আল-আমিন, শরিফ হাসান, তৌহিদ হোসেন, শেখ শামীম, news39.net: ঢাকা -১ সাংসদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদ্বেষ্টা সালমান এফ রহমান এমপি শনিবার ঢাকার দোহার এবং নবাবগঞ্জ উপজেলায় বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন। দোহারের মুকসুদপুর ইউনিয়নের সরকারি পদ্মা কলেজে, পদ্মা তীর সংরক্ষণ ও বাধ নির্মাণ বিষয়ে এক জরুরি বৈঠক করেন তিনি।
উপস্থিত বিভিন্ন কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠকে তিনি বলেন, পদ্মা রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের প্রায় পনেরশ কোটি টাকা ব্যয়ের কাজটির বাস্তবায়নের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। এসময় দ্রুততম সময়ে তিনি কাজ শেষ করার জন্য তাগিদ দেন।
সালমান এফ রহমান বলেন, পদ্মা নদীতে ক্যাপিটাল ড্রেজিং করে দোহারে নদীর তীরবর্তী সীমানার অর্থাৎ নয়াবাড়ি থেকে মুকসুদপুর পর্যন্ত ৩৪ কিলোমিটার নিচু জমির উন্নয়নে ড্রেজিং করতে হবে। তাহলে পদ্মা নদীর দোহারের তীরবর্তী অংশ রক্ষা করে ১০ কিলোমিটার জমি উদ্ধার করা সম্ভম হবে। এসকল জমি দোহার উপজেলার অর্থনৈতিক উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করা যাবে। পরবর্তীতে এখানে গড়ে উঠবে পর্যটন নগরী ও স্যাটেলাইট সিটি। আর এই বাধের উপর দিয়ে নির্মিত হবে নয়ানভিরাম মেরিন ড্রাইভ, যা বিস্তৃত হবে মানিকগঞ্জ জেলা পর্যন্ত।
দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএফএম ফিরোজ নাইম news39.net কে বলেন, বৈঠকে মাননীয় সাংসদ সালমান এফ রহমান পদ্মা নদীর দোহারের অংশে নদী শাসন ও নদী তীর সংরক্ষণ রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা ও পরিকল্পনার বিষয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া ঢাকা, দোহার, নবাবগঞ্জের সড়ক তিনি পরিভ্রমণ করে সড়কের অবস্থা দেখেন। এছাড়া পদ্মা নদী শাসন ও তীর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের কাজে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আগামী ২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশনা দেন। একইসাথে নদীর নাব্যতা ঠিক রেখে, নদীগর্ভে বিলীন হওয়া জমি পুনরুদ্ধার বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরও বলেন,দোহারে খুব শীঘ্রই পদ্মা বাধ সংরক্ষণ, শাইনপুকুর থেকে নারিশা পর্যন্ত বাধ সংরক্ষণ ও বাধ সংলগ্ন বর্ধিত অংশের সংরক্ষণের জন্য ভূমি পুনরুদ্ধারে ড্রেজিং কার্যক্রম চলবে। সমগ্র প্রকল্পটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তদারকিতে কাজটি সম্পন্ন হবে। এতে ব্যয় হবে প্রায় ৫৯৪ কোটি টাকা।
শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় দোহার উপজেলার পদ্মা সরকারি কলেজে হেলিকপ্টারযোগে উপস্থিত হন তিনি। এসময়ে তাকে ঢাকা জেলা পুলিশ ও স্কাউট দল কুচকাওয়াজের মাধ্যমে সশস্ত্র সালাম প্রদর্শন করে। পরে সকাল ১০ টায় সরকারি পদ্মা কলেজের সভাকক্ষে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সচিব, প্রকৌশলী, পদ্মা বাঁধ রক্ষা প্রকল্পে দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা, দোহার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, দোহার উপজেলা প্রশাসন, দোহার উপজেলা আইন শৃংখলা রক্ষা কমিটির এমপির প্রতিনিধি মুশফিকুর রহমান লিমন, নবাবগঞ্জ উপজেলা আইন শৃংখলা রক্ষা কমিটির এমপির প্রতিনিধি ইফতেখার আহমেদ হৃদয়, দোহার প্রেসক্লাবের আহবায়ক তারেক রাজীব, ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি গিয়াসউদ্দিন সোহাগসহ ঢাকা রেঞ্জ এবং দোহার থানা পুলিশ প্রশাসন উপস্থিত ছিলেন।
নদীতে ক্যাপিটাল ড্রেজিং করে দোহারের নদীর তীরবর্তী সীমানার ২০ বর্গ কিলোমিটার নিচু জমির উন্নয়ন করতে হবে। তাহলে পদ্মা নদীর দোহারের তীরবর্তী অংশ রক্ষা করে ৬ থেকে ৭ হাজার কিলোমিটার জমি উদ্ধার করা সম্ভম হবে। এসকল জমি দোহার উপজেলার অর্থনৈতিক উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করা যাবে। পরবর্তীতে এখানে গড়ে উঠবে পর্যটন নগরী। পদ্মা নদীর তীর ঘেসে তৈরি হবে মেরিন ড্রাইভ।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কেন্দ্রীয় শাখার প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল মতিন সরকার, নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আয়নুল হক, দোহার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন, দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ.এফ.এম ফিরোজ মাহমুদ, নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন মঞ্জু, দোহার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র, দোহার-নবাবগঞ্জ সার্কেল এএসপি জহিরুল ইসলাম, দোহার ও নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাবৃন্দ প্রমুখ।