আগামী ৩১ জানুয়ারি ৬ষ্ঠ ধাপে দোহার উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসায় এসব ইউনিয়নে জমে উঠেছে শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণা।

এলাকা জুড়ে আওয়মী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও দলটির বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থীদের পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে নির্বাচনি এলাকা। তবে এ ক্ষেত্রে মানা হচ্ছেনা নির্বাচন অফিসের দেওয়া বিধি নিষেধ। এমনকি বিধি নিষেধ প্রয়োগে নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্টদের তৎপরতাও চোখে পড়েনি।

দোহার উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন গুলো ঘুরে দেখা যায়, কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের বাড়িতে বাড়িতে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। ভোটারদের তারা দিচ্ছেন নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি। প্রার্থীদের ব্যানার পোষ্টারে ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা। নিয়মের তোয়াক্কা না করেই চলছে প্রচারণা। নির্বাচন কমিশনের আইন রয়েছে প্রার্থীদের পোষ্টার রশি দিয়ে টানানোর কথা। কিন্তু সেটা কেউই মানছে না। স্কুলের দেওয়াল, চায়ের দোকানে, ঘরের দরজায় স্টিকার, বিদ্যুৎ খুটিতে, অটোরিকশায় স্টিকার প্রার্থীদের পোষ্টার লাগানো হয়েছে। তবে প্রার্থীদের দাবি তারা আচরণ বিধি মেনেই পোষ্টার লাগাচ্ছেন।

আচরণ বিধি সম্পর্কে ঢাকা জেলা প্রসাশক মোঃ শহিদুল ইসলাম গত ১৫ জানুয়ারি দোহারের পাঁচটি ইউনিয়নের সকল চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীদের নিয়ে একটি আলোচনা করেন। সেখানে তিনি প্রার্থীদের বলেন, নির্বাচনের পোষ্টার রশি দিয়ে টানাতে হবে। স্টিকার বা আঠা দিয়ে পোস্টার লাগানো যাবে না। বিধিনিষেধর কারনে ৫০ জনের বেশি লোক নিয়ে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালানো যাবে না। স্কুল কলেজে বা কোন সামাজিক অনুষ্ঠানে নির্বাচনী প্রচারণা চালানো যাবে না।

অন্য খবর  দোহারে বিদুৎ স্পৃষ্টে কাঁঠমিস্ত্রী নিহত

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত কুসুমহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী কাদের মণ্ডল বলেন, আমরা যখন লোকদের পোস্টার দিয়েছি; তখন আমরা না করে দিয়েছি আঠা দিয়ে যাতে পোষ্টার না লাগায়। কিন্তু ছোট বাচ্চারা না বুঝে একটা দুইটা জায়গায় তারা আঠা দিয়ে পোষ্টার লাগিয়েছে। স্টিকারের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুধু আমি না প্রতেকে ইউনিয়নে সবাই স্টিকার লাগাচ্ছে।

দোহার উপজেলার কুসুমহাটি ইউনিয়নের মেম্বার পদপ্রার্থী শাওন ইসলাম বাদশাহ জানান, তিনি নিয়ম মেনেই ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন। পোস্টার বিষয় জনতে চাইলে তিনি বলেন, আমার ল্যামনেটিং করা পোস্টার সব নামিয়ে ফেলেছি। কিন্তু বাংলাবাজারে কিছু পোস্টার আছে সে গুলোও নামিয়ে ফেলবো।

থানার মোড়ের অটোরিকশাচালক জুয়েল শেখ বলেন, ‘আমরা যাত্রী নিয়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করি। আর যে সময় যার সামনে পড়ি সেই আমাদের অটোরিকশায় তাঁদের স্টিকার লাগিয়ে দেয় এবং যাত্রীদের ভোট দিতে বলেন।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুসুমহাটি ইউনিয়নের এক চা দোকানি বলেন, ‘এইখানে একেক সময় একেকজন আইসা ভোট চায়। সে সময় তাঁরা তাঁদের মার্কার লিফলেট হাতে দিয়ে ভোট চান অথবা দোকানে স্টিকার লাগিয়ে দিয়ে যান। এমন করেই তাঁদের পোস্টার দিয়ে দোকান ভরে রেখেছেন। এখন আমি কী করতাম? আমি কি তাঁদের কইছি আমার দোকানে পোস্টার লাগাতে? আমি এখানে কয়েক কাপ চা বেইচ্চা খাই! প্রার্থীদের ধারণা চায়ের দোকানে লোকজন বসে আড্ডা দেয়। সে জন্য তাঁরা চায়ের দোকানে বসে থাকা লোকের কাছে ভোট চান আর পোস্টার-স্টিকার লাগিয়ে দিয়ে যান।’

অন্য খবর  ২৫ সংসদীয় আসনের সীমানা পরিবর্তন; আলাদা হয় নি দোহার-নবাবগঞ্জ

জানা যায়, দোহার উপজেলার ৫ ইউনিয়নে মোট চেয়ারম্যান প্রাথী রয়েছে ৩৪ জন, মেম্বার প্রার্থী রয়েছে ১৫৪ জন এবং সংরক্ষিত আসনে ৪৫ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছে।

এ বিষয়ে দোহার উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা মো.রেজাউল ইসলাম জানান, আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে দুইজন প্রার্থীকে দশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে এপর্যন্ত। এরপর আর কোন মোবাইল কোট পরিচালনা করা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচনী কাজ নিয়ে ব্যস্ততা থাকার কারনে আর কোন মোবাইল কোট পরিচালনা করা হয়নি।

আপনার মতামত দিন