ্রাম খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণ অনেক দিনের দাবি এলাকাবাসীর। নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধিরা সেতুটি সংস্কারের আশ্বাস দিলেও এ পর্যন্ত কেউ প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। বিগত প্রায় ৮/৯ বছর যাবতই সেতুটি এ অবস্থায় পড়ে আছে। দুর্ভোগ ছাড়া কিছুই জুটেনি অবহেলিত এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যে।
পাশের করপাড়া গ্রামের বাসিন্দা স্বপন মিয়া জানান, এ সাঁকো দিয়ে পায়ে হেটে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করলেও কোনো ধরনের যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। ফলে এক কিলোমিটার ঘুরে কাদার রাস্তা ঘুরেই চলাচল করতে হয় এলাকার লোকজনকে।
স্থানীয় গৃহিনী সালেহা বেগম জানান, বর্ষা মৌসুমে রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যায়। এ সেতুটি সংস্কার হলে তাদের দুঃখ-কষ্ট অনেকটাই কমবে। দীর্ঘগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জৈনতপুর আশরাফুল উলুম মাদরাসার শিক্ষার্থীরাও এ সেতু দিয়ে যাতায়াত করে।
দীর্ঘগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম জানান, তার স্কুলে যেতে শিক্ষার্থীদের কাঠের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয়। ফলে অনেকেই অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছে।
বিদ্যালয়েল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান জানান, এই সেতুটি তৈরি হলে আমরা আরো বেশি শিক্ষার্থী পাবো। তাই সরকারের কাছে আমার জোরালো দাবি সেতুটি খুব শিগগিরই তৈরি করা হোক।
নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী ধীরেন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘তদন্তের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’