শুক্রবার ৫ম বিয়ে করার পর ৪র্থ বৌ’র আত্মীয়স্বজনের নিকট হাতেনাতে ধরা খেলো ধরিবাজ মো. ফারুক (৩২)। ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার বিকেলে দোহারের পুষ্পখালী গ্রামে।
ফারুক মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান থানার নয়ানগর গ্রামের গেদু মিয়ার ছেলে বলে জানা যায়। বর্তমানে সে নবাবগঞ্জের শুভ ভিডিও রেকর্ডিং এ- এডিটিং সেন্টারে ভিডিও ক্যামেরাম্যান হিসেবে কাজ করে।
কুসুমহাটি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন জানান, ফারুক ভিডিও ক্যামেরাম্যান হিসেবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভিডিও’র কাজ করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কোনো এক অনুষ্ঠানে পুষ্পখালীর এ মেয়ের সঙ্গে ফারুকের পরিচয় হয়। পরিচয়ের পরবর্তীতে মেয়ের মুরুব্বিদের মতামতের ভিত্তিতে ফারুক শুক্রবার পুষ্পখালীতে আসে বিয়ে করার জন্য। বিয়ের এক ঘণ্টার মধ্যেই ৪র্থ বৌর আত্মীয়স্বজন বিয়ে বাড়িতে এসে ফারুকের ঘটনা খুলে বললে বিয়ে বাড়িতে আসা ক্ষুব্ধ আত্মীয়স্বজন ধরিবাজ ফারুককে পিটুনি দিয়ে নতুন বৌ কর্তৃক ফারুককে তালাক দেয়া হয় এবং শনিবার উভয়পক্ষের মুরুব্বিদের নিয়ে স্থানীয় বিচারে পঞ্চাশ হাজার টাকা মুচলেকা দিয়ে ৪র্থ বৌ বিথী আক্তারের জিম্মায় ফারুককে ছেড়ে দেয়া হয়।
তিনি আরো বলেন, ফারুক নবাবগঞ্জ থানার হাসনাবাদ গ্রামের বিথী আক্তার নামে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করে। সে ঘরে এক সন্তান রয়েছে। বিয়ের আগে সে ৪র্থ বৌ বিথীকে নিয়ে হাসনাবাদ গ্রামের এক বাড়ীতে ভাড়া থাকতো।
এদিকে ফারুকের বিষয়ে শুভ ভিডিও রেকর্ডিং এ- এডিটিং সেন্টারের স্বত্ত্বাধিকারী রাজু আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যায়।
ফারুক নিজের ৫ম বিয়ের ভিডিও করার জন্য শুভ ভিডিও রেকর্ডিং এ- এডিটিং সেন্টারের একটি ক্যামেরা অনেক কাকুতি-মিনতি করে ১দিনের জন্য ভাড়া নেয়। যা শুক্রবার সকাল ১০টার মধ্যে ফেরত দেয়ার কথা থাকলেও তা ফেরত দেয় বিকেলে।
ফারুক সম্পর্কে আরো জানা যায় যে, সে অনেকটা বাটপার প্রকৃতির ছেলে। এ পর্যন্ত কাগজে কলমে ৫টি বিয়ে করলেও বিয়ের সংখ্যা আরো বেশী বলে সন্দেহ করা হয়। ফারুক প্রথম বিয়ে করেন তার নিজ এলাকা রাজানগরে। ২য় বিয়ে করে নবাবগঞ্জের চুড়াইন ইউপি’র খাহ্রা গ্রামের শিল্পীকে । এ ঘরে ১১ বছরের এক মেয়ে আছে। ৩য় বিয়ে করে ফরিদপুর সদরের বিউটিকে। ৪র্থ বিয়ে করে এক প্রবাসীর স্ত্রী বিথী আক্তারকে। পঞ্চম বিয়ের পরপরই নতুন বৌ তাকে তালাক দেয়। উল্লেখ্য ফারুক নিজ থেকে কোনো বউকেই তালাক দেয়নি। ৪র্থ বৌ বাদে অন্য বউরাই তাকে তালাক দেয়। তার প্রতিটি বিয়ে ছিলো ভালোবাসার বিয়ে।
১০ বছর বয়সে ফারুক বাসের হেলপার হিসেবে কাজ শুরু করে। বাসের হেলপারি ১৪ বছর করার পর সে ভিডিও’র কাজ শুরু করে প্রায় ৮বছর যাবৎ। তার হাত ছিলো খুব ভার। সে সব সময় ধারদেনার মধ্যে থাকত। ফারুক ভিডিও ক্যামেরাম্যান ছিলো বলে সে মেয়েদের সহজেই পটাতে পারতো। আর মেয়েরাও তার চেহারা ও কথাবার্তায় কোনো কিছু না ভেবেই মন-প্রাণ দিয়ে দিতো।