কলেজ জাতীয়করণ ও শিক্ষা ক্যাডারে আত্তীকরণের বিরোধীতাকারীদের অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা!

637
উপজেলা সদরে একটি করে কলেজ জাতীয়করণ ও শিক্ষকদের শিক্ষা ক্যাডারে আত্তীকরণের বিরোধীতা করতে কোটি কোটি টাকার গোপন ফান্ড গঠন করে ফেঁসে যাচ্ছেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি কলেজের কয়েকজন শিক্ষক। চাঁদাবাজির মাধ্যমে গঠন ফান্ডের টাকা দিয়ে কৌশলে সরকারবিরোধী প্রচার-প্রপাগান্ডা, ব্যানার ও লিফলেট তৈরি, সংবাদ সম্মেলনশেষে নামধারী সাংবাদিকদের বিতরণ, বিজ্ঞাপন টকশো, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী পত্র-পত্রিকায় বেনামী লোকদের দিয়ে নিবন্ধ/প্রবন্ধ প্রকাশ করানো এবং আইনী লড়াইসহ বিভিন্ন কাজে খরচ করে আসছেন কতিপয় শিক্ষক। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হয়ে তারা এমনটা করতে পারেন না।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকারি কলেজের কতিপয় শিক্ষক কলেজ জাতীয়করণের সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মিছিল, সমাবেশ, টকশো, মানবন্ধন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কটুক্তি করে চলছেন গত তিন বছর যাবত। তারা শিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষাবোর্ডসহ সারাদেশের সরকারি কলেজ ও মাদ্রাসায় কর্মরত বিএনপি ও জামাতশিবিরপন্থী শিক্ষক। এ চক্রের হোতারা ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাসে অনুষ্ঠিত বি সি এস শিক্ষা সমিতির নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে নজিরবিহীনভাবে বিএনপিনেত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক অফিসে সাক্ষাত করেছেন। এ চক্রটিই ডাচবাংলা ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে চাঁদা সংগ্রহ করেছেন মর্মে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছে সরকার। সরকারি কলেজের লাখ লাখ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরীক্ষাসহ নানা অজুহাতে আদায় করা টাকার একাংশ এবং নোট-গাইড কোম্পানীর কাছ পাওয়া টাকাও রয়েছে বলে জানা গেছে।  অভিযুক্তদের চাকুরিচ্যুতি ও দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তের মুখোমুখি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে সরকারের একাধিক সূত্র দৈনিকশিক্ষাডটকমকে নিশ্চিত করেছে।  প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত দুইজন কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচচ শিক্ষা বিভাগ। আরো শতাধিক তালিকায় রয়েছেন।
গত ২৭ মার্চ মাধ্যমিক ও উচচ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব আবু কায়সার খান স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়, “মো: শওকত হোসেন মোল্যা, সহকারী অধ্যাপক (ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি), হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সরকারি কলেজ, মাগুরা ও (২) ফারহানা বিলকিস, সহকারী অধ্যাপক, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, ঢাকা (বর্তমানে সরকারি  ইয়াসিন কলেজ, ফরিদপুর) এর নামে ডাচ বাংলা ব্যাংক, বিজয়নগর শাখা, ঢাকায় একটি যৌথ হিসাব (নং-১৯১.১৫১.৪৯৫৩০) আছে। যা ফারাহানা বিলকিস মন্ত্রণালয়ের কাছে লিখিতভাবে স্বীকার করেছেন। একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসাবে ব্যক্তি নামে বর্ণিত ব্যাংক হিসাব খুলে ও বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের নিকট হতে অর্থ সংগ্রহ করে কি কি খাতে খরচ করেছেন এ বিষয়ে  ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের ১ মার্চের মধ্যে প্রমাণাদি (ব্যাংক স্টেটমেন্টসহ) জানানোর জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রমাণাদি (ব্যাংক স্টেটমেন্টসহ) পাঠাননি।”
নোটিশে বলা হয়, বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা সংগ্রহ করার জন্য  আপনাদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারি আচরণ বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-৯ অনুসারে কেন বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হবে না আগামী ৭ (সাত) কর্ম দিবসের মন্ত্রণালয়কে জানাতে বলা হলো। ফারহানা বিলকিস ও শওকত মোল্যার স্থায়ী ঠিকানায়ও এ নোটিশের কপি পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
জাতীয়করণ ও আত্তীকরণের বিরোধীতার নামে শহীদ মিনারে জুতা পায়ে সমাবেশ, পরীক্ষা ও ক্লাস বর্জন করে ১৪ লাখ শিক্ষার্থীর ক্ষতিসাধনসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছেন তারা।
source:http://www.dainikshiksha.com
আপনার মতামত দিন