ইয়াবায় নেশাগ্রস্ত করে ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রীকে গণধর্ষণ

230

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার ধল্লা লক্ষ্মীপুর গ্রামে চতুর্থ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ইয়াবা ট্যাবলেট সেবনে নেশাগ্রস্ত করে গণধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার চারদিন অতিবাহিত হলেও সালিশ বৈঠকে মীমাংসা করতে বিভিন্নভাবে চাপ দেয়ায় ছাত্রীর পরিবার মামলা করতে পারেনি।

গত মঙ্গলবার রাতে একই গ্রামের ইসরাফিল মিয়ার ছেলে কিয়ামুদ্দিন (৩০) ও লিয়াকত আলীর ছেলে মহিদুর রহমান (২৮) এই কায়দায় শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেছে বলে স্বজন ও স্থানীয়রা জানিয়েছে।

ছাত্রীর বাবা জানায়, এক ছেলে এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসারের খরচ তিনি গাছকাটা শ্রমিকের কাজ করে নির্বাহ করেন। তার মেয়ে পার্শ্ববর্তী একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী। গত মঙ্গলবার সকালে মেয়ে ও ছেলেকে বাড়ি রেখে তিনি স্ত্রীকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জ উপজেলার বৈকন্ঠপুর গ্রামে পীর বাড়ির ওরশে যান। ওই দিন সন্ধ্যায় তার বাড়িতে এসে কিয়ামুদ্দিন ও মহিদুর খিচুরি রান্না করে প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিয়ে খায়। খিচুরি খেয়ে বাড়ি থেকে প্রতিবেশীদের সঙ্গে তারাও চলে যায়। পৃথক ঘরে তার ছেলে-মেয়ে ঘুমিয়ে পড়েলে রাত সাড়ে ৯টার দিকে কিয়ামুদ্দিন ও মহিদুর আবার বাড়ি এসে মেয়েটিকে ডেকে তোলে। এরপর তারা ঘরের ভেতরে মেয়েটিকে জোরপূর্বক ইয়াবা ট্যাবলেট সেবন করায়। মেয়েটিকে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তারা ধর্ষণ করে।

অন্য খবর  নবাবগঞ্জের দু’টি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত

এক পর্যায়ে মেয়েটি অজ্ঞান হয়ে পড়লে তারা চলে যায়। পরদিন স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে তিনি বাড়ি ফিরে এসে মেয়েটিকে অসুস্থা অবস্থায় বিছানায় পড়ে থাকতে দেখেন। তখন মেয়েটি মা-বাবার কাছে ইয়াবা সেবন করিয়ে তাকে গণধর্ষণ করার বিষয়টি বলে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করার প্রস্তুতি নিলে কিয়ামুদ্দিন ও মহিদুরসহ তাদের লোকজন স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করতে হুমকি-ধামকি ও বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে।

ধল্লা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন সালিশ বৈঠকে বসে মীমাংসার করার দায়িত্ব নিয়ে তাকে মামলা করতে নিষেধ করেছেন বলে জানান ওই শিক্ষার্থীর বাবা। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে দেলোয়ার হোসেন জানান, মেয়েটিকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। ইয়াবা সেবন করে নেশাগ্রস্ত করেছিল বলে শুনেছি। দু’পক্ষের লোকজনকে নিয়ে বসে মীমাংসা করে দেয়া হবে। এ বিষয়ে স্কুল শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলতে গেলে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তবে, প্রতিবেশী ও নিকট আত্মীয়রা জানান, এ ঘটনার পরেই মেয়েটি তাদের কাছে নেশাগ্রস্ত করে ধর্ষণ করার কথা বলেছিল।

ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে মেয়েটিকে বাড়ি থেকে সরিয়ে রাখা হয়েছে। সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দুজ্জামান জানান, এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

আপনার মতামত দিন