ইছামতি নদীতে কচুরিপানার রাজত্ব

452

আসিফ শেখ, নিউজ৩৯.নেট ♦ নবাবগঞ্জে পশ্চিম অঞ্চলে ইছামতী নদীর কচুরিপানা মানুষের চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে। জনগণের ভোগান্তি চরমে উঠলেও যেন দেখার কেউ নেই। নদীর স্বাভাবিক স্রোতধারা বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় এই বিরূপ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে নদী তীরে বসবাস করা লোকজন জানিয়েছেন।

পরিকল্পিতভাবে নদীর পানিপ্রবাহে বাধার সৃষ্টি করায় নদী ঢেকে যাচ্ছে কচুরিপানায়। ফলে নদীতে ভেসে আসা বিভিন্ন জীবজন্তুর মৃতদেহ ও নোংরা পদার্থ শ্যাওলা-পানায় আটকে যেয়ে দেখা দিচ্ছে পচন ও দুর্গন্ধ। নদীর বুকে ঘন কচুরিপানা জন্মানোয় গৃহস্থলি কাজে এর পানি আগের মতো ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এ ছাড়া নৌ-চলাচলেও প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। 

কচুরিপানা সাফ না করায় অনেক এলাকাতেই সেগুলো পচে পরিবেশ দুষণ করছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কিছু কিছু এলাকায় কচুরিপানা পচে যাওয়ায় পানি কালো বর্ণ ধারণ করেছে এবং সেখান থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। অথচ এমন অবস্থাতেও এলাকার লোকজন সেই পানিতেই গোসলসহ অন্যান্য গৃহস্থলির কাজ সারছে। 

নবাবগঞ্জের বুকের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া ইছামতি নদীটি দেখলে যেন চেনাই যায় না। কচুরী পানায় ছেয়ে গেছে পুরা নদীটি। এর উপর দিয়েই অনেক লতাপাতাসহ বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ছড়িয়ে পড়েছে সারা নদীতে। দেখে মনে হয় বহু পুরোনো কোন পচা ডোবা নালা।

অন্য খবর  ৯ বছর ভাঙ্গা ভাঙ্গাপাড়ায় সেতু

 এটা সেই ঐতিহ্যবাহী ইছামতি নদী, যে নদীতে প্রতি বছর নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা হয়। ভারী ও জমাট শ্যাওলা-কচুরিপানা জমে স্বাভাবিক স্রোতধারা ব্যাহত হওয়ায় নোংরা সবকিছু পানিতে পচে ছড়াচ্ছে ভীষণ দুর্গন্ধ। দূর থেকে দেখলে মনে হবে এই কচুরপানায় ঢাকা নদীর ওপর দিয়ে অনায়াসে হেঁটে চলা যাবে। এই অবস্থায় পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন নদী তীরে বসবাস করা ২০ গ্রামের সহস্রাধিক মানুষ। 

পানিতে নদীপারের লোকজন গোছল, কাপড়-চোপড় ধোওয়া ও রান্নার কাজ সারেন। অন্যদিকে নদীতে কচুরিপানার ফলে বেশী দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে খানেপুর প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ের শির্ক্ষাথীদের প্রতিদিন তাদের কচুরিপানার উপরদিয়ে নৌকা চালিয়ে স্কুলে যেতে হচ্ছে। আর বই-খাতা নিয়ে পানিতে পড়ে যাওয়ার ঘটনা তো নিত্য দিনের।

কবে কচুরিপানা অপসারণ হবে সেটাই এখন এলাকাবাসীর প্রশ্ন? অপরদিকে ১৯৯৬ সালে নূর আলীর প্রচেষ্টায় কাশিয়াখালী বেড়িবাধ নির্মান করা হয় যা নবাবগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকা ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করে। কিন্তু বাঁধ দিতে গিয়ে কর্তৃপক্ষ যে ভুলটি করেছিল তা হলো, তখন তারা শুধু পানির গতিই বন্ধ করার চিন্তা করেছিল। কিন্তু সেই গতি বন্ধ হলে একসময় আবার যে অন্য একটি বড় সমস্যা হতে পারে সেই সুদূর প্রসারী চিন্তা তখন বাঁধ কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে গিয়েছিল।

অন্য খবর  দোহারে ২য় পর্যায়ে নতুন ঘর ও ভূমি পেল ৩৪ টি পরিবার

এই বাঁধে কোন সুইচ গেট স্থাপন করা হয় নি। নদীতে স্রোত না থাকায় কচুরি পানা স্থির রয়েছে। এ এলাকার মানুষের প্রাণের দাবী ইছামতি নদীর স্রোতধারা ফিরিয়ে আনতে প্রযোজনীয় পদক্ষেপ নেবে কর্তৃপক্ষ।

আপনার মতামত দিন