দোহার থানা আওয়ামীলীগের নতুন কমিটি এখন সময়ের দাবিঃ পর্ব ১

832

হামিদুর রহমান পলাশঃএখনও নাড়ির টান রয়েছে পদ্মার বিস্তীর্ণ জলরাশি, জল জোছনা মিশ্রিত প্রকৃতির নৈসর্গিক রূপের সঙ্গে। ছেলেবেলা, শিশুকাল ও যৌবনের অধিকাংশ সময় কেটেছে পদ্মার ঢেউয়ের সঙ্গে মিতালী করে। এ যেন একটি মানবিক জীবনের সহজ-সরল স্মৃতিময় অভিব্যক্তি। অনেক দিন রাজনৈতিক বিশ্লেষন মুলক কোন লেখা লিখি না। তেমন সময়ও পাই না। প্রবাস জীবনে সময় খুবই মুল্যবান। তারপরও দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই কিছু সময় বের করি। ঢাকা জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মাহবুবুর রহমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হবার পর ভেবেছিলাম রাজনীতির গুনগত কিছু পরিবতন হবে। কিন্তু এখনও তা দৃশ্যমান নয়। তিনি অনেকটা নিরব আর বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান অতিথি হওয়া নিয়ে ব্যস্ত সাথে উন্নয়ন কাজের প্রতিশ্রুতি। তার পাশাপাশি অন্য নেতারাও পিছিয়ে নেই। তারাও ব্যস্ত নিজেদের অবস্থানের জানান দিতে। জানিনা এ অসম প্রতিযোগীতা কত দিন চলবে ?

এক সময় এই পদ্মাপাড়ের জনপদের জীবন সুখের ছিল! গোলাভরা ধান ছিল, পুকুরে মাছ ছিল, আদর্শের রাজনীতি ছিল। নিম্নমধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা নিরাবরণ, সরল, সাদামাটা জীবনে অভ্যস্ত রাজনীতিবিদ যাদের পেশা ছিল আইনজীবী থেকে শিক্ষক, অথবা সমাজের সাধারণ মানুষ – রাজনীতি ছিল তাদের হাতে। নেতারা ছিলেন নেতাদের জায়গায়, কর্মীরা ছিলেন সুশৃঙ্খলভাবে তাদের পেছনে। সেই আদর্শিক মূল্যবোধের রাজনীতির অবক্ষয় সমাজ জীবনে ক্যান্সারের মতো ভাইরাস ছড়িয়ে রাজনীতিবিদদের হাতছাড়া হয়ে মানবকল্যাণ ও রাষ্ট্র পরিচালনার দর্শন রাজনীতি দেখতে দেখতে চলে গেল ব্যবসায়ী, অবসরপ্রাপ্ত সামরিক ও বেসামরিক আমলাদের হাতে। এ বিবর্তনে রাজনীতিতে যেমন রক্ত সঞ্চালন ঘটেনি, তেমনি রাজনীতি হারিয়েছে তার জৌলুস।

অন্য খবর  দোহারে গাজাসহ ১ জন আটক

স্থানীয় রাজনীতি থেকে জাতীয় রাজনীতি পর্যন্ত গোটা রাজনৈতিক অঙ্গনে মেধা, যোগ্যতা ও সাংগঠনিক দক্ষতায় তারকাখ্যাতি নিয়ে উঠে আসা রাজনৈতিক নেতা-কর্মীর উৎসস্থল ছিল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ কিন্তু আজ রাজনীতি হয়ে গেছে খেলার মাঠের খেলোয়ারের মত যার পেশি শক্তি বেশি সেই এখন বড় নেতা। এতে করে স্থানীয় গৌরবময় রাজনীতির ঐতিহ্যের ধারাটি শুধু হোঁচট-ই খায়নি, মানুষের আস্থা ও সম্মানের জায়গা থেকেই সরে যায়নি, জাতীয় রাজনীতিকেও তা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। রাজনীতি দিনে দিনে রূপহীন, বর্ণহীন, গন্ধহীন হতে হতে যৌবনই হারায়নি; ভঙ্গুর হয়েছে।

যারা দোহার থানায় সুস্থধারার রাজনীতির গৌরব ও ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারিত্ব দেখতে চান, পুনঃপ্রতিষ্ঠা চান, তারা কেউই যোগ্যতাহীন নয়।

সবাই চায় মেধাবী, সৃজনশীল, আদর্শবান, গণমুখী রাজনৈতিক নেতা-কর্মী তৈরির জন্য নিয়মিত কমিটি গঠন। সবাই চায়, নিয়মিত রাজনীতিবিদদের মধ্য থেকে মেধাবী নেতৃত্ব নির্বাচিত হোক দোহার থানার নেতৃত্বে। এতে যেমন আদর্শিক সুস্থ ধারার, নির্লোভ, দেশপ্রেমিক তারুণ্য প্রতিষ্ঠিত হবে তেমনি রাজনীতির গুনগত পরিবর্তনসহ   তরুন প্রজন্ম রাজনীর প্রতি আকৃষ্ট হবে। সম্ভবনাময় তরুন প্রজন্মের সমন্ময়ে সংগঠনকে গতিশীল করলে সাংগঠনিকভাবে নেতৃত্ব ও সাংগঠনিক দক্ষতায় হৃষ্টপুষ্টই হবে না; রাজনীতির চারণ কবিদের মতো রাজনীতি হবে আলোকিত। মানুষের কল্যাণে যে রাজনীতি সেটিও হবে গতিময়।

অন্য খবর  নবাবগঞ্জের বিএনপির সাবেক সভাপতি ইফতেখার আল ফারুকীর মৃত্যু

দোহার থানার রাজনীতির এক সময় যৌবন ছিল স্রোতস্বিনী নদীর মতো। যা এখন অনেকটা মলিন। নিয়মিত কমিটি না হওয়ার কারনে এখন আর খুঁজে ১০ জন জনপ্রিয় তরুণ নেতা পায় না দোহার থানা আওয়ামীলীগ। আর এর কারণ দোহারের রাজনীতি অনেকাংশে অরাজনৈতিকদের হাতে চলে গেছে। এতে কমিটি বাণিজ্যের রমরমা ব্যবসায়ই নয়, রাজনীতির সঙ্গে জড়িত অযোগ্যরাই টেন্ডারবাজি, ঠিকাদারি, তদবির বাণিজ্যসহ লোভ-লালসার নানা পথে জড়িয়ে তিন নেতার তোষামোদি করছে এতে কলঙ্কিত হচ্ছে অতীতের রাজনীতির ঐতিহ্য। অযোগ্য নেতা-কর্মিরা দোহার থানার আওয়ামীলীগে তাদের পদ রক্ষায় সকালে এক নেতা বিকালে এক নেতা আর রাতে আর নেতার কাছে দেন দরবারে ব্যস্ত। কিভাবে এ কমিটি চিরস্থায়ী করা যায়, তা নিয়ে ভাবনা নেই। দোহার থানা আওয়ামীলীগের নতুন কমিটি এখন সময়ের দাবি।

আপনার মতামত দিন