দোহার উপজেলার বেশিরভাগ খাল ভরাটের কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয় বিভিন্ন এলাকায়। উপজেলার ৬৬টি খালের সবগুলোই ভরাট। অন্যদিকে উপজেলা ও পৌর এলাকার মধ্যে নেই পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা। এখন চলছে বর্ষা মৌসুম। বৃষ্টি ফসলের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এলেও এটিই এখন চলাচলের প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দোহার উপজেলার আটটি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার সাধারণ জনগণের কাছে।
সরেজমিন ঘুরে দোহার উপজেলার আটটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন এলাকার এমন চিত্র দেখা গেছে। প্রায় প্রতিটি রাস্তাতেই এখন দেখা যাচ্ছে জলাবদ্ধতা। সাধারণ জনগণ, কর্মজীবী মানুষ ও স্কুল-কলেজগামী ছাত্রছাত্রীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। দোহারের নারিশা ও সুতারপাড়া ইউনিয়ন এবং পৌরসভার ১, ২, ৩, ৬, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতা সবচেয়ে বেশি। নারিশার চৈতাবাতর, পশ্চিমচর, লঞ্চঘাট, শিমুলিয়া, ঝনকি ও মালিকান্দা এলাকার ১৪-১৫টি খাল ভরাট করেছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
সুতারপাড়া ইউনিয়নে সব খাল প্রভাবশালীরা দখল করে ভরাট করার কারণে বর্তমানে খালের অস্তিত্ব চোখে পড়ে না। সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে বাড়ি, দোকানপাট, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, টয়লেটসহ পাকা স্থাপনা। প্রভাবশালীরা দোহার পৌর এলাকায় ডোবা-নালা সব ভরাট করে ফেলেছেন। পৌরসভায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে মসজিদগামী মুসলি্ল, কর্মজীবী ও স্কুলগামী হাজারো ছাত্রছাত্রীকে। রাস্তায় জমে থাকা ময়লাপানিতে চলাচলের জন্য নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। দোহার থানার সামনের রাস্তায়ও বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে হাজারো পথচারীকে। উপজেলার কোথাও কোথাও হাঁটু সমান পানি।
নারিশা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবদুল মান্নান বলেন, নিয়মিত কর পরিশোধ করছে নারিশাবাসী। অথচ সামান্য বৃষ্টিতেই ঘর থেকে বের হতে পারি না রাস্তায়। জমে থাকে ময়লাপানি। স্থানীয় চেয়ারম্যান নিশ্চুপ! এ সমস্যার দ্রুত সমাধান চান তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী (ভূমি) কমিশনার মো. ইমরুল হাসান জানান, তিনি এখানে নতুন যোগদান করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে দখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মুশফিকুর রহমান জানান, মন্ত্রণালয় থেকে বিশেষ বরাদ্দ না পেলে জলাবদ্ধতার নিরসন দ্রুত সম্ভব নয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দোহার পৌরসভার চেয়ারম্যান আবদুর রহীম মিয়া বলেন, ‘জলাবদ্ধতার সমস্যা নতুন কিছু নয়। প্রতিবারই বর্ষা মৌসুমে এ সমস্যা দেখা দেয়। জমির দাম বৃদ্ধির ফলে মানুষ ডোবা-নালা সব ভরাট করে ফেলেছেন। এ কারণে বৃষ্টির পানি সরতে না পারায় রাস্তায় উপচে পড়ছে। এ ছাড়া এ পৌরসভায় বরাদ্দ কম।
এ বিষয়ে দোহার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন জানান, খুব শিগগির দখলকারীদের একটি তালিকা প্রস্তুত করে প্রশাসনিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।