নবাবগঞ্জ উপজেলার পাড়াগ্রামের সাথে সিংগাইর উপজেলার সিরাজপুর এলাকা দিয়ে প্রবাহিত কালিগঙ্গা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি গত ৮ বছরেও। দুইটি ঠিকাদারি প্রতিষ্টান বদল করেও শেষ করা হয়নি। আর কত বছরের মাঝে শেষ হবে তার উত্তর জানা নেই কারো। আর তা না জানায় ফাঁদে পড়ে যোগাযোগ বিহীন অবস্থায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে এই দুই উপজেলার কয়েক লক্ষ মানুষ।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য মতে, বিগত ২০০৬ সালে বিএনপি জোট সরকারের আমলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের (এল আর জি ডি) অর্থায়নে প্রায় ৬ কোটি ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে কালিগঙ্গা নদীর উপর পাড়াগ্রাম-সিরাজপুর সেতুর নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়। এপ্রোচ সড়ক বাদে ২৪০ মিটার দীর্ঘ সেতুটির নির্মাণ কাজের সময় বেধে দেয়া হয় ৩৬ মাস।
প্রথম দফায় শ্রাবন্তী ট্রেডারস নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কারযাদেশ পায়। যথা সময় কাজ শুরু করতে না পারায় শ্রাবন্তী ট্রেডারস এর কারযাদেশ বাতিল করা হয়।
পরে ২০১১ সালে দ্বিতীয়বার দরপত্র আহবান করলে ইস্টল্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স নামে এক প্রতিষ্ঠান ওই বছর ৮ মে কারযাদেশ পায়। ইস্টল্যান্ড এর মালিক খলিলুর রহমান বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শুরু হয়েছিল, কিন্তু দুই বছর অর্থ সংকটের কারনে কাজ ধীর গতিতে চলে। ২০১৩ সালে ৭ মে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পরবর্তীতে আরো ১৮ মাস সময় বাড়ানো হয়।
গত তিন বছরে পারেন নি এতো অল্প সময়ে কাজ কিভাবে শেষ করবেন এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন বেশি শ্রমিক নিয়োগ করে দ্রুত নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে।
সরজমিনে দেখা গেছে, পাড়াগ্রাম-সিরাজপুরের কালিগঙ্গা নদীর উপর এই সেতুর মাত্র চারটি পিলার দাঁড়িয়ে আছে। নদীর দুই পাড়ের গ্রাম আর হাটে যেতে স্থানীয় মানুষ ঝুকি নিয়ে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় পাড় হচ্ছে নদী। নদীর দুই পাড়ে ঘাটে থাকা মটর সাইকেল, সিএনজি, অটোরিক্সা ঝুকি নিয়ে পাড় হচ্ছে ঘাটের ট্রলারের মাধ্যমে।
স্থানীয় এই দুই উপজেলার মানুষ শুধুমাত্র একটি সেতুর জন্য দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি এই সেতুটি নির্মাণ হলে ঢাকার পশ্চিম অঞ্চলের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো সহজতর হবে। তাছাড়া দুই জেলার মানুষ প্রতি হাটের দিন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাবেচা থাকে। তাদেরকেও ঝুকি নিয়ে ব্যবহার করে ছোট নৌকা।
পাড়াগ্রামের দড়িকান্দা গ্রামের বাসিন্দা সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলম মাস্টার বলেন, সেতুটি হলে নবাবগঞ্জ ও সিংগাইড় উপজেলার কয়েক লাখ মানুষের দুর্ভোগ কমাবে। রাজধানী ঢাকার দক্ষিন অংশের কয়েক লাখ মানুষের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে। এবিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী প্রকৌশলী ধীরেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ ্বলেন, বর্ধিত সময়ের ভিতর সেতুর কাজ সম্পন্ন করতে পারবে কি না তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ঠিকাদারের গাফিলতির প্রমান পেলে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিবে।