কুসুমহাটিতে বয়স্ক ও বিধবা ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ

310

ঢাকার দোহার উপজেলার কুসুমহাটি ইউনিয়নের শাওন ইসলাম বাদশা নামে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে বয়স্ক ও বিধবা ভাতার টাকা আত্নসাতের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা এর প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ও সমাজসেবা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।

জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থ বছরের প্রথম ৬ মাসের ভাতার টাকা উপজেলার কুসুমহাটি ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের বয়স্ক ও বিধবা ভুক্তভোগীদের ৩ হাজার করে প্রত্যেকের মোবাইলে নগদ একাউন্টে আসে।

কুসুমহাটি ইউপি সদস্য শাওন ইসলাম বাদশা ভুক্তভোগীদের বাড়িতে গিয়ে ভাতার টাকা অ্যাকাউন্টে আসছে কিনা তা জানতে চেয়ে প্রত্যেকের ব্যালেন্স চেক করে। মোবাইল ফোন ফেরত দিয়ে বলে টাকা আসে নাই বলে চলে যায়। অধিকাংশ গ্রাহকের বাড়িতে গিয়ে এমন কাণ্ড করে তিনি। এছাড়া তিনি ভাতা ভোগীতের লিস্ট দেখে ফোন করে তার অফিসে এনে মোবাইল টিপে নিজেই গোপন নম্বর সেট করে টাকা বের করে নেন একটি নির্দিষ্ট নম্বরে। পরে তাদের বলে একাউন্ট ঠিক আছে আগামী মাসে টাকা আসবে। আশপাশের এলাকার মানুষের কাছে যখন জানতে পারে অনেকেই ভাতার টাকা উত্তোলন করেছে । তখন গ্রাহকরা ইউপি মেম্বারের বাড়িতে ভিড় করলে সে নানা ধরনের টালবাহানা শুরু করে।

দক্ষিণ শিলাকোঠার মোক্তার খান বলেন, বাদশা মেম্বার ১৪ জুন আমাকে ফোন করে এনে আমার তিন হাজার টাকা মোবাইল থেকে নিয়ে গেছে। কিন্ত আমাকে টাকা দেয়নি।

অন্য খবর  সুতারপাড়ায় প্রয়াত ছাত্রনেতা নাহিদের শোক সভা পালন

জাহেরা খাতুনের ছেলে বাদশা বলেন, আমার মার নামে ভাতার করা কিন্ত বাদশা মন্ডল আমার মায়ের নম্বরে ফোন করে অফিসে আসতে বলে। আসার পর মোবাইল নিয়ে আমার টাকা বের করে রাখে সেটা আমি জানতামই না। পরে আবার টাকা এলে বুঝতে পারি আগেও তিন হাজার টাকা এসেছিলো। আমি এর বিচার চাই।

পরে সমাজ সেবা অফিসে গেলে তারা গ্রাহকদের আপনাদের প্রত্যেকের টাকা এই নম্বরে ০১৮৫৪ -২৪৪৪৪৪ ক্যাশ আউট করা হয়েছে।  অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় নগদ কতৃপক্ষ এই নম্বরের এজেন্ট পয়েন্টটি বন্ধ করে দিয়েছে।

শিলাকোঠা এলাকার বয়স্ক ভাতার সুবিধাভোগী আব্দুল হালিম জানান, আমাদের ওয়ার্ডের মেম্বার একদিন দুপুরে আমার বাড়িতে এসে মোবাইলে ভাতার টাকা (০১৯৯২৬৪৬১২৪) আসছে কিনা জানতে চাইলে আমি তাকে ফোনটি দেই। সে বলে টাকা আসে নাই। একমাস পরে আসবে। কিন্তু কৌশলে যে আমার ফোন থেকে ঢাকা বের করে নিয়ে গেছে তা আমার জানা ছিল না। চেক করার পর পর দেখি একাউন্টে টাকা নেই। উপজেলা সমাজ সেবা অফিসে গিয়ে অভিযোগ করলে তারা ব্যালেন্স অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে।

অন্য খবর  দোহারে নতুন করে করোনা শনাক্ত- ৭১ : মোট আক্রান্ত-২,৫৩৬

অধিকাংশ গ্রাহকের টাকাই ০১৮৫৪-২৪৪৪৪৪ নম্বরে ক্যাশ আউট করা হয়েছে। মোবাইলের গোপন পিন নম্বরও নাকি মেম্বার নিজেই সেট করে দেয়। ভুক্তভোগীরা ইউপি মেম্বারের বাড়িতে গেলে অর্ধেক টাকা দেওয়ার কথা বললে এখনো টাকা পায়নি বলে জানা যায়। এদিকে এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ৫ জুলাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সমাজসেবা অফিসে ৩০ জন ভুক্তভোগীরা যাদের মোবাইল থেকে টাকা উত্তোলন করে নিয়ে গেছে তারা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

ইউপি সদস্য মু. শাওন ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, ‘একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি কোনো টাকা আত্মসাৎ করিনি। কিছু ভাতাপ্রাপ্ত লোক মারা গেছেন। মারা যাওয়া ভাতাভোগীদের স্থানে নতুন ভাতাভোগীদের নামের তালিকা দিয়েছি। নতুন ভাতাভোগীদের বলেছি, মৃত ভাতাভোগী পরিবারের সদস্যদের অর্ধেক টাকা দিয়ে দিতে। আমি কোনো টাকা আত্মসাৎ করিনি।

কুসুমহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন আজাদ জানান, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। গরীব মানুষের টাকার প্রতি লোভ সামলাতে পারি না আমরা।

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজ মাহমুদ জানান, ভুক্তভুগিদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্তা গ্রহণ করা হবে।

কুসুমহাটিতে বয়স্ক ও বিধবা ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ

কুসুমহাটিতে বয়স্ক ও বিধবা ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ

কুসুমহাটিতে বয়স্ক ও বিধবা ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ

কুসুমহাটিতে বয়স্ক ও বিধবা ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ

কুসুমহাটিতে বয়স্ক ও বিধবা ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ

কুসুমহাটিতে বয়স্ক ও বিধবা ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ

&nbsp

আপনার মতামত দিন