শরিফ হাসান, দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধি: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি ও স্মারকলিপি দিয়েছে দোহার উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকবৃন্দ।
দোহার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অফিসের সামনে অনুষ্ঠিত মঙ্গলবার ওই কর্মসূচিতে দোহার উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকশ সহকারী শিক্ষক অংশ নেন।
মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে দোহার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইলোরা ইয়াসমিনের কাছে প্রধান সমন্বয়ক আবুল কালাম মোল্লার নেতৃত্বে শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বরাবর একটি স্মারকলিপি দেন।
মানববন্ধনে শিক্ষক নেতারা অভিযোগ করে বলেন, একই যোগ্যতায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েও তারা তৃতীয় শ্রেণির গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন। অথচ তাদের সমান যোগ্যতায় অনেকেই ১০ম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন। এটা স্পষ্টতই একটা বড় বৈষম্য।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দোহার উপজেলার শিক্ষক নেতারা বলেন, উচ্চ মাধ্যমিক এবং ডিপ্লোমা পাসের যোগ্যতায় নার্সরা জাতীয় পে-স্কেলের ১০ম গ্রেড পাচ্ছেন। একইভাবে উচ্চ মাধ্যমিকসহ ৪ বছরের ডিপ্লোমা যোগ্যতায় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা ১০ম গ্রেড, পুলিশের এসআইরা স্নাতক যোগ্যতায় ১০ম গ্রেড এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা একই শিক্ষাগত যোগ্যতায় ১০ম গ্রেড পাচ্ছেন। অথচ সহকারী শিক্ষকদের বর্তমান বেতন হয় ১৩ তম গ্রেডে। অথচ এখানে দেশের সর্বোচ্চ মেধাবীরা এসেছে শিক্ষাসেবায় নিজকে উৎসর্গ করে। তাই, আমাদের বেতন স্কেল সেটা ১০ম গ্রেডে উন্নীতের দাবিতে বেশ কয়েক মাস ধরে, আমরা আন্দোলন করে আসছি।
মানববন্ধনে সহকারী এক শিক্ষিকা বলেন, ৯ বছর আগে ২০১৫ সালে সর্বশেষ যে জাতীয় পে-স্কেল ঘোষণা করা হয়েছিল। ওই পে-স্কেলেও প্রাথমিক শিক্ষকরা বৈষম্যের শিকার হয়। কিন্তু এই সময়ে যে হারে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে, তাতে প্রাথমিক শিক্ষকরা সংসার চালাতে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন। এমতাবস্থায়, জাতির মেরুদণ্ড এই শিক্ষকেরা বঞ্চনা এবং বৈষম্য শিকার হলে, জাতির মেধাবিকাশ সম্ভব নয়।
শিক্ষক নেতা দলিলুর রহমান নিউজ৩৯কে বলেন, মেধাবী শিক্ষকদের রাখতে হলে এ পেশার সামাজিক মর্যাদা, বেতনসহ সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে। মালদ্বীপের প্রাথমিকের শিক্ষকদের মাসিক গড় বেতন প্রায় ৯৫৫ ডলার বা ১,২০,০০০/- টাকা , যা বাংলাদেশের প্রায় ছয় গুণ।
এমনকি পাকিস্তানেও শিক্ষকদের গড় বেতন ২০৭ ডলার বা ২৮/২৯ হাজার টাকা ও শ্রীলংকায় ২৫০ ডলার বা ৩৫ হাজার টাকা প্রায়। তাই, অনতিবিলম্বে সহকারী শিক্ষকদের ১০তম গ্রেড ও প্রধান শিক্ষকদের ৯ম গ্রেড দেয়া হোক।
কর্মসূচিতে বাস্তবায়নের জন্য দোহার উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সকল সহকারী শিক্ষকবৃন্দ,মোহাম্মদ আবুল কালাম মোল্লা (সমন্বয়ক),মোঃ হাবিবুর রহমান (সহ সমন্বয়ক) উপস্থিত ছিলেন।